হাবিবুল বাশার।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের মনোভাব পাল্টে দেওয়ার অন্যতম কারিগর তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই ২০০৪-এ চট্টগ্রামে জ়িম্বাবোয়েকে হারিয়ে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। ডাভ হোয়াটমোরের সঙ্গে তাঁর জুটি দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিই পাল্টে দিয়েছিল। ভারতের বিরুদ্ধে ২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে তাঁর ব্যাট থেকে ম্যাচের প্রথম হাফসেঞ্চুরি এসেছিল। তিনি প্রাক্তন বাংলাদেশ অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। বর্তমানে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিটির সদস্য। ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টেস্টের আগে ঢাকা থেকে ফোনে আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে দেশের ক্রিকেট দলের খুঁটিনাটি নিয়ে বিশ্লেষণ করলেন।
প্রশ্ন: শাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল ছাড়া ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ খেলা কতটা কঠিন?
বাশার: অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। শাকিব ও তামিম দলের দুই স্তম্ভ। ওদের বাদ দিয়ে মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদবদের সামলানো এই বাংলাদেশ ব্যাটিং লাইন-আপের কাছে কঠিন কাজ। তবে টি-টোয়েন্টিতে শাকিবদের ছাড়া খারাপ খেলেনি বাংলাদেশ। সিরিজ ফয়সালার ম্যাচে জয়ের অনেকটা কাছে গিয়ে হেরেছে। টেস্টেও মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসদের লড়াকু মনোভাব দেখতে পেলে খুশি হব।
প্রশ্ন: ওপেনার তামিমের অভাব পূরণ করা সম্ভব?
বাশার: ইমরুল কায়েসের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কোনও সন্দেহ নেই। ওর সঙ্গেই বাঁ-হাতি ওপেনার শাদমান ইসলাম খুবই প্রতিভাবান। ইমরুলকে তিন নম্বরে খেলিয়ে সেফ হাসানকে দিয়েও ওপেন করিয়ে দেখে নেওয়া যেতে পারে। আশা করা যায়, শামিদের বিরুদ্ধে নতুন বল সামলানোর কাজ ওরা করে দিতে পারবে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে অসাধারণ কিছু ইনিংস খেলেছে শাদমান ও সেফ। টেস্টেও আশা করি সেই ছন্দ বজায় রাখবে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে মোমিনুল হকের এটাই প্রথম টেস্ট। শাকিব না থাকায় তাঁর কাছে এটা কত বড় পরীক্ষা?
বাশার: ক্রিকেটবিশ্বে অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার এর চেয়ে বড় সুযোগ মোমিনুল হয়তো পাবে না। ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ইতিমধ্যে ওকে পাশ নম্বর দেওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে ও দলকে কী রকম নেতৃত্ব দেয়, তা দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। শাকিব থাকলে অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান অথবা বোলার খেলানোর ঝুঁকি নিতে হত না বাংলাদেশকে। কারণ, ব্যাটসম্যান হিসেবে ও যে রকম ভয়ঙ্কর, তেমনই বোলার হিসেবে নির্ভরযোগ্য। কিন্তু শাকিবকে না পাওয়ায় অতিরিক্ত বোলার অথবা ব্যাটসম্যান খেলানোর চিন্তা করতে হবে মোমিনুলকে। যদিও শাকিবকে ছাড়াও বাংলাদেশ খেলেছে। ভারতের বিরুদ্ধে স্কোরবোর্ডে বড় রান যোগ করার জন্য মোমিনুলকে বাড়তি দায়িত্ব নিতেই হবে। আবারও বলছি, ভারতের বিরুদ্ধেই ক্রিকেটবিশ্বে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পাবে। ভয় না পেয়ে এই সিরিজকে সুযোগ হিসেবে দেখলেই ভাল করবে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশের কাছে সব চেয়ে বড় ত্রাস কে হয়ে উঠতে পারে?
বাশার: বিরাট কোহালি ক্রিকেট বিশ্বের যে কোনও দেশের কাছেই ত্রাস। বাংলাদেশের কাছেও ওর উইকেট সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রোহিত শর্মা, অজিঙ্ক রাহানে, চেতেশ্বর পুজারাদেরও পিছিয়ে রাখা যাচ্ছে না। ভারতের এই ব্যাটিং লাইন-আপকে সমস্যায় ফেলতে হলে বাংলাদেশককে অসামান্য বোলিং করতে হবে। আশা করি, মুস্তাফিজুররা লড়াই করবে।
প্রশ্ন: কলকাতায় প্রথম দিনরাতের টেস্ট। আপনি আসবেন?
বাশার: ২০০০ সালের সেই দলের সদস্যদের সঙ্গে পুনর্মিলনের সুযোগ করে দিয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতায় টেস্ট খেলার স্বপ্ন ছিল। আশা পূরণ হয়নি। এ বার সমর্থক হিসেবেই না-হয় অভিষেক হবে।