ঠিক সময়ে কি ভাবে জ্বলে উঠতে হয় দেখিয়ে দিল কলকাতা। প্রথম যখন শুনলাম বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল কলকাতায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রথম কথাটাই আমার মাথায় এল, এত বড় একটা ব্যাপার কী ভাবে সামলানো যাবে, তাও ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে।
দুটো টিম, তাদের জিনিসপত্র এক শহর থেকে আর এক শহরে সরিয়ে নিয়ে আসার কথা তো ছেড়েই দিলাম, টিকিট ছাপার ব্যাপার আছে। প্রত্যেকটা স্টেডিয়ামেই যেখানে সরকারি ভাবে ৬৩ হাজারেরও বেশি মানুষ খেলা দেখতে এসেছেন। কলকাতার পক্ষেই এটা সম্ভব।
আবেগের দিক থেকে বিশ্বকাপের ফেভারিট ব্রাজিল যদিও হেরে গেল। তবে এ কথা বলাই যায়, সেরা দলটাই ওই ম্যাচে জিতেছে— ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন: মাছের উৎসব ইংল্যান্ডের, স্তব্ধ ব্রাজিল
মিডফিল্ডে ইংল্যান্ড ঠিক জিনিসটাই করেছে। ব্রাজিল মিডফিল্ডের উপর খুব নির্ভর করে। কেন না এই জায়গাটা থেকেই তো সব দারুণ দারুণ মুভ তৈরি করে ওর ফরোয়ার্ডদের লক্ষ্য করে। ইংল্যান্ড সেটাই আটকে দিতে পেরেছে।
ফলে ম্যাচের প্রথম দিকে ব্রাজিলের ফুটবলারদের প্রচুর দৌড়তে হয়েছে, দ্বিতীয়ার্ধে তাই ওদের খুব ক্লান্ত লাগছিল। ইংল্যান্ড ওদের পরিকল্পনা নিখুঁত ভাবে কাজে লাগাতে পেরেছে। দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ সুশৃঙ্খল লেগেছে ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের। আক্রমণে যখন প্রয়োজন হয়েছে লোক বাড়িয়ে দিয়েছে।
ঠিক জিনিসটা ঠিক সময় করলেই সাফল্য মেলে। অনেক দিন পরে সম্ভবত ইংল্যান্ডের দলে এতগুলো উজ্জ্বল প্রতিভা দেখা গেল। পাশাপাশি ইংল্যান্ডের টেকনিক্যাল স্টাফেরও প্রশংসা করতে হবে ওদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য। গত কয়েক বছর ধরেই ইংল্যান্ড ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছে।
আমার মনে হয় ফিল ফডেনের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল। প্রাক মরসুমে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে আমি ওকে দেখেছি, ওকে দারুণ লেগেছিল। জানতাম না তখন ওর বয়স মাত্র ১৭! পাস দেওয়ার ক্ষেত্রে ওর চোখটা দারুণ, উপযুক্ত সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যে কোনও ফুটবলারদের জন্য যেটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। মাঠে ফুটবলারের পজিশন আর মুভমেন্ট সতীর্থদের ঠিক সময়ে তাঁকে জায়গায় পেতে সাহায্য করে। ওর বয়সি অন্য ফুটবলারদের চেয়ে ফডেন নিশ্চিত ভাবেই অনেক বেশি পরিণত। সেই কারণেই যে দলের হয়েও ফডেন নামুক না কেন, খুব কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারার ক্ষমতা রয়েছে ওর।