সতর্কতা: মুখাবরণ ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ইংল্যান্ডে যাওয়ার বিমানে সওয়ার পাকিস্তানি ক্রিকেটারেরা। টুইটার
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলার উদ্দেশে রবিবারই সে দেশে রওনা দিল পাকিস্তান। করোনায় আক্রান্ত দশ জন ক্রিকেটার ছাড়াই সে দেশে উড়ে গেলেন বাবর আজম, আজহার আলি, ইমাম-উল-হকেরা। ১৮জনের দলের সঙ্গেই দু’জন অতিরিক্ত ক্রিকেটারও আছে। স্টুয়ার্ট ব্রড, জেমস অ্যান্ডারসনদের দেশে পৌঁছে দু’সপ্তাহ নিভৃতবাসে থাকতে হবে প্রত্যেককে।
প্রাথমিক ভাবে করোনা পরীক্ষার ফল ‘পজিটিভ’ হওয়ায় ইংল্যান্ড সফরে যাওয়া হল না মহম্মদ হাফিজের। তাঁকে বাকি দশ জন ক্রিকেটারের সঙ্গে এখন নিভৃতবাসেই থাকতে হবে। হাফিজের করোনা পরীক্ষা নিয়ে কম নাটক হয়নি। পাক ক্রিকেট বোর্ডের উদ্যোগে করা পরীক্ষায় সংক্রমিত দেখানো হয় হাফিজকে। কিন্তু ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরীক্ষা করার পরে তাঁর ফল ‘নেগেটিভ’ আসে। সেই পরীক্ষার ফল টুইট করেন হাফিজ। যা নিয়ে একদফা বিতর্কও হয়। পাকিস্তানি অলরাউন্ডারের এই কাজে চটেছিলেন পাক বোর্ডকর্তারা।
প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতারও তাঁর এক সময়ের সতীর্থের এই মনোভাবে একেবারেই সন্তুষ্ট নন। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব বলেছেন, ‘‘হাফিজের উচিত ছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে প্রশ্ন করা। ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরীক্ষার ফল যখন নেগেটিভ আসে, তখনই জানানো উচিত ছিল পিসিবি-কে। এ ভাবে টুইটারে নিজের দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে ছোট না করলেই পারত।’’ শোয়েব যোগ করেন, ‘‘করাচি ও ইসলামাবাদে সংক্রমণের মাত্রা খুব বেশি। সেখানের ক্রিকেটারদের যত পরীক্ষা হবে, ততই সংক্রমণের সংখ্যা বাড়বে। কারণ, ভয়ঙ্কর ভাবে করোনা ছড়িয়েছে সেখানে। এই পরিস্থিতিতে হাফিজের উচিত হয়নি পিসিবি-র সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার। ইংল্যান্ড সফর আমাদের কাছে প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে সেরা দল পাঠানোই মূল উদ্দেশ্য পিসিবি-র। তার আগে হাফিজের এ রকম ঝামেলায় জড়িয়ে পড়া উচিত হয়নি।’’
রবিবার ইংল্যান্ড উড়ে যায় পাকিস্তান। ম্যাঞ্চেস্টারে পৌঁছে যায় তাঁরা। তার আগেই টুইটারে একটি ছবি পোস্ট করেন বাবর। সেখানে লিখেছেন, ‘‘আরও একটি ঐতিহাসিক ইংল্যান্ড সফরে যাচ্ছি। বরাবরই ইংল্যান্ডের পরিবেশে খেলতে উপভোগ করি। সমর্থকদের অনুরোধ করব, আমাদের পাশে সব সময় থাকুন। আমাদের জন্য প্রার্থনা করুন।’’অগস্টে ইংল্যান্ডের পরিবেশ অনেকটা শুষ্ক হয়ে যায়। বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা কমে যায়। বছরের অন্য সময়ের চেয়ে তখন বল সুইং কম করে। তাই অভিজ্ঞ অ্যান্ডারসন ও ব্রড সে ভাবে হয়তো সমস্যা তৈরি করতে পারবেন না। কিন্তু জোফ্রা আর্চারের গতি সমস্যা তৈরি করতে পারে। প্রাক্তন পাক অধিনায়ক ও বর্তমান ব্যাটিং কোচ ইউনিস খান জানিয়ে দিয়েছেন, আর্চারই তাঁদের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারেন। ইংল্যান্ড উড়ে যাওয়ার আগে ইউনিস বলেছেন, ‘‘আর্চার একজন ম্যাচউইনার এবং আমাদের সব চেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে। ও প্রচণ্ড সাহসী। বিশ্বকাপ ফাইনালে সুপার ওভারেই সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ট্রফি দৌড়ে বড় ধাক্কা, রণনীতি নিয়ে প্রশ্ন সুয়ারেসের
কেন আর্চারকে এত সমীহ করছেন ইউনিস? প্রাক্তন তারকার ব্যাখ্যা, ‘‘আর্চারের বলে খুব ভাল বাউন্স ও গতি আছে। ওর ‘হাই আর্ম অ্যাকশন’-এর জন্যই অতিরিক্ত বাউন্স পায়।’’ তরুণ পেসারকে কী ভাবে সামলানো যায়, তার টোটকাও আছে ইউনিসের কাছে। বললেন, ‘‘আর্চারকে নিয়ে অনেক বেশি চর্চা করা হয়। সেটা ওর উপরে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এমনিতে ব্যাটসম্যানদের নির্দেশ দেওয়া আছে, আর্চারের বল শরীরের কাছে খেলার। ওর ইনসুইং প্রচণ্ড বিষাক্ত। ২০১৬-র ইংল্যান্ড সফরে আমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেয়েছিল। তখন যদিও এতটা পোক্ত ছিল না আর্চার।’’