জঙ্গলমহলের গুরুত্বপূর্ণ লালগড় ব্লকে আজ পর্যন্ত স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। লালগড়ে স্থানীয় ক্লাবগুলির উদ্যোগে নিয়মিত ফুটবল, ভলিবল ও ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় কিশোর-তরুণরা প্রতি বছরই স্কুল-ভিত্তিক ফুটবল এবং জঙ্গলমহল কাপে ভাল ফল করে থাকে।
২০১০ সালে লালগড়ের দশরথ সিংহ স্কুল স্তরে ভাল খেলার জন্য নির্বাচিত হয়ে জার্মানির মিউনিখে ফুটবল প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। সেই দশরথ এখন কলকাতার একটি ক্লাবে খেলেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘এত উন্নয়ন হল, অথচ একটা স্টেডিয়াম হল না!’’
এক সময় এই লালগড়কে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল জঙ্গলমহল। ২০১১-এ রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ার পরে এখানে খুন-সন্ত্রাসের ভয়াবহ দিনগুলির অবসান ঘটেছিল। গত ছ’বছরে লালগড় ব্লক-সদরের চেহারা বদলে গিয়েছে। কংসাবতীর উপর ঝাড়গ্রামের সঙ্গে সংযোগকারী সেতু ও চওড়া পিচ রাস্তা হয়েছে। নার্সিং ট্রেনিং কলেজ, সরকারি কলেজ —বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। জঙ্গলমহলের কয়েকটি ব্লকে মিনি স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। অথচ লালগড়ে স্টেডিয়াম তৈরির কোনও রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। লালগড়ে একমাত্র খেলার জায়গা সজীব সঙ্ঘের মাঠ। ক্লাব সম্পাদক তপন তেওয়ারি বলেন, ‘‘ক্লাবের মাঠ রায়তি জমিতে। এক বার প্রশাসন থেকে মাঠ সারিয়ে দেওয়া হয়। সভা, সমাবেশ, মেলায় মাঠের করুণ দশা। তাতেই খেলা ও অনুশীলন চলছে।’’ নিউ বয়েজ ক্লাবের সম্পাদক নিতাই রায় বলেন, “এখানে একটি সরকারি স্টেডিয়াম প্রয়োজন। উপযুক্ত মাঠের অভাবে প্রতিভার বিকাশ ঘটছে না।”
লালগড়ে একটি স্টেডিয়াম তৈরির জন্য প্রশাসনিক মহলে দাবিসনদ জমা দেওয়া হয়েছে। ক্রীড়া সংগঠনগুলিও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু তাও লালগড়ের ভাগ্যে স্টেডিয়ামের শিকে ছেঁড়েনি।
আর প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, লালগড় ব্লক সদরে স্টেডিয়াম তৈরির জন্য উপযুক্ত জায়গা খোঁজা চলছে। বিডিও জ্যোতিন্দ্রনাথ বৈরাগী বলেন, ‘‘এ জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠাব।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সভাধিপতি উত্তরা সিংহ এই প্রসঙ্গে বলেন, “লালগড়ে স্টেডিয়ামের জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব।’’