ফাইল চিত্র।
ইউরো ২০২০-তে নেদারল্যান্ডসের সাফল্য নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। প্রতিযোগিতা শুরুর আগেই অধিনায়ক ভার্জিল ফান ডেক হাঁটুতে চোট পেয়ে দল থেকে ছিটকে যান। কোচ রোনাল্ড কোমানও জাতীয় দলের দায়িত্ব ছেড়ে বার্সেলোনার ম্যানেজার হন। এখানেই শেষ নয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দল থেকে ছিটকে যান এক নম্বর গোলরক্ষক ইয়াসপার সিলেসেন। প্রথম ম্যাচে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে খেলতে পারেননি রক্ষণের প্রধান ভরসা ম্যাথিয়াস ডি লাইট।
সমস্যায় জর্জরিত নেদারল্যান্ডস কিন্তু প্রথম ম্যাচ থেকেই প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিয়েছিল। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ৩-২ জয়। দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রিয়াকে ২-০ হারান মেম্ফিস দেপাইরা। শেষ ম্যাচে উত্তর ম্যাসিডোনিয়াকে ৩-০ চূর্ণ করে শেষ ষোলোয় যোগ্যতা অর্জন
করে নেদারল্যান্ডস।
বিশ্বফুটবলের চিরকালীন সমীহ জাগানো দল নেদারল্যান্ডস উপহার দিয়েছে ইয়োহান ক্রুয়েফ, রুদ খুলিট, মার্কো ফান বাস্তেন, ডেনিস বার্গক্যাম্প থেকে রবিন ফান পার্সি, আরয়েন রবেনের মতো তারকাদের। যদিও ১৯৮৮ সালে ইউরো কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া আশ্চর্যজনক ভাবে আর কোনও সাফল্য নেই টোট্যাল ফুটবলের ধারক ও বাহকদের। বিশ্বকাপ ফুটবলে তিন বারের রানার্স নেদারল্যান্ডসের কমলা ঝড় হঠাৎ করেই যেন থমকে গিয়েছিল। ইউরো ২০১৬। তার পরে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপ। দুটি প্রতিযোগিতারই মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি ডাচরা। ফ্রাঙ্ক ডি বোর-এর কোচিংয়ে ইউরো ২০২০-তে ফের স্বমহিমায় নেদারল্যান্ডস। আজ, রবিবার শেষ ষোলোয় জর্জিনো উইনায়ডাম, ডেনজ়েল ডেমফ্রাইসদের প্রতিপক্ষ চেক প্রজাতন্ত্র। হাঁটুর চোটে এই ম্যাচে খেলতে পারবেন না নেদারল্যান্ডস মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা ফ্র্যাঙ্কি
দে ইয়ং।
ইউরো ২০২০-তে ‘ডি’ গ্রুপে তৃতীয় হয়ে শেষ ষোলোয় যোগ্যতা করেছে চেক প্রজাতন্ত্র। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে ফেরঙ্ক পুসকাস স্টেডিয়ামে দ্বৈরথের আগে নেদারল্যান্ডসের কোচ বলেছেন, “গ্রুপ পর্বে চেক খুব ভাল খেলেছে। আমাদের আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে এই ম্যাচে।” দেপাইয়ের কথায়, “চেকদের খেলার গভীরতা অনেক বেশি। যদিও ওদের বিরুদ্ধে সম্ভবত শেষ বার খেলেছিলাম ২০১৫ সালে। জিততে হলে সকলকে নিজেদের ১০০ শতাংশ উজাড় করে দিতে হবে।”
চেক কোচ ইয়ারোস্লাভ শিহাভিও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন নেদারল্যান্ডসের খেলার। তিনি বলেছেন, “ডাচরা দারুণ ছন্দে রয়েছে। ওদের খেলা আমি খুঁটিয়ে দেখেছি। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপাচ্ছে।” তিনি আরও বলেছেন, “ডাচ ফুটবলারদের ব্যক্তিগত দক্ষতা অসাধারণ। ওরা প্রচণ্ড গতিতে আক্রমণে ওঠে। বল নিজেদের দখলে রাখার জন্য সব সময় বিপক্ষের উপরে চাপ সৃষ্টি করে যায়।”
বিশেষজ্ঞরাও এই ম্যাচে দেপাইদেরই এগিয়ে রাখছেন। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের সহকারী কোচ প্রাক্তন তারকা রদ ফান নিস্তেলরুইয়ের যদিও উদ্বেগ কমছে না। ফুটবলারদের সতর্ক করে তিনি বলেছেন, “ছেলেদের বলেছি, অতীতে নক-আউট পর্বে নেদারল্যান্ডস বারবার ব্যর্থ হয়েছে। তাই আত্মতুষ্ট হয়ে পড়লে চলবে না। এখন চাপ অনেক বেশি থাকবে, তাই ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে।”