মহড়া: শুক্রবার ইডেনের নেটে প্রস্তুতি প্রসিদ্ধের। নিজস্ব চিত্র
এক সময় নেট বোলার হিসেবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের নেটে বল করতে যেতেন। এখন তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের পেস বিভাগের অন্যতম ভরসা। আইপিএল-এ নাইট পরিবারে থাকার সুবাদে ইডেনই তাঁর দ্বিতীয় ঘরের মাঠ। শনিবার যেখানে বাংলার বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনাল খেলতে নামবেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। ২৩ বছর বয়সি পেসারকে ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ হিসেবে দেখছেন বিরাট কোহালি। বিরাটের এই ঘোষণা এখন অনুপ্রেরণা প্রসিদ্ধের। বাংলার বিরুদ্ধে কী পরিকল্পনা নিয়ে নামছেন? কার উইকেট নেওয়ার জন্য মরিয়া? তাঁর অস্ত্রই বা কী? বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে টিম হোটেলে বসে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে খোলামেলা প্রসিদ্ধ।
প্রশ্ন: আইপিএল-এ ইডেনই আপনার ঘরের মাঠ। সেখানে বাংলার বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনাল খেলবেন। ইডেনে খেলার অভিজ্ঞতা কতটা কাজে লাগাবেন?
প্রসিদ্ধ: ইডেনের বাইশ গজে নতুন বলে বল করার অভিজ্ঞতা ভাল। প্রচুর উইকেটও রয়েছে। রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে চেষ্টা করব ধারাবাহিকতা বজায় রেখে একই জায়গায় বল করে যেতে। ভাল জায়গায় বল রাখতে পারলে বাকি কাজ পিচই করে দেবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহালি আপনার প্রশংসা করেছেন। বলেছিলেন, আপনি দেশের পেস বিভাগের ভবিষ্যৎ। কতটা অনুপ্রাণিত?
প্রসিদ্ধ: (হাসি) বিরাটের মতো কেউ যদি আমার মতো তরুণ পেসারের কথা বলে, তা হলে ভাল তো লাগবেই। তখন থেকে নিজের প্রতি আরও আস্থা বেড়েছে। আত্মবিশ্বাস দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দিনের শেষে মনে রাখতে হবে, ভাল বল করেই একজন ব্যাটসম্যানকে আউট করা যায়। তাই প্রস্তুতির কোনও খামতি রাখতে চাই না।
প্রশ্ন: রঞ্জি ট্রফিতে মাত্র দু’টি ম্যাচ খেলে ১১টি উইকেট পেয়েছেন এই মরসুমে। সাদা বলের ক্রিকেট থেকে বড় ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে না?
প্রসিদ্ধ: দলের প্রত্যেকে খুব সাহায্য করে। কোনও ভুল হলে সিনিয়রদের কাছে জিজ্ঞাসা করি। ভুল শুধরে দিতে কোনও দ্বিধাবোধ করে না। তা ছাড়া নিজের সুইং ও গতি বাড়ানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। তার ফলই পাচ্ছি।
প্রশ্ন: নেটে কে এল রাহুল, মণীশ পাণ্ডে, করুণ নায়ারদের বল করার সুযোগ পান। বোলার হিসেবে উন্নতি করার নেপথ্যে এটা কত বড় কারণ?
প্রসিদ্ধ: সত্যি কথা বলতে, প্রচুর উন্নতি হয়েছে। আমাদের দলে প্রায় সবাই তারকা। তাদের বিরুদ্ধে নেটে বল করলেই বোঝা যায়, কোথায় উন্নতির প্রয়োজন। যে বল করে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে উইকেট পাচ্ছি। একই বল রাহুলকে করে লাভ হচ্ছে না। তখনই উপলব্ধি করি, কোথায় পরিবর্তন প্রয়োজন।
প্রশ্ন: বাংলার কোন ব্যাটসম্যানের উইকেট পেতে চাইবেন?
প্রসিদ্ধ: আমার বোলিংয়ে দল জিততে পারলেই ভাল লাগবে। তবে বাংলার মূল শক্তি মনোজ তিওয়ারি। ওকেও আউট করার চেষ্টা করব। শুনেছি বাংলার উপরের সারির ব্যাটসম্যানেরা সে রকম ছন্দে নেই। নতুন বলে তাদের বিরুদ্ধেই আক্রমণ করার পরিকল্পনা থাকবে। শুরুতেই দু-তিনটি উইকেট তুলে নিতে পারলে যে কোনও দল চাপে পড়ে যায়। বাংলার বিরুদ্ধেও সে রকমই পরিকল্পনা।
প্রশ্ন: গত তিন বারই রঞ্জির সেমিফাইনাল খেলেছে কর্নাটক। এই সাফল্যের মূল কারণ কী?
প্রসিদ্ধ: আমরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি। বিপক্ষে যত বড় দলই থাকুক, ভয় পাই না। সেমিফাইনালেও একই মনোভাব নিয়ে মাঠে নামব। ম্যাচে পিছিয়ে পড়লেও শরীরী ভাষায় তা যেন প্রকাশ না পায়। এটাই আমাদের আদর্শ।
প্রশ্ন: সাদা বলের ক্রিকেটে আপনার বৈচিত্রের প্রশংসা করেছিলেন দীনেশ কার্তিক। লাল বলের ক্রিকেটের জন্য নতুন কোনও অস্ত্রে শান দিলেন?
প্রসিদ্ধ: ধারাবাহিকতাই আমার অস্ত্র। আউটসুইং, ইনসুইং তো রয়েইছে। কিন্তু একই জায়গা থেকে বলকে দু’দিকে সুইং করানোর জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিকতা। সেটা আস্তে আস্তে রপ্ত করছি।
প্রশ্ন: কী মনে হচ্ছে? সেমিফাইনালে কারা এগিয়ে?
প্রসিদ্ধ: সমানে সমানে টক্কর হবে। ইডেন বাংলার ঘরের মাঠ। সেখানে সেমিফাইনাল খেলার অনুভূতি অন্য রকম। অন্য দিকে কর্নাটক মানসিক ভাবে অনেকটা এগিয়ে রাহুল দলে আসার পরে। জমজমাট ম্যাচের অপেক্ষায় রয়েছি।