বাংলা ক্রিকেটের জন্য দুটো খবর থাকল সপ্তাহের প্রথম দিনে। একটা শুভ। একটা অশুভ। গ্লেন ম্যাকগ্রার কাছে দশ দিনের ক্র্যাশ কোর্সে পাঠানো হল অশোক দিন্দাকে। এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দেশের প্রতিভাবান পেসারদের নিয়ে দশ দিনের কোর্স করাচ্ছে বোর্ড। দিন্দার সঙ্গে যাচ্ছেন বীরপ্রতাপ সিংহ। যেটা বাংলর কাছে শুভ ব্যাপার।
কিন্তু একই দিনে আবার বাংলা ছেড়ে রেলওয়েজে যোগ দেওয়া প্রায় নিশ্চিত করে ফেললেন অনুষ্টুপ মজুমদার এবং অর্ণব নন্দী। বাংলার যে প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে সিএবি কয়েক দিন আগে, সেখানে অনুষ্টুপ বা অর্ণব ছিলেন না। রেলে খেলতে চেয়ে দু’জনে সিএবির কাছে এনওসি চেয়েছিলেন। সিএবি আপত্তি করেনি। তবে দুই ক্রিকেটারের পক্ষে এ ভাবে বাংলা ছেড়ে দেওয়া অশুভ বলেই মনে করছে ক্রিকেটমহল।
দিন্দাকে নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে টানাপড়েন চলছিল। শোনা গেল, দিন্দা তখন সিএবির কাছে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন যে, তিনি এনসিএ-তে প্রাক-মরসুম প্রস্তুতি করতে চান। তাতে তাঁর প্রস্তুতিটা আরও ভাল হবে। বোর্ডকে যোগাযোগ করা হলে বোর্ড সিএবিকে বলে যে, ম্যাকগ্রা দিন কয়েকের মধ্যে আসবেন পেসারদের ক্লাস নিতে। তখন দিন্দাকে পাঠানো হোক। সেই মতো সোমবার থেকে চেন্নাইয়ে ম্যাকগ্রার ক্লাসে ঢুকে পড়লেন দিন্দা। বরুণ অ্যারন সহ দশ ভারতীয় পেসারের সঙ্গে।
প্রথম দিন কী হল? “আজ হাল্কাই গিয়েছে। ম্যাকগ্রার সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল। আইপিএলে বেশ কয়েক বার কথাও হয়েছে। কী কন্ডিশনে আছি, জানতাম না। অনেকক্ষণ বল করেছি ওর সামনে। ম্যাকগ্রা সেগুলো ভিডিওয় রেকর্ড করেছে। টেকনিক্যাল উন্নতির ব্যাপার নিয়ে বসব দু’এক দিনে,” চেন্নাই থেকে ফোনে বলেন দিন্দা। ততক্ষণে আবার বাংলা ছাড়ার খবরও ছড়িয়ে পড়েছে দিন্দার দুই সতীর্থের।
অনুষ্টুপ-অর্ণব দু’বছর আগেও বাংলা দলে নিয়মিত ছিলেন। গত রঞ্জি মরসুমেও অনুষ্টুপ প্রায় প্রত্যেকটা ম্যাচে খেলেন। ২০১২ বিজয় হাজারে দলে নিয়মিত খেলেন অলরাউন্ডার অর্ণবও। কিন্তু অনুষ্টুপের পারফরম্যান্স ও মানসিকতা নিয়ে বীতশ্রদ্ধ বাংলা টিম ম্যানেজমেন্ট। অর্ণব তারও আগে বাদ যান। সিএবির যুক্তি, অনুষ্টুপ-অর্ণবদের অনর্থক আটকে রেখে লাভ হত না। ওঁরা এমনিই সুযোগ পেতেন না। জানা গেল, দু’জনে রেলের হয়ে ট্রায়ালও দিয়েছেন। অনুষ্টুপ ব্যাপারটা থেকে দূরে থাকতে চান, ফোনও ধরছেন না মিডিয়ার। অর্ণব বললেন, “চার বছর আগে আমার রঞ্জি ডেবিউ হয়েছিল। আজ পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছি পাঁচটা। মোতেরায় গুজরাতের বিরুদ্ধে হাফসেঞ্চুরির পরও বাদ পড়তে হয়। ক্ষোভের কারণে বাংলা ছাড়ছি না। ক্রিকেট খেলতে পারব ভেবে ছাড়ছি। রেলে সুযোগও পাব।”
রেলে সুযোগ পেলে এঁরা পারবেন কোনও এক অরিন্দম ঘোষ হয়ে বাংলার বিরুদ্ধে ফিরে আসতে? উত্তরটা আসন্ন নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস দিয়ে দেবে।