ধোনি খেললেও শেষ ওভারে ৮ এল না। শনিবার। ছবি: এএফপি।
কোন এক আধমাসের জিম্বাবোয়ে সফরে ভারতের একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষ বলে দু’রানে হেরে যাওয়াটা আমার কাছে ধর্তব্যের নয়। কিন্তু যখনই মনে হচ্ছে, শেষ ওভারে আট রান দরকার ছিল ভারতের জিততে আর ক্রিজে ছিল ধোনি, খারাপ লাগছে।
মিডিয়াম পেসার মাজিভার শেষ বলটায় বাউন্ডারি দরকার ছিল ভারত অধিনায়কের। অফ স্টাম্পের বাইরে ওই রকম ডেলিভারি মাঠের বাইরে পাঠিয়ে অতীতে হয়তো কমপক্ষে দশ-বিশ বার ভারত কিংবা সিএসকে-কে জিতিয়েছে ধোনি। শনিবার হারারের মাঠে শরীর-ব্যাট কোনওটাই ঠিক পজিশনে গেল না। দু’টো সিঙ্গলসের বেশি এল না।
অথচ এ দিনও ধোনি সেই ছয় নম্বরে নেমেছিল। দলে পাঁচজনের একসঙ্গে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অভিষেক হচ্ছে। সেখানে কেদার যাদবেরও পরে ব্যাটিং অর্ডারে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিনিশারের নিজেকে রাখার কোনও মানে খুঁজে পাচ্ছি না। এতগুলো জুনিয়রে ভরা, প্রায় ‘ইন্ডিয়া এ’ টিম নিয়ে খেলতে নেমেও ধোনি নিজে আগে ব্যাট করবে না? পাঁচ নম্বরে নামলেও রানরেট অনেক বেশি কন্ট্রোল করার সুযোগ থাকত ওর। সেখানে করল ১৭ বলে ১৯ নট আউট। মাত্র একটা বাউন্ডারি। বেশিটাই ঠুকঠুক সিঙ্গলস।
আসলে আমার মনে হচ্ছে, যত দুর্দান্ত ফিনিশার হিসেবে ধোনির ব্যাটিং স্কিল কমছে, ততই অবচেতনে ও যেন সেটা মেনে নিতে পারছে না। সেই গল্পটার মতো অবস্থা— আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের মনে জিজ্ঞেস করছে, বলো তো আয়না, সেরা ফিনিশার কে? ইদানীং ভারত বা আইপিএলে পুণে সুপারজায়ান্টসকে ধোনির বেশি ম্যাচ জেতাতে না পারার ব্যাখ্যায় কেউ কেউ বলছে, ধোনি আর সেই ফিনিশার নেই। কিন্তু আমার ওর ব্যাটিং অর্ডারে সেই ছয়ে নামা, নিজেকে ডেথ ওভারে রাখা দেখে এটাও মনে হচ্ছে, ধোনি অবচেতনে এখনও নিজেকে সেরা ফিনিশার ভাবছে। যত তাড়াতাড়ি ও বাস্তবটাকে মেনে নেবে, ততই ভারতীয় ক্রিকেটের মঙ্গল। কারণ এখনও ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফর্ম্যাটে চার বা পাঁচ নম্বরে নেমে ধোনির অনেক কিছু দেওয়ার আছে। ও যদি সত্যিই খেলাটাকে উপভোগ করে এখনও, তা হলে যেন পাশাপাশি বাস্তবটারও দাম দেয়।
তবে শুধুই ধোনির ব্যাটিং এ দিন হারায়নি ভারতকে। মণীশ পাণ্ডে, অক্ষর পটেলরা তো এক-এক ওভারে জোড়া ছক্কা মেরে প্রায় জিতিয়েই দিচ্ছিল। আসলে ভারতের বোলিং লাইন আপ বাছাতেও আমার মতে ভুল ছিল। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজে দারুণ বল করা ধবল কুলকার্নি আর বারিন্দর স্রানকে একসঙ্গে বসিয়ে দেওয়াটা উচিত হয়নি। দুই নবাগত পেসার ঋষি ধবন আর উনাদকট কিন্তু অন্তত ২০ রান বেশি করতে দিয়েছে জিম্বাবোয়েকে। চিগুমবুরা একাই তো সাতটা ওভার বাউন্ডারি মেরেছে।
হায়, এর একটাও যদি ধোনির ব্যাটে আসত!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবোয়ে ২০ ওভারে ১৭০-৬ (চিগুমবুরা ৫৪ ন.আ., বুমরাহ ২-২৪)
ভারত ২০ ওভারে ১৬৮-৬ (মণীশ ৪৮, চিভাভা ২-১৩)।