Boxing

এশিয়ান গেমসে রুপোজয়ী বক্সার এখন বেচছেন আইসক্রিম

রাস্তায় কুলফি বিক্রি করা দীনেশের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে একের পর এক যানবাহন। হেঁটে যাচ্ছেন অনেকে। কেউ চিনতেই পারছেন না দেশে-বিদেশে নানা প্রতিযোগিতায় ১৭ সোনা, এক রুপো ও পাঁচ ব্রোঞ্জ জয়ী বক্সারকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:৫৪
Share:

ভিওয়ানির রাস্তায আইসক্রিম বিক্রি করছেন দীনেশ কুমার।

ভাগ্যের পরিহাস! একসময় এশিয়ান গেমসে জিতেছেন রুপো। গর্বিত করেছেন দেশকে। বক্সার সেই দীনেশ কুমারই এখন হরিয়ানার ভিওয়ানির রাস্তায় বেচছেন আইসক্রিম!

Advertisement

বক্সিং রিংয়ে নয়। দীনেশের ঠিকানা এখন রাস্তায়। হাতে গ্লাভস নেই। বরং ঠেলছেন আইসক্রিম-কুলফির গাড়ি। যার নাম দিয়েছেন 'দীনেশ কুলফি'।জীবন পালটে গিয়েছে দীনেশের। দেশের হয়ে পদক জেতার স্বপ্ন উধাও। কঠোর বাস্তবের নির্মমতায় চুরমার কেরিয়ার। এখন শুধু বাড়ির দেনা শোধই তাঁর ধ্যানজ্ঞান।

অথচ, একসময় দেশের হয়ে গ্লাভস হাতে উজাড় করে দিয়েছেন। এনেছেন কত সম্মান, কত পদক। দেশে-বিদেশে নানা প্রতিযোগিতায় জিতেছেন ১৭ সোনা, এক রুপো ও পাঁচ ব্রোঞ্জ। পদক ছিনিয়ে এনেছেন এশিয়ান গেমসের আসরে। লড়েছেন অলিম্পকে। পেয়েছেন অর্জুন পুরস্কার। কত স্বপ্ন ছিল। ছিল কত আশা।

Advertisement

আরও পড়ুন: সঙ্গাকারার টানা চার সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করতে পারলেন না কোহালি​

আরও পড়ুন: ধোনির ওয়ানডে কেরিয়ারে এত দুঃসময় আগে আসেনি​

সে সবই এখন অতীত। রাস্তায় কুলফি বিক্রি করাই এখন বাস্তব। দীনেশের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায় একের পর এক যানবাহন। হেঁটে যান অনেকে। কেউ চিনতেই পারেন না তাঁকে। দুঃসময়ে সাহায্যের হাত বাড়াননি কেউ। পাশে থাকেনি সরকারও। আর্থিক দুর্দশায় মুথ থুবড়ে পড়া পরিবারকে টেনে তুলতেই দীনেশ এখন আইসক্রিম-ওয়ালা।

ছেলেকে বক্সার করে তুলতে, ইংল্যান্ড-সহ অন্য দেশে খেলতে পাঠাতে প্রচুর ঋণ হয়ে গিয়েছিল দীনেশের বাবার। লোন নিয়েছিলেন তিনি। বাবার সেই লোন শোধ করাই এখন দীনেশের লক্ষ্য। তাঁর দাদার কথায়, "লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণে ডুবে রয়েছি আমরা। সরকার থেকে আসেনি কোনও সাহায্য। আমরা কেমন অবস্থায় রয়েছি, সেটাও জানতে চায়নি কেউ। অন্য কেউ এতটা অবহেলার শিকার কিন্তু হত না।"

পুরনো সেই দিনের কথা। বক্সিং রিংয়ে দীনেশ।

স্বয়ং দীনেশ সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, "সরকার যে চাকরি দেবে বা আর্থিক সাহায্য করবে, এমন আশা দেখি না একেবারেই। ক্ষমতাসীন কোনও রাজনৈতিক দলও আমাকে সাহায্য করার যোগ্য বলে মনে করেননি। আমি কিন্তু এখনও ভাল ক্রীড়াবিদ। কিন্তু, তা সত্ত্বেও পরিবারকে সাহায্য করতে এই রাস্তা বেছে নিয়েছি। আমার কেরিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পরিবারের তরফে যে ধার করা হয়েছিল, তা মেটানোই লক্ষ্য। তারপর পারলে বক্সিং রিংয়ে ফিরব।" দীনেশ ফের বক্সিং রিংয়ে ফিরতে পারবেন কি না, তার উত্তর অবশ্য অজানাই থাকছে।

(ক্রিকেটারদের ইন্টারভিউ, ফুটবলারদের ইন্টারভিউ, অ্যাথলিটদের লড়াইয়ের গল্প - ক্রীড়াজগতের সব খবর আমাদের খেলা বিভাগে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement