Mike Okoro

‘ইঞ্জেকশন নিয়ে খেলে ইস্টবেঙ্গলকে আশিয়ান কাপ দিয়েছিলাম, ক্লাবের শতবর্ষে ডাকই পেলাম না’

এ দেশে ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও ইস্টবেঙ্গল তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসে। এখনও সময় পেলে লাল-হলুদের খেলা দেখেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯ ২০:৩৭
Share:

ইস্টবেঙ্গলের তিন রত্ন। ডগলাস, মাইক ওকোরো ও মুসা। —ফাইল ছবি।

‘‘আশিয়ান কাপের ফাইনাল খেলার মতো অবস্থাতেই ছিলাম না। কাঁধে ইঞ্জকেশন নিয়ে সে দিন খেলতে নেমে পড়েছিলাম।’’ মার্কিন-মুলুক থেকে এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলছিলেন ইস্টবেঙ্গলের একসময়ের প্রাণভোমরা মাইক ওকোরো।

Advertisement

আশিয়ান কাপের সেই ফাইনালে বেক তেরো সাসানার জালে প্রথম গোলটাই জড়িয়েছিলেন ওকোরো। তার পরের ঘটনা তো সবারই জানা। আশিয়ান কাপ জয় ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় ঘটনা। সে দিনের নায়ক কিন্তু ডাক পাননি এ বারের শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে। অভিমানী তারকা স্ট্রাইকার। নীরবে-নিভৃতে হয়তো চোখের জলও ফেলছেন। লাল-হলুদের প্রসঙ্গ উঠতেই অনর্গল ওকোরো।

টাইম মেশিনের সাহায্য না নিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন ২০০৩ সালের আশিয়ান কাপে। আনন্দবাজারকে ওকোরো বলেন, ‘‘প্রথম ম্যাচেই আমার কাঁধে চোট লেগেছিল। সেই চোট নিয়েই খেলেছিলাম বাকি ম্যাচগুলো। ফাইনালে নামার মতো অবস্থা একেবারেই ছিল না। কোচ (সুভাষ ভোমিক) খেলার জন্য আমাকে বারবার অনুরোধ করেন। সেই অনুরোধ আমার পক্ষে ফেলা সম্ভব হয়নি। আমার কাঁধে ইঞ্জেকশন দিয়ে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করা হয়। সে দিন দলের প্রত্যেক সদস্যই নিজেদের নিংড়ে দিয়েছিল মাঠে। প্রত্যেককেই ক্লাবের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো উচিত। বেছে বেছে কয়েকজনকে ডাকা একেবারেই ঠিক নয়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: লাল-হলুদ নাগাল পায়নি, সেই স্প্যানিশ স্ট্রাইকার এ বার খেলতে পারেন মোহনবাগানে

সাফ কথা ওকোরোর। তাঁর সম্পর্কে কলকাতা ময়দানে ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র মিথ। কেউ বলেন, তিনি খুব মুডি। আবার কেউ বলেন, যত বড় ফুটবলার ছিলেন, সেই অনুযায়ী তাঁর নাম ছড়ায়নি। ক্লাবের সম্মান সবার আগে। তাই মারাত্মক চোট নিয়েও তিনি নেমে পড়েন মাঠে। আজকের দিনে কোনও ফুটবলারই চোট নিয়ে মাঠে নামার সাহস দেখাবেন না। ওকোরোরা সব অর্থেই ব্যতিক্রম।

অনুশীলনে ওকোরো। — ফাইল চিত্র।

এ দেশে ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও ইস্টবেঙ্গল তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসে। এখনও সময় পেলে লাল-হলুদের খেলা দেখেন তিনি। ওকোরো বলছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের জন্য সব সময়েই শুভেচ্ছা রয়েছে। আমি ইস্টবেঙ্গলেরও ফ্যান।’’ লাল-হলুদের সমর্থক বলেই মার্কিন-মুলুকে ইস্টবেঙ্গলের পতাকা তুলবেন ওকোরো। কিন্তু, ক্লাবের শতবর্ষ উদযাপনে উপস্থিত না থাকার যন্ত্রণা যে তাঁর মনে গেঁথে রয়েছে। কথা বলার সময়ে সেগুলোই ফুটে উঠছিল। ওকোরোর অভিমান দূর করে ইস্টবেঙ্গলের সহ-সচিব শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘মান-অভিমানের ব্যাপার নয়। ক্লাবের শতবর্ষ অনুষ্ঠান দু’ বছর ধরে চলবে। আশিয়ান কাপ জয়ী ফুটবলারদেরও নিশ্চয় ডাকা হবে। সবাইকে তো একবারে ডাকা সম্ভব নয়। তাই এ বার ডাকা গেল না।’’

এক সময়ে যে ক্লাব ছিল তাঁর ‘যৌবনের তপোবন’, সেই ক্লাবের ডাকের অপেক্ষায় মাইক ওকোরো।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement