ক্রীড়াপ্রেমীদের চিকিৎসার উদ্যোগ ইস্টবেঙ্গলের

অনির্বাণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে মরিয়া লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘সব মেডিক্যাল কলেজের সুপারদের অনুরোধ করা হবে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের চিঠি নিয়ে কেউ গেলে যেন সুচিকিৎসার সুযোগ পান। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছেও আবেদন জানাব।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘এ ব্যাপারে কে কোন দলের সদস্য বা সমর্থক, দেখা হবে না। কারণ, সচিব কল্যাণ মজুমদার সব সময়ই চান ক্লাব এমন কিছু করুক যাতে মানুষ উপকৃত হন। ওঁর অনুপ্রেরণাতেই এই ভাবনা।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০৪:০২
Share:

উৎসব: আসিয়ান জয়ের ১৫ বছর। কেক কাটছেন চন্দন, সুভাষ, ষষ্ঠী, অ্যালভিটো ও সন্দীপ। বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে। নিজস্ব চিত্র

আসিয়ান কাপ জয়ের পনেরো বছর পূর্তির দিনেই অভিনব পরিকল্পনা লাল-হলুদে শিবিরে। হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে ক্রীড়াপ্রেমীরা যাতে বিশেষ সুবিধা পান, ভারতের প্রথম ক্লাব হিসেবে উদ্যোগ নিল ইস্টবেঙ্গল। শুধু তা-ই নয়। খেলা দেখতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়া দর্শকদের সাহায্যের জন্য ক্লাবের তরফে খোলা হচ্ছে চব্বিশ ঘণ্টার ‘হেল্প লাইন’।

Advertisement

১৯ জুলাই বারাসত স্টেডিয়ামে আইএফএ শিল্ড ফাইনাল দেখে ফেরার পথে মাথায় পাথর লেগে আহত হন ইস্টবেঙ্গল সমর্থক অনির্বাণ কংসবণিক। দিন চারেক পরে অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে মাথায় স্ক্যান হলেও অস্ত্রোপচারের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে জায়গা পাওয়া যায়নি। ফিরিয়ে দেওয়া হয় বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজি থেকেও। অনির্বাণের বাবা ছোটখাটো ব্যবসা করে সংসার চালান। তাঁর পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ বহন করা অসম্ভব। কিন্তু বাধ্য হয়েই ছেলেকে ভর্তি করেন তপসিয়ার এক নার্সিংহোমে। চব্বিশ ঘণ্টা আগে সেখানেই অনির্বাণের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। ইতিমধ্যেই তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল।

অনির্বাণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে মরিয়া লাল-হলুদের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, ‘‘সব মেডিক্যাল কলেজের সুপারদের অনুরোধ করা হবে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের চিঠি নিয়ে কেউ গেলে যেন সুচিকিৎসার সুযোগ পান। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছেও আবেদন জানাব।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘এ ব্যাপারে কে কোন দলের সদস্য বা সমর্থক, দেখা হবে না। কারণ, সচিব কল্যাণ মজুমদার সব সময়ই চান ক্লাব এমন কিছু করুক যাতে মানুষ উপকৃত হন। ওঁর অনুপ্রেরণাতেই এই ভাবনা।’’

Advertisement

বিশেষ সেলের ভূমিকা কী হবে? ইস্টবেঙ্গল কর্তার কথায়, ‘‘খেলা দেখতে গিয়ে কেউ যদি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন, তাঁদের চিকিৎসা থেকে আর্থিক সাহায্য, সব ব্যাপারেই সহায়তার চেষ্টা করার জন্যই খোলা হচ্ছে এই সেল। চালু করা হবে চব্বিশ ঘণ্টার বিশেষ হেল্প লাইনও।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ থেকে আই লিগ— সব ম্যাচেই দর্শকদের বিমায় আওতায় আনার ভাবনা রয়েছে। দুর্ঘটনায় কোনও ক্রীড়াপ্রেমীর মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে। একই পরিকল্পনা খেলা দেখতে গিয়ে কারও অঙ্গহানি হওয়ার ক্ষেত্রেও। এ ব্যাপারে বিমা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে দ্রুত কথা বলার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

বৃহস্পতিবার ক্লাব তাঁবুতে হাজির ছিলেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক-সহ আসিয়ান কাপ জয়ী দলের পাঁচ সদস্য— সন্দীপ নন্দী, ষষ্ঠী দুলে, অ্যালভিটো ডি’কুনহা ও চন্দন দাস। কেক কেটে পালন করা হয় আসিয়ান কাপ জয়ের পনেরো বছর পূর্তি। সুভাষ বললেন, ‘‘আসিয়ানের মতো বিদেশের মাটিতে আরও কিছু টুর্নামেন্ট খেলার ইচ্ছে রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement