ছন্দে: ম্যাচ জিতে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের উৎসব। রবিবার। এআইএফএফ
ভুলত্রুটি শুধরে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে ইস্টবেঙ্গল। কোচ মারিয়ো রিভেরার প্রশিক্ষণে শিবিরে ফিরছে হারানো আত্মবিশ্বাসও।
যে দলটা গোটা জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জেতার আত্মবিশ্বাসটাই হারিয়ে ফেলেছিল, সেই দলটাই শেষ তিন ম্যাচে অপরাজিত। ইন্ডিয়ান অ্যারোজকে হারানোর পরে রবিবার ইম্ফলের খুমান লাম্পাক স্টেডিয়ামে ট্রাউ এফসি-কে ৪-২ হারিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে কলকাতা ফিরছে মারিয়োর দল। তা-ও আবার শুরুতেই পিছিয়ে গিয়ে।
এ দিন জয়ের ফলে ১৩ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় চার নম্বরে উঠে এলেন খাইমে সান্তোস কোলাদোরা। ম্যাচ শেষে স্বস্তির সুর ইস্টবেঙ্গল কোচের গলায়। মারিয়ো বলে দিলেন, ‘‘দলের খেলায় আমি সন্তুষ্ট।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘লিগ তালিকা নয়। ম্যাচ প্রতি তিন পয়েন্ট নিয়ে ফেরাটাই আপাতত পাখির চোখ। এ ভাবে এগোতে পারলে লিগের শেষে দেখা যাবে শীর্ষে থাকা দলের সঙ্গে আমাদের ব্যবধান কত।’’
বিপক্ষের ঘরের মাঠে দর্শক ঠাসা স্টেডিয়ামে ১৮ মিনিটেই প্রিন্সওয়েল এমেকার গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সতীর্থ দীনেশ সিংহের থেকে থেকে বল পেয়ে এমেকা যখন ট্রাউকে ১-০ এগিয়ে দিলেন, তখনও অগোছাল ইস্টবেঙ্গল। মনে হচ্ছিল ফের সেই হারের ভূত ঘাড়ে উঠে পড়ল।
কিন্তু কোচ মারিয়োর বিশেষত্ব হল, তিনি পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত পাল্টা চাল দেন। বিরতির কিছু আগে লালরিনডিকা রালতের জায়গায় ব্র্যান্ডন আর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আনসুমানা ক্রোমার পরিবর্তে ভিক্তর আলোন্সোকে নামিয়ে দিলেন সেই চাল দিলেন তিনি। আর তাতেই বদলে যায় ইস্টবেঙ্গলের ছন্দ। শুরু হয় খুয়ান মেরা-কোলাদো যুগলবন্দি। কখনও বা মেরা-কোলাদো-ব্র্যান্ডনের ত্রিভুজ প্রতি-আক্রমণ। যা বিপক্ষ রক্ষণে চাপ বাড়াচ্ছিল। সঙ্গে ভিক্তরের নিখুঁত পাস বাড়ানোর দক্ষতা। এরই ফল, ৫২ মিনিটে কোলাদোর ডান পায়ের জোরালো শটে গোল। ৬৭ মিনিটে কাশিমের গোলও এই প্রয়াসেরই ফসল। এর দু’মিনিট পরেই খুয়ান মেরার সঙ্গে যুগলবন্দিতে গোল করে যান ব্র্যান্ডন। ৭৬ মিনিটে মার্কোস দে লা এস্পারা পেনাল্টিতে ৪-১ করার পরে কিছুটা আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ফলে শেষ মুহূর্তে ওগুচি উচে পেনাল্টিতে ব্যবধান কমান।
এ দিন চতুর্থ স্থানে উঠে আসার চেয়েও লাল-হলুদ শিবিরের বড় প্রাপ্তি রক্ষণের আগে ভিক্তর-কাশিমের নির্ভরতা প্রদান, নিখুঁত সেটপিস ও কোলাদোর আগের ছন্দে ফেরা। এর পরে জনি আকোস্তা এলে এই ইস্টবেঙ্গল কিন্তু লিগে অনেক সমীকরণ পাল্টে দিতেই পারে।
ইস্টবেঙ্গল: লালথুয়াম্মাউইয়া রালতে, সামাদ আলি মল্লিক, মেহতাব সিংহ, আসির আখতার, আভাস থাপা, খুয়ান মেরা, কাশিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে (ব্র্যান্ডন ভানলালরেমডিকা), খাইমে সান্তোস কোলাদো, মার্কোস খিমেনেস দে লা এস্পারা (বিদ্যাসাগর সিংহ), আনসুমানা ক্রোমা
(ভিক্তর আলোন্সো)।
ট্রাউ এফসি: সায়ন রায়, শাহবাজ় খান, জেরার উইলিয়ামস, দীপক দেবরানি, সোরাইশাম দীনেশ সিংহ, সৌগ্রাকপম নেত্রজিৎ সিংহ (ওগুচি উচে), ওয়াহেংবাম অঙ্গৌউসানা লুয়াং, জোসেফ মায়োমা ওলালেয়ে, প্রিন্সওয়েল এমেকা, লোকেন মিতেই (কৃশানন্দ সিংহ), জোয়েল সানডে (নওচা সিংহ)।