মরিয়া: শেষ টেস্টে জবাব দিতে তৈরি হচ্ছেন বিরাট। ফাইল চিত্র
অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক মানসিকতায় দলের কোনও উপকার হবে না বলেই মনে করেন বিরাট কোহালি। অধিনায়কের সেই বার্তা পৌঁছেও গিয়েছে দলের কাছে।
নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে হারের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে কোহালি বলেন, ‘‘কখন আগ্রাসী ব্যাট করব, কখন বিপক্ষ বোলারদের উপরে চাপ তৈরি করতে হবে, এটা বোঝা খুব সূক্ষ্ম ব্যাপার। আমরা অতীতে এই কাজটা অনেক করেছি। কিন্তু এখানে সেটা পারিনি।’’
ওয়েলিংটনে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮১ বল খেলে ১১ রান করেন চেতেশ্বর পুজারা। হনুমা বিহারীর ১৫ রান আসে ৭৯ বলে। একটা সময় ২৮ বল খেলে কোনও রান করতে পারেননি পুজারা। যার পরে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে গিয়ে আউট হয়ে যান মায়াঙ্ক আগরওয়াল। কেন ভারত আগ্রাসী ব্যাট করতে পারল না? কোহালি বলেছেন, ‘‘তার কারণ দুটো। এক, নিউজ়িল্যান্ডের ভাল বোলিং। ওরা ঠিক জায়গায় বলটা রেখে যাচ্ছিল। দুই, ব্যাটিংয়ে কোনও ছন্দ পাইনি আমরা। যখন দরকার ছিল ছন্দটা তৈরি করার, তখনই আমরা ব্যর্থ হয়েছি। নিউজ়িল্যান্ড বোলারদের টানা ভাল বল করে যেতে দিয়েছি। ওদের ছন্দ নষ্ট করতে কিছু করিনি।’’ কোহালি অবশ্য এটা বলে দিয়েছেন, ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট জেতার জন্যই ঝাঁপাবে তাঁর দল।
প্রথম ইনিংসে নিউজ়িল্যান্ড পেসাররা পিচ থেকে কিছুটা সাহায্য পেয়েছিলেন বলে মনে করেন কোহালি। ভারত অধিনায়কের কথায়, ‘‘প্রথম ইনিংসে উইকেটে বোলারদের জন্য কিছু ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ওরা ভাল জায়গায় বলটা রেখে গিয়েছে। ঠিক জায়গায় ফিল্ডারও রেখেছে। যেটা করা উচিত নয়, সেটা করতে ওরা ব্যাটসম্যানদের বাধ্য করেছে।’’
একটা ব্যাপারে কোহালি নিজের বক্তব্য পরিষ্কার করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ব্যাটিংয়ে আমরা যে মানসিকতা দেখিয়েছি, সেটা ঠিক করতে হবে। কারণ অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে পড়লে আর হয়তো স্ট্রোক খেলাই যাবে না।’’ শুধু রক্ষণাত্মক থাকাই নয়, ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা খুচরো রানও নেননি। যেটা মানতে পারছেন না ভারত অধিনায়ক। তিনি বলছেন, ‘‘যদি সিঙ্গল রানও বন্ধ হয়ে যায়, তখন মনে হবে, এ বার তা হলে কী হবে? তখন কিন্তু আপনি স্রেফ একটা ভাল বলের অপেক্ষায় থাকবেন। যে বলটা এসে উইকেট নিয়ে চলে যাবে।’’
কোহালি নিজে সব সময় আক্রমণটা বিপক্ষ শিবিরে নিয়ে গিয়েছেন। তিনি বলে দিচ্ছেন, ‘‘সবুজ উইকেটে ব্যাট করতে নামার সময় আমার একটা লক্ষ্য থাকে। সেটা হল, বোলারদের পাল্টা আক্রমণ করা। যাতে দলকে সামনে নিয়ে যেতে পারি। আর যদি সেটা করতে না পারি, তা হলে অন্তত নিজেকে বলা যায়, আমার ভাবনাটা ঠিক ছিল, কিন্তু কাজে লাগাতে পারলাম না। কী আর করা যাবে। এটা মেনে নিতে কোনও ক্ষতি নেই।’’ ক্ষতিটা কোথায়, তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে কোহালির পরের কথায়— ‘‘কিন্তু আমি মনে করি না, অতি সতর্কতা অবলম্বন করলে কোনও লাভ হয়। বিশেষ করে বিদেশের মাঠে।’’
কোহালি আবারও জোর দিচ্ছেন মানসিকতার উপরে। অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘আমরা যদি পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত ভাবি, তা হলে ব্যাটিংয়ের উপরে ফোকাস নষ্ট হয়ে যায়। বিদেশে খেলার সময় ব্যাপারটা অনেকটাই মানসিক হয়ে দাঁড়ায়।’’ তিনি এও বলেন, ‘‘আমরা মাঝে মাঝে টেকনিক্যাল ব্যাপার নিয়ে বেশি মাথা ঘামাই। কিন্তু আপনার মাথাটা যদি পরিষ্কার থাকে, তা হলে যে কোনও পরিবেশই সহজ লাগবে।’’