সাফল্যেও দুশ্চিন্তা যায়নি ‘ব্ল্যাকবেল্ট’ অনুষ্কার

বয়স মেরেকেটে চোদ্দো বছর। এখনই তার কোমরে উঠেছে ব্ল্যাক বেল্ট। জেলা থেকে রাজ্য, জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একাধিক প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করেছে সে। এই বয়সেই পদক-পুরস্কারে আলমারি ভরে গিয়েছে অনুষ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

Advertisement

প্রকাশ পাল

কোন্নগর শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৯
Share:

লক্ষ্যে: প্র্যাকটিসে অনুষ্কা। নিজস্ব চিত্র

বয়স মেরেকেটে চোদ্দো বছর। এখনই তার কোমরে উঠেছে ব্ল্যাক বেল্ট। জেলা থেকে রাজ্য, জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একাধিক প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করেছে সে। এই বয়সেই পদক-পুরস্কারে আলমারি ভরে গিয়েছে অনুষ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

Advertisement

বাড়ি হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের কানাইপুর ক‌লোনিতে। স্থানীয় নবগ্রাম হিরা‌লাল পাল উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী অনুষ্কার ক্যারাটেতে হাতেখড়ি বছর সাতেক আগে। বাবা সুদীপবাবু জানান, এক দিন ক্যারাটে জানা একটি মেয়েকে তিনি দেখেছিলেন দুই ইভটিজারকে ‘শিক্ষা’ দিতে। তখন থেকেই মেয়েকে ক্যারাটে শেখানোর ইচ্ছা জাগে। সাত বছর বয়সেই মেয়েকে ভর্তি করে দিয়েছিলেন কোন্নগরের একটি ক্যারাটে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। সেই শুরু। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ব্ল্যাক বেল্ট পায় অনুষ্কা। চলতি বছরে ইতিমধ্যেই জেলা এবং রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপে চারটি সোনা জিতেছে সে। আগামী এপ্রিল-মে মাসে দিল্লিতে জাতীয় প্রতিযোগিতায় যোগদানের জন্য নির্বাচিত হয়েছে সে। গত বছর রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপে সাফল্যের পাশাপাশি ফেডারেশন কাপে একটি সোনা এবং একটি ব্রোঞ্জ জেতে। কলকাতায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক ওপেন ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপে ১টি সোনা এবং একটি ব্রোঞ্জপদক তার ঝুলিতে।

অনুষ্কার কথায়, ‘‘ক্যারাটে আত্মরক্ষার একটা উপায়। এতে শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি মানসিক শক্তিও বাড়ে।’’ প্রতিদিন ভোরে উঠে বাড়ির ছাদে অনুশীলন। তারপর স্কুলে যাওয়া। বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে ফের প্র্যাকটিস। মেয়ের এত সাফল্য চিন্তায় ফেলেছে বাবা-মাকে।

Advertisement

হাওড়ায় লঞ্চঘাটে ডালা নিয়ে পান‌, বিড়ি, সিগারেট বিক্রি করেন‌ সুদীপবাবু। সামান্য আয়ে সংসার কোনওরকমে চলে। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি। কিন্তু ওর আরও বেশি প্রয়োজন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যাতায়াত বা থাকা খাওয়ার খরচও রয়েছে।’’ কী ভাবে সে সবের টাকা জোগাড় হবে সেটাই ভাবনা তাঁর।

অনুষ্কা জা‌নায়, ফেডারেশন কাপে সাফল্যের জন্য একাধিকবার বিদেশে প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু যাওয়া হয়নি। কারণ পাসপোর্ট নেই। তা ছাড়া অত টাকা বাবা পাবে কোথায়!

সুদীপবাবুর কথায়, ‘‘কোনও স্পনসর পেলে সুবিধা হতো। না হলে এ ভাবে কতদূর এগনো যাবে জানি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement