দুরন্ত: ৭ উইকেট নিয়ে পঞ্জাবকে ভাঙলেন শাহবাজ। ফাইল চিত্র
মরসুমের শুরু থেকেই দুরন্ত ছন্দে ছিলেন শাহবাজ আহমেদ। মরসুম যত এগিয়েছে, তত ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ হয়ে উঠেছেন বাংলার তরুণ অলরাউন্ডার। বৃহস্পতিবার পাটিয়ালার ধ্রুব পাণ্ডব স্টেডিয়ামে ৫৭ রানে সাত উইকেট নিয়ে বাংলাকে ম্যাচে ফেরালেন শাহবাজ। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন তিন বছর আগে। তিনিই এখন বাংলার মূল ভরসা। বাংলার ১৩৮ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে পঞ্জাব অলআউট ১৫১ রানে। দিনের শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলার রান ১৯৯। মনদীপ সিংহদের চেয়ে ১৮৬ রানে এগিয়ে বাংলা।
কোয়ার্টার ফাইনালের যাত্রা নিশ্চিত করার জন্য এ ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পেতেই হত বাংলাকে। ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী ম্যাচের ফল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাই ছয় পয়েন্টই এখন লক্ষ্য বাংলা শিবিরের। পাটিয়ালায় খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পিচের বেহাল অবস্থা। একটি বল ঘুরছে তো অন্যটি সোজা হয়ে যাচ্ছে। সমস্যা বাড়াচ্ছে অসমান বাউন্স। অথচ সে পিচে দাঁড়িয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে লড়াকু ৬৫ রান উপহার দেন মনোজ তিওয়ারি। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রান করে তিনিই বাংলার বোলারদের লড়াইয়ের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ত্রাতা তিনিই। মনোজকে সঙ্গ দেন অর্ণব নন্দী।
২১ রানে তিন উইকেট পড়ে গিয়েছিল বাংলার। সেখান থেকে ১০৭ রান যোগ করে মনোজ-অর্ণব জুটি। চার নম্বরে নেমে মূল্যবান ৫১ রান যোগ করেন অর্ণব। কিন্তু অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন ও অভিষেক রামন ফের ব্যর্থ। চার রান করে ফিরে যান অভিমন্যু। এক রান রামনের।
প্রথম ইনিংসে পঞ্জাব আরও কম রানে অলআউট হয়ে যেতে পারত। ৯৩-৩ স্কোরে প্রথম দিন শেষ করার পরে ১০৫ রানে আট উইকেট চলে গিয়েছিল মনদীপদের। শাহবাজ ও আকাশদীপ এতটাই আগ্রাসী বোলিং করছিলেন যে, কোনও থই খুঁজে পাচ্ছিল না বিপক্ষ। কিন্তু শেষ দুই উইকেটে ৪৬ রান যোগ করে পঞ্জাব। গুরুত্বপূর্ণ ৪৪ রান করে বাংলার প্রথম ইনিংসের রানের চেয়ে দলকে এগিয়ে দেন আনমোল মলহোত্র।
তবুও দ্বিতীয় ইনিংসে মনোজ ও অর্ণবের দাপটে কিছুটা স্বস্তিতে বাংলা শিবির। কোচ অরুণ লাল বলছিলেন, ‘‘ঈশ্বরনরা কবে রান পাবে জানি না। মনোজ না থাকলে আজই হয়তো ম্যাচ শেষ হয়ে যেত। অর্ণব আর ও যে ইনিংস খেলেছে তা সেঞ্চুরির সমান।’’ এখনও ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় ক্রিজে রয়েছেন। ৯ নম্বরে নামলেও ব্যাটসম্যান হিসেবেই তাঁকে নেওয়া হয়েছে। রমেশ প্রসাদের সঙ্গে জুটিতে আর ২৫ রান যোগ করলে চতুর্থ ইনিংসে বড় লক্ষ্যের সামনে পড়তে হবে পঞ্জাবকে।
অরুণ বলছিলেন, ‘‘চতুর্থ ইনিংসে এই পিচ আরও ভাঙবে। তখন দেড়শো রান করাও কঠিন।’’ জেতার স্বপ্ন কি এখন থেকেই দেখতে শুরু করেছেন? ‘‘অবশ্যই! ছেলেরা ঘুরে দাঁড়াতে শিখে গিয়েছে। এখান থেকে হারার কোনও জায়গা নেই।’’