—ফাইল চিত্র
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট খেলে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন। আবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে তাঁর। অধিনায়কের দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি। সেই বিরাট কোহালিকে নিয়েই এখন চিন্তায় ইংল্যান্ড শিবির। কোহালিকে থামানোর রাস্তা খুঁজছে তারা। জো রুটদের পেস-অস্ত্র স্টুয়ার্ট ব্রডের কাছে কোহালি হলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। আর ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার মইন আলি জানেন না, তাঁরা কী ভাবে কোহালিকে
আউট করবেন।
রবিবার সাংবাদিকদের মইন বলেছেন, ‘‘বিরাট এক জন অসাধারণ ক্রিকেটার। সব সময় নিজের সেরাটা দিতে চায়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নিজের দলের ও রকম খেলা দেখে এ বার নিশ্চয়ই আরও উদ্বুদ্ধ হয়ে মাঠে নামবে।’’ এর পরে মইনেরই প্রশ্ন, ‘‘বিরাটকে আমরা কী করে আউট করব?’’
মইনের কথায় স্পষ্ট, কোহালিকে নিয়ে এই মুহূর্তে কতটা চিন্তিত ইংল্যান্ড। এই অফস্পিনার-অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘বিরাটের মধ্যে কোনও দুর্বলতা চোখে পড়েনি। তাই ওকে কী করে আউট করা যায়, বুঝে উঠতে পারছি না। তবে আমাদের বোলিং আক্রমণ ভাল। বেশ গতি আছে আক্রমণে।’’ আইপিএলে বেশ কয়েক মরসুম কোহালির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে খেলেছেন মইন। তবে জানাচ্ছেন, ভারত অধিনায়কের সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হত না। মইনের কথায়, ‘‘বিরাট দারুণ একটা ছেলে। ওর মতো ভাল বন্ধু আর হয় না। তবে আমরা ক্রিকেট নিয়ে বেশি আলোচনা করতাম না। ক্রিকেট নিয়ে সামান্যই কথা হত বিরাটের সঙ্গে।’’
ইংল্যান্ডের সর্বকালের অন্যতম সফল পেসার ব্রড আবার মনে করেন, তাঁরা যদি বিরাটকে নিয়ে অতিরিক্ত ভাবতে বসেন, তা হলে সমস্যায় পড়ে যাবেন। নিজের কলামে ব্রড লিখেছেন, ‘‘আমার দেখা অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হল বিরাট। কিন্তু আমরা যদি ভারতের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে বেশি ভাবতে বসি, তা হলে মাঠে নামার আগেই হেরে যাব। আমাদের নিজেদের শক্তির উপরে ভরসা রাখতে হবে। আমরাও কিন্তু খুব ভাল ফর্মে আছি।’’
ডন ব্র্যাডম্যানের দেশে ভারতের ঐতিহাসিক সিরিজ জয় নিয়ে ব্রডের মন্তব্য, ‘‘অস্ট্রেলিয়াকে টেস্ট সিরিজে হারিয়ে আসার পরে ভারতের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে থাকবে। একটা কথা বলতে পারি। ব্রিসবেন টেস্টের সময় এই ইংল্যান্ড দলের অনেকেই কিন্তু ভারতের সমর্থক
হয়ে পড়েছিল।’’
ভারতীয় ক্রিকেটারদের প্রশংসা করে ব্রড এও লিখেছেন, ‘‘চোট-আঘাতে জর্জরিত হওয়ার পরেও ভারত যে ভাবে টেস্ট সিরিজ জিতেছে, তাতে যে কোনও দলই গর্বিত হবে। ওদের চারিত্রিক কাঠিন্য, জেতার খিদেটা সত্যিই দারুণ ছিল। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত যে এখন দারুণ জায়গায়, তার একটা কারণ আছে।’’ তবে ব্রড এও বলেছেন, ‘‘ভারতের ভক্ত থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমরা ভারতের শত্রু হয়ে উঠেছি। এটা মাথায় রাখতে হবে, ভারত যতই কঠিন প্রতিপক্ষ হোক না কেন, ওরা অপ্রতিরোধ্য নয়।’’
ইংল্যান্ডের মাটিতে এর আগে ভারতের বিরুদ্ধে সফল হয়েছিলেন অফস্পিনার মইন। শ্রীলঙ্কায় কোভিড-১৯ অতিমারির আক্রমণ সামলে তিনি আবার ফিরে এসেছেন ইংল্যান্ড দলে। টেস্টেও প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে তাঁর। মইন আত্মবিশ্বাসী, ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা তাঁর মধ্যে এখনও আছে। তিনি বলেছেন, ‘‘টেস্টে সুযোগ পাব কি না, জানি না। তবে আমি তৈরি। টেস্টে ফিরে আসার জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করেছি। আমি এখনও উইকেট নিতে পারি, রান করতে পারি। ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা আছে আমার মধ্যে।’’
মইন নিজের সামনে একটা লক্ষ্যও রেখেছেন। দুশো উইকেট। ইংল্যান্ড অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘আমি এখন টেস্টে দুশো উইকেটের মুখে আছি। ছোট, ছোট লক্ষ্য সামনে রেখে এগোতে চাই। যেমন দুশো উইকেট নেওয়া।’’ মইনের এখন সংগ্রহ ৬০ টেস্টে ১৮১ উইকেট। তিনি এও বলেন, ‘‘জানি, অনেকেই বলে, তারা এই সব লক্ষ্য নিয়ে ভাবে না। কিন্তু আমি ভাবি। এই লক্ষ্যটা পূরণ হলে আবার অন্য কিছুকে সামনে রেখে এগোব।’’