দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের অবস্থা। ছবি: সমাজমাধ্যম।
মাস কয়েক আগে প্যারিস অলিম্পিক্স থেকে ফেরার পর পদকজয়ী ক্রীড়াবিদদের নিয়ে মাতামাতি দেখা গিয়েছিল দেশজুড়ে। সেই ক্রীড়াবিদেরা কতটা দুর্দশার মধ্যে থাকেন তা প্রমাণ হল দিল্লিতে। গায়ক দিলজিৎ দোসাঞ্জের অনুষ্ঠানের পর দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম পরিণত হল আস্তাকুঁড়ে। এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে মদের বোতল, মাংসের হাড়, কাগজের টুকরো। স্টেডিয়ামের চেহারা দেখে ক্ষিপ্ত ক্রীড়াবিদেরা। দ্রুত সাফ করার আশ্বাস দিয়েছে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই)।
শনিবার এবং রবিবার এই স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয়েছিল দিলজিতের ‘দিল-লুমিনাটি’ অনুষ্ঠান। দু’দিনই ৪০ হাজার করে দর্শক এসেছিলেন। এর আগে এই স্টেডিয়ামে গান গেয়েছেন ব্রায়ান অ্যাডামস (২০০৪) এবং রিকি মার্টিনের (১৯৯৮) মতো তারকা। কিন্তু দিলজিতের অনুষ্ঠানের পর পরিস্থিতি ভয়ানক।
দিল্লির দৌড়বিদ বিয়ন্ত সিংহ সমাজমাধ্যমে একাধিক ছবি পোস্ট করেছেন। দেখা গিয়েছে ট্র্যাক ও ফিল্ড এলাকায় ছড়িয়ে আবর্জনা, মদের বোতল, খাবার প্লেট। অ্যাথলেটিক্সের সরঞ্জাম কোনও মতে এক ধারে ডাঁই করে রাখা হয়েছে। অনেকগুলিই ভেঙে গিয়েছে। গোটা ট্র্যাকের খুবই খারাপ অবস্থা।
বিয়ন্ত লিখেছেন, “এখানে নাকি ক্রীড়াবিদেরা অনুশীলন করে। সেখানেই মানুষ মদ খেয়েছে, নেচেছে, পার্টি করেছে। তার জন্য স্টেডিয়াম বন্ধ ১০ দিন। হার্ডলসের মতো অ্যাথলেটিক্স সরঞ্জাম ভেঙে গিয়েছে। এটাই আমাদের দেশে খেলাধুলো, ক্রীড়াবিদ এবং স্টেডিয়ামের অবস্থান। অলিম্পিক্সে পদক আসে না কারণ আমাদের দেশে খেলোয়াড়দের জন্য কোনও সম্মান নেই।”
সোমবার বিকেলে কিছু মানুষ গিয়ে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করতে থাকেন। তাতে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। মোটা ঝাড়ু দিয়ে অ্যাথলেটিক্সের ট্র্যাকে ঝাঁট দেওয়া সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবর্জনা সংগ্রহ করার বড় বড় গাড়ি নিয়ে ট্র্যাকের উপর দিয়ে যাওয়া হয়েছে। ফলে ট্র্যাক আগামী দিনে উঁচু-নীচু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা।
আইএসএলে পঞ্জাব এফসি-র ঘরের মাঠ এই স্টেডিয়াম। তাদের ম্যাচ রয়েছে বৃহস্পতিবার। সেই দলও অনুশীলন করতে পারছে না মাঠে। পাশের মাঠে অনুশীলন চালাতে হচ্ছে।
যে কোনও সংস্থাই দৈনিক সাড়ে চার লক্ষ টাকার বিনিময়ে জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম ভাড়া নিতে পারে। সাই জানিয়েছে, সংস্থার সঙ্গে এমন ভাবেই চুক্তি হয়েছিল যাতে অনুষ্ঠানের পর ঠিক আগের রূপে স্টেডিয়াম ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তা যে হয়নি সেটা পরিষ্কার সোমবার। যদিও সাইয়ের আশ্বাস, এত বড় অনুষ্ঠানের পর সাফসুতরো করতে এক দিন লাগে। ২৯ অক্টোবরের মধ্যে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।