ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজ়ো। ছবি: সমাজমাধ্যম।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের প্রথম ম্যাচে ভুটানের লিগ জয়ী পারো এফসি-র বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে ড্র করেছে ইস্টবেঙ্গল। টানা আট ম্যাচ হারের পর এই এক পয়েন্ট গোটা দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। মঙ্গলবার বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে মরণবাঁচন ম্যাচে তাই কোনও ভুল করতে রাজি নয় লাল-হলুদ। পুরো তিন পয়েন্ট তুলে নিতে চাইছে তারা।
প্রথম ম্যাচের পরেই কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার অঙ্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। চ্যালেঞ্জ লিগে পাঁচটি গ্রুপের শীর্ষ স্থানাধিকারী দল সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে। তিনটি সেরা দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দলও কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে। মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল জিততে পারলে কোয়ার্টার ফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে। কারণ গ্রুপের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ নেজমেহ এফসি সবচেয়ে শক্তিশালী দল।
বসুন্ধরা ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজ়োর কাছেও সম্মানের। গত ছ’বছর এই দলের কোচ ছিলেন তিনি। জিতিয়েছেন পাঁচটি ঘরোয়া লিগ। দলের নাড়িনক্ষত্র জানেন। তাতে অবশ্য বাড়তি কোনও সুবিধা পাবেন বলে মনে করেন না ব্রুজ়ো। ম্যাচের আগের দিন বলেছেন, “গত ছ’বছর ধরে কী হয়েছে সেটা আমি জানি। তবে এখনকার পরিস্থিতি আমার অজানা। ওদের আগের ম্যাচটা দেখেছি। যা যা তথ্য রাখা দরকার সেটা জোগাড় করেছি। গত মরসুমের থেকে ওরা অনেক বদলে গিয়েছে। বিপক্ষের উপর নজর দেওয়ার থেকে নিজেদের দিকে বেশি নজর দিচ্ছি।”
এই ম্যাচ নিয়ে কোনও আবেগও নেই ব্রুজ়োর। কঠোর পেশাদারের মতোই তিনি বাস্তবের মাটিতে পা রাখছেন। পুরনো দলকে নিয়ে মাথাব্যথা নেই তাঁর। বলেছেন, “মাঠের বাইরে আবেগ থাকতে পারে। সমর্থকদের মধ্যে আবেগ থাকতে পারে। কিন্তু ফুটবল মাঠে আবেগের কোনও জায়গা নেই। আপাতত আমাদের ফোকাস শুধু ম্যাচেই। কাল কী করতে হবে সেটা সবাই জানি। ম্যাচের পর আবেগ দেখানোর জায়গা রয়েছে। বসুন্ধরায় গত ছ’বছর খুব ভাল সময় কাটিয়েছি। পাঁচটা লিগ জিতেছি। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাতেও খেলেছি। ওই দলে আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। তবে এখন আবেগ দেখানোর সময় নয়। শুধু জেতার কথাই ভাবছি।”
এ দিন অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের শারীরিক ফিটনেস বাড়ানোর দিকে বেশি নজর দিতে দেখা গেল তাঁকে। উচ্চতা যাতে কোনও সমস্যায় না ফেলে তাঁর চেষ্টাই করলেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে অনুশীলন রাখা হয়েছিল যাতে থিম্পুর ঠান্ডার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যায়। ইস্টবেঙ্গলকে মঙ্গলবার খেলতে হবে রাত ৮.৩০ (স্থানীয় সময় ৯টা) থেকে। ব্রুজ়ো বলেছেন, “পরের পর্বে যাওয়ার জন্য তৈরি। দলের প্রত্যেকে পরিস্থিতির কথা জানে। রোজ আমরা এ নিয়ে আলোচনা করছি। খেলোয়াড়দের চাঙ্গা করার চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে আগের ম্যাচের উপর নির্ভর করছে আমাদের ভাগ্য। সেখানে ভাল কিছু হলে আমরা লড়াইয়ে থাকব।”
মোহনবাগানের হয়ে এএফসি কাপে বসুন্ধরার বিরুদ্ধে গত বছর খেলেছিলেন হেক্টর ইয়ুস্তে। এ দিন ব্রুজ়োর পাশে বসে বসুন্ধরা প্রসঙ্গে কোচের সুরেই সুর মেলালেন। বললেন, “গত মরসুমে বসুন্ধরা কঠিন দল ছিল। বিদেশি ও স্থানীয় খেলোয়াড়েরা ভাল। আমরা ১-২ গোলে হেরেছিলাম। ভাল কোচও ছিল। তবে কালকের ম্যাচ পুরোপুরি আলাদা। আমাদের জিততেই হবে। জেতার জন্য সব রকম ভাবে প্রস্তুত হতে হবে।”
(ভ্রম সংশোধন: এই প্রতিবেদনে প্রথমে লেখা হয়েছিল, পারো এফসি-র সঙ্গে আগের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল জিতেছিল। কিন্তু ম্যাচটি ড্র হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।)