সিসোকাকে আটকাতে বেপরোয়া কেরল ডিফেন্স। সোমবার। ছবি: পিটিআই
প্রশ্ন: কখনও মোমো খেয়েছেন?
সিসোকো: এখনও পর্যন্ত খাইনি। তবে কেউ খাওয়ালে নিশ্চয়ই খাব।
প্র: তা হলে আপনার বাড়ির লোক নিশ্চয়ই মোমো খেতে ভালবাসেন?
সিসোকো: কেন?
প্র: আপনার ডাকনাম তো ওই খাবার ডিশটা থেকেই নেওয়া মনে হয়!
সিসোকো: (হাসতে হাসতে) ও রকম কিছু নয়। কিন্তু এ বার মনে হচ্ছে মোমো খেতেই হবে। আসলে এ ভাবে কখনও ভেবে দেখিনি।
প্র: কত বছর বয়স থেকে ফুটবল খেলছেন?
সিসোকো: খুব অল্প বয়স থেকে। মাত্র ন’বছর হবে বোধহয় তখন। আমার বাবা-মা খুব সাপোর্ট করেছে আমাকে।
প্র: আপনি জেরারকে পাশে পেয়েছেন, আবার দেল পিয়েরোর সঙ্গেও খেলেছেন…
সিসোকো: দু’জনেই আমার কাছে বড় ভাইয়ের মতো। আমরা অসাধারণ কিছু সময় একসঙ্গে কাটিয়েছি। বলতে গেলে, নিজের কেরিয়ারের সেরা ম্যাচগুলো ওদের আমলেই খেলিছি আমি। কত স্মৃতি সে সব! আমরা সব সময় একে অন্যকে সাহায্য করেছি। কী ভাবে নিজেদের খেলায় আরও উন্নতি ঘটানো যায় আর নতুনত্ব আমদানি করা যায়, তার জন্য দিন-রাত খেটেছি।
প্র: দু’জনের মধ্যে কাকে এগিয়ে রাখবেন?
সিসোকো: দু’জনই কিংবদন্তি। আমার সেই যোগ্যতা নেই যে, ওদের মধ্যে কে বড় সেটা বিচার করব।
প্র: কী শিখেছেন ওঁদের থেকে?
সিসোকো: তিনটে ব্যাপার। এক) ফুটবল মানে শুধু পা দিয়ে লাথালাথি নয়। বরং এই খেলাটায় পায়ের সঙ্গে মগজকেও সমান ভাবে খাটাতে হয়। ম্যাচটা মাঠে যতটা খেলতে হয়, ঠিক ততটাই খেলতে হয় মাথায়। দুই) কঠোর পরিশ্রমই সাফল্যের একমাত্র চাবিকাঠি। তিন) ফুটবলকে সম্মান করা। যেটা না করলে, প্যাশনটা তৈরি হবে না। এই তিন মন্ত্র আমি এখনও মেনে চলি।
প্র: সর্বকালের সেরার তালিকায় কোথায় রাখবেন দু’জনকে?
সিসোকো: দেল পিয়েরো, জেরার আমার ভাই। ওরা সব সময় আমার হৃদয়ে থাকবে।
প্র: দেল পিয়েরো আইএসএলে খেলেছেন। এখানে আসার আগে ওঁর সঙ্গে কোনও কথা হয়েছে?
সিসোকো: না।
প্র: এখনও পর্যন্ত চার ম্যাচে দু’টো হার, একটা ড্র, একটা জয়। আপনি আজ গোল করে বাঁচালেন। কোথায় সমস্যা হচ্ছে পুণের?
সিসোকো: এটাই ফুটবল। ম্যাচে যা খুশি হতে পারে। আমরা আমাদের সেরাই দিয়েছি। তবে কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট হওয়ার জন্য গোটা টিমকে ভুগতে হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে গোটা টিমের সঙ্গে কথা বলেছি। কোচ হাবাসও বলেছেন। আমরা কিছু ভুল করেছি, মিস পাস করেছি, ভুল শট নিয়েছি। আমার বিশ্বাস, এ রকম ভুল আর হবে না। যা হয়েছে, হয়েছে। সামনের দিকে মনোযোগ দিতে চাই।
প্র: পুণে কোচ হাবাস বলেছেন আপনি এক জন বল উইনার। এবং অ্যাটাকিং থার্ডেও টিমকে সাহায্য করতে পারেন...
সিসোকো: হাবাসের ম্যাচ রিডিং খুব ভাল। বিপক্ষ ফুটবলারদেরও দারুণ রিড করতে পারেন। এই লিগে ওঁর অভিজ্ঞতা সবচেয়ে বেশি। অভিনবত্বও প্রচুর। উনি জানেন কখন কাকে কোথায় খেলাতে হবে, কী করতে হবে। প্র্যাকটিসের সময় আমাদের মধ্যে এই নিয়ে অনেক বার আলোচনা হয়েছে।
প্র: কিন্তু মাঠে তো পুণের অ্যাটাক লাইনকে দুর্বল লাগছে!
সিসোকো: টুর্নামেন্ট সবে শুরু হয়েছে। এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্তে চলে আসবেন না। হাবাস আমাদের সেরা পদ্ধতিতে কোচিং করাচ্ছেন। একটু ধৈর্য ধরুন, রেজাল্ট খুব তাড়াতাড়ি দেখতে পাবেন।
প্র: মাঠে ফুটবলার ছাড়া টিমে আর কী ভূমিকা আপনার?
সিসোকো: বাকিদের সাহায্য করা। এটা নিশ্চিত করা যে, বিভিন্ন সংস্কৃতি, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং খেলার স্টাইলকে এক করে টিমটাকে বেঁধে রাখতে হয়। আমি প্রত্যেক ফুটবলারকে মাঠের বাইরে এবং ভেতরে সমান ভাবে উদ্বুদ্ধ করি। নিশ্চিত করি ওরা যাতে প্রত্যেক দিন যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকে। সেটা ম্যাচ হোক কিংবা ট্রেনিং।
প্র: ভ্যালেন্সিয়ার হাবাসের সঙ্গে পুণের হাবাসের কতটা প্রার্থক্য?
সিসোকো: হাবাস আমার বাবার মতো। উনি আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। মাঠের বাইরে হোক কিংবা ভেতরে। পুণে এফসি-তে আসার আগে আমাদের মধ্যে একটা লম্বা আলোচনা হয়। উনি আমাকে বোঝান, এই লিগ আমার খেলা আর স্কিলকে কতটা উন্নত করতে পারে। ভ্যালেন্সিয়ায় খেলার সময় আমি খুব ছোট ছিলাম। সেখান থেকে হাবাসের কোচিং পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। যে ভাবে উনি আমাকে এখন গাইড করছেন, একদম আলাদা। এ বার উনি আমাকে অনেক বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। আমার আশা, ওঁর বিশ্বাসের দাম দিতে পারব।
প্র: আইএসএলে কোন টিমকে সবচেয়ে শক্তিশালী মনে হচ্ছে?
সিসোকো: এত তাড়াতাড়ি বলা খুব কঠিন। প্রত্যেকটা টিমের আলাদা আলাদা প্লেয়িং স্টাইল। আমি বলব সব টিমই কঠিন প্রতিপক্ষ। আর সব টিমের বিরুদ্ধেই আমাদের সেরাটা দিতে হবে।