পুলিশের সামনে প্রতিবাদীদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
ময়দানের লেসলি ক্লডিয়াস সরণী সাক্ষী থেকেছে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সমর্থকদের লড়াইয়ের। এই প্রথম সেখানে লাল-হলুদ সমর্থকদের দুই গোষ্ঠীর লড়াই দেখা গেল। ক্লাবকর্তাদের সমর্থনকারী গোষ্ঠীর সঙ্গে ক্লাবকর্তাদের বিরোধী গোষ্ঠী হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সাময়িক ভাবে সামাল দেয়। পরে তারা বেশ কিছু সমর্থককে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যায়।
২১ জুলাই যে বড় কিছু হতে চলেছে, তার আভাস আগে থেকেই ছিল। সেই মতো ক্লাবকর্তাদের বিরোধী সমর্থকরা দুপুর ১টার আগে থেকে জড়ো হতে শুরু করেন। পাল্টা জড়ো হচ্ছিলেন ক্লাবকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সমর্থকরাও। দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিচ্ছিলেন। এক সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দু’পক্ষের বাদানুবাদ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে হাতাহাতিতে।
ঝামেলা হবে, এমন অনুমান করে আগে থেকেই মোতায়েন করা ছিল পুলিশ-বাহিনী। তাঁদের হস্তক্ষেপে ঝামেলা বেশি দূর গড়ায়নি। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তবে বড় ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। কোনও সমর্থক মারামারিতে গুরুতর জখমও হননি। গোটা ঘটনাই কলকাতা পুলিশ ভিডিয়ো করে রেখেছে।
কল্যাণ মজুমদারকে দেওয়া সমর্থকদের চিঠি।
প্রতিবাদে শামিল মহিলা সমর্থকরা। নিজস্ব চিত্র
তবে ক্লাবকর্তাদের বিরোধী গোষ্ঠীর দাবি, ঝামেলা হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছেন সমর্থনকারী গোষ্ঠীর লোকেরাই। দুপুর ১টার অনেক আগেই গাড়ি করে তাঁরা ক্লাবতাঁবুতে আসতে শুরু করেন। যাঁরা সমর্থনকারী গোষ্ঠীর সদস্য তাঁদের আলাদা করে চিহ্নিত করার জন্য হাতে নীল-সাদা রিবন পরানো হয়। এমনকী, মধ্যাহ্নভোজের জন্য আলাদা করে টোকেন দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
বিরোধী গোষ্ঠীর সমর্থকরা সময় অনুযায়ী ক্লাবের সামনে এবং লেসলি ক্লডিয়াস সরণীতে জড়ো হয়ে ‘গো ব্যাক নিতু’ শ্লোগান দিতে থাকেন। কিছুক্ষণ চলার পরেই সমর্থনকারী গোষ্ঠীর সদস্যরা এসে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এরপরেই ঝামেলা বাড়তে থাকে এবং হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।
দুই গোষ্ঠীর সমর্থকদের তর্কাতর্কি। নিজস্ব চিত্র
সমর্থকদের শান্ত হতে অনুরোধ করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
অল্প জায়গায় জড়ো হয়েছিলেন প্রচুর মানুষ। ফলে সামাজিক দূরত্ব এবং করোনা-বিধি শিকেয় ওঠে। পুলিশ বার বার মাইকিং করে সমর্থকদের অনুরোধ করা সত্ত্বেও অনেকেই তা মানতে রাজি ছিলেন না। ভাল সংখ্যক মহিলা সমর্থককেও প্রতিবাদে শামিল হতে দেখা গিয়েছে। মারপিট-হাতাহাতিতে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জন সমর্থক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বার বার অনুরোধেও কাজ না হওয়ায় লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। পরে কিছু বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।