ইতিহাস: প্রথম ভারতীয় মহিলা ফুটবলার হিসেবে ইউরোপের ক্লাবে খেলার সুযোগ পেলেন বালা দেবী। হাতে রেঞ্জার্সের সেই জার্সি। টুইটার
ইউরোপের নামী ক্লাব রেঞ্জার্স এফসি-তে খেলার সুযোগ পাওয়াকে ‘স্বপ্ন ছোঁয়ার মতো’ ঘটনা বলে মনে করছেন বালা দেবী। বৃহস্পতিবার মেয়েদের সর্বোচ্চ গোলদাতা বলে দিলেন, ‘‘স্কটিশ লিগের নামী ক্লাবে খেলার অনভূতিটা কথায় বলে বোঝাতে পারব না। ইউরোপে খেলাটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। সেটা শেষ পর্যন্ত ছুঁতে পেরেছি। আমার স্বপ্ন সফল হয়েছি।’’
ভাইচুং ভুটিয়া, সুনীল ছেত্রী, গুরপ্রীত সিংহরা ইউরোপিয়ান ক্লাবে খেলে এসেছেন। কিন্তু বালা দেবী-ই প্রথম মেয়ে ফুটবলার যিনি ইউরোপের নামী ক্লাবে আঠারো মাসের চুক্তিতে খেলতে যাচ্ছেন। গত নভেম্বরে ট্রায়াল দিয়ে এসেছিলেন রেঞ্জার্স এফ সি-তে। ভাবেননি তাঁর স্বপ্ন সত্যি হবে। ঘটিয়ে ফেলবেন ঐতিহাসিক ঘটনা। ‘‘আপনারা সবাই জানেন রেঞ্জার্স এফসি ক্লাবের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের কথা। আমি সেই ক্লাবের জার্সি পরব এটা গর্বের। স্ট্রাইকার হিসাবে নিজেকে আরও উন্নতি করার চেষ্টা করব।’’
গত বছর মেয়েদের ফুটবলে দেশার সেরা খেলোয়াড় ছিলেন বালা দেবী। মেয়েদের লিগ ও জাতীয় ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, স্কটিশ লিগের ক্লাবে এক সপ্তাহ ট্রায়াল দিয়ে আসার পর দক্ষিণ এশীয় গেমসে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন দেশকে। হয়েছিলেন সর্বোচ্চ গোলদাতা। বালা দেবী ফেডারেশনের ওয়েব সাইটকে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলে দিয়েছেন, ‘‘মেয়েদের ফুটবলে আমরা এগোচ্ছি। আমি আশা করব অন্য মেয়েরাও আমার মতো আগামীদিনে ইউরোপে খেলবে। দেশের হয়ে খেলে আরও সফল হবে।’’
উনত্রিশ বছর বয়সী ভারতের সোনার মেয়ে ইউরোপে খেলার সুযোগ পাওয়ায় ভারত অধিয়ানক সুনীল ছেত্রী তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ‘‘উন্নতি এমন একটা জিনিস যা সবসময় করা যায়। আমি এ জন্য ফেডারেশনের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা জাতীয় দলকে সবরকম সহযোগিতা করছে। সেই সুযোগটা আমি নিয়েছি। অন্যদেরও নিতে হবে।’’ বলে দিয়েছেন মণিপুরের মেয়ে। এ বছরই ভারতে হতে চলেছে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ। তার আগে বালা দেবীর এই ইউরোপের ক্লাবে যাওয়া একটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে এদেশের ফুটবলে।
স্কটিশ রেঞ্জার্সে ট্রায়াল দেওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বালা দেবী বলেন, ‘‘ওখানকার পরিবেশটা ছিল বাড়ির মতো। স্কটিশ লিগে সফল হতে গেলে বাড়তি শারীরিক শক্তির প্রয়োজন হয়। ওখানকার কোচেরা সে ব্যাপারে আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। কী ভাবে সফল হওয়া যায় তা বলে দিয়েছেন। যা আমার ট্রায়াল দেওয়ার সময় কাজে লেগেছে।’’ পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা ইউরোপের ফুটবল ইউ টিউব বা টেলিভিশনে দেখে বড় হয়েছি। এখন সেখানে খেলার সুযোগ পেয়েছি। চেষ্টা করব সেখানে খেলে ভাল কিছু করে দেশকে গর্বিত করতে। পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় থাকলে যে সফল হওয়া যায় সেটা দেখাতে চাই। সুনীল ছেত্রীর মতোই ক্লাবের চেয়ে দেশের খেলাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। বলে দিয়েছেন, ‘‘যে কোনও ফুটবলারের উচিত দেশের হয়ে জীবনের সেরা খেলাটা খেলা। দেশের জার্সি পরাটা সবারই লক্ষ্য থাকা উচিত।’’