ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলার জন্য দুই প্রধান একজোট হয়ে এ বার ফেডারেশনের দ্বারস্থ হচ্ছে। ২ বা ৩ মে মুম্বইতে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি জানাতে চলেছেন লাল-হলুদ ও সবুজ-মেরুন কর্তারা।
কী ফর্মুলা নিয়ে তাঁরা হাজির হবেন তার রূপরেখাও তৈরি হয়ে গেল বুধবার আইএফএ-র ডাকা সভায়। সেগুলো কী? এক) দেশের সর্বোচ্চ লিগে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানকে খেলতে দিক ফেডারেশন দুই) আইএসএলে খেললেও কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দেবে না দুই ক্লাব। তিন) যে-হেতু দু’টি ক্লাবের সঙ্গেই ভারতের ঐতিহ্য জড়িয়ে তাই সদস্য-সমর্থকদের কথা ভেবে হোম ম্যাচগুলো কলকাতায় দেওয়া হোক।
মধ্য কলকাতার এক অভিজাত ক্লাবে দুই প্রধানের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে সভার পর আইএফএ প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত-ও বললেন, ‘‘ক্লাবগুলি যে দাবি নিয়ে ফেডারেশনের কাছে যাচ্ছে সেটা আইএমজিআর মানলে লোগো, ক্লাবের নাম বা জার্সির রঙ নিয়ে আর কোনও সমস্যা থাকবে না। কারণ সেক্ষেত্রে তো দুই প্রধান নিজেরাই নিজেদের স্পনসর ঠিক করবে।’’
আইএসএল কর্তারা মরিয়া দুই প্রধানকে খেলাতে। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানও খেলতে আগ্রহী। কিন্তু কীভাবে তা নিয়ে গত ছয় মাস ধরে নানা প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাবে আটকে যাচ্ছে সবকিছু।
সংগঠক আইএমজিআর নতুন যে প্রস্তাব পাঠিয়েছে দুই প্রধানের কাছে, তা-ও এ দিনের সভায় নাকচ করে দিল ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান। তাদের দাবি, প্রথম প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিতীয়টার বড় কোনও তফাত নেই। শুধু ৩০ বছরের চুক্তির বদলে তা পাঁচ বছরের করা হচ্ছে।
দল গঠন, বিপনন স্বত্বর মতো কিছু প্রস্তাব মেনে নিলেও ক্লাবের নাম, লোগো ও জার্সির রঙ বদল নিয়ে দুই প্রধানের কর্তারাই আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন প্রথম দিন থেকে। দ্বিতীয় প্রস্তাবেও রেখে দেওয়া হয়েছে তা, তবে একটু ঘুরিয়ে। এক ক্লাব কর্তা বলছিলেন, ‘‘আইএসএল বলছে নাম, লোগো বদলাব না। কিন্তু এগুলো বিপননের সময় ব্যবহার করা হবে কী না সেই সিদ্ধান্ত ওরা নেবে।’’ নতুন প্রস্তাবে লেখা হয়েছে দশ সদস্যের গভর্নিং কাউন্সিল সব ঠিক করবে। সেই কাউন্সিলে আইএমজিআরের পাঁচ জন, ক্লাবের তিন জন ও নিরপেক্ষ দু’জন থাকবে। অর্থাৎ সংখ্যাধিক্যে সংগঠকদেরই মত প্রধান্য পাবে। সেই জুজুতেই দুই প্রধান নিজেরাই নিজেদের ক্ষমতায় টিম করে আইএসএল খেলতে চাইছে। তাদের উদ্বুদ্ধ করছে আই লিগে আইজলের সাফল্য। কারণ তিন কোটির টিম করে ১৩-১৪ কোটির ক্লাবকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে খালিদ জামিলের দল। দুই প্রধানের যুক্তি, আইজল পারলে আটলেটিকো দে কলকাতার পঁচিশ কোটির টিমের সঙ্গে ১৩ কোটির ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান কেন পারবে না?
সরাসরি সে কথা অবশ্য বলতে নারাজ কর্তারা। মোহনবাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘আমরা ফেডারেশনকে পাশে চাইছি। ওরাই বলুক আইএসএলের শর্তে খেলা উচিত কী না? আমরা নতুন প্রস্তাবও তৈরি রেখেছি।’’ আর ইস্টবেঙ্গেলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকারের বক্তব্য, ‘‘আমরা এখন দেশের সর্বোচ্চ লিগে খেলি। সেখানেই খেলব। কারণ আমরাই ভারতীয় ফুটবলের ধারক ও বাহক।’’
দুই ক্লাবের কর্তাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট, ফেডারেশনের কোর্টেই আইএসএলের বল ঠেলে দিতে চাইছেন তাঁরা।