স্বপ্ন দেখার সাহসটা ছিল বলেই মৃত্যুকে হারিয়েছেন দীপা

শিরদাঁড়ায় টিউমার। রাজস্থানের ২৬ বছর বয়সি উঠতি ক্রিকেটারকে বলা হয়েছিল তাঁর সামনে দুটো পথ খোলা। প্রতিবন্ধী জীবন অথবা মৃত্যু। হার মানেননি তিনি। অসম্ভব কঠিন পথ চলার সেই শুরু। প্রায় দু’দশক পরে তিনিই দেশের প্রথম প্যারালিম্পিক্স পদকজয়ী মেয়ে অ্যাথলিট।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১২
Share:

রিওয় রুপো জিতে। ছবি: পিটিআই

শিরদাঁড়ায় টিউমার। রাজস্থানের ২৬ বছর বয়সি উঠতি ক্রিকেটারকে বলা হয়েছিল তাঁর সামনে দুটো পথ খোলা। প্রতিবন্ধী জীবন অথবা মৃত্যু। হার মানেননি তিনি। অসম্ভব কঠিন পথ চলার সেই শুরু। প্রায় দু’দশক পরে তিনিই দেশের প্রথম প্যারালিম্পিক্স পদকজয়ী মেয়ে অ্যাথলিট। রিও রওনা হওয়ার আগেই যিনি বলেছিলেন পদক জিতে ফিরবেন। তিনি— দীপা মালিক।

Advertisement

প্রতিবন্ধকতাকে জয় করার এত আত্মবিশ্বাস কী করে পেলেন? সোমবার শটপাটে প্যারালিম্পিক্সে রুপোজয়ী ভারতীয় মেয়ে অ্যাথলিট বললেন, ‘‘স্বপ্ন দেখার সাহসটা ছিল। স্বপ্নটাকে আঁকড়ে সেটাকে সার্থক করার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করার মানসিক দৃঢ়তা ছিল। মেয়েরা অনেক সময়ই এগুলো হারিয়ে ফেলে। আমি কিন্তু এটাও নিশ্চিত করেছি, আমার পরিবার যেন কোনও ভাবেই অবহেলিত না হয়। আমার সন্তানরাও আজ তাই ঠিক পথেই এগোচ্ছে।’’

সেনা অফিসারের স্ত্রী, দুই কন্যার মা দীপার ৩১ বার অস্ত্রোপচারে ১৮৩টা সেলাই হয়েছে কোমর থেকে পা পর্যন্ত। ৪৫ বছর বয়সি দীপা সে সব বাধা পেরিয়ে দেশকে পদক দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত। ‘‘এই পদকটা জিতে ভীষণ ভীষণ খুশি। দেশের জন্য এটা করতে পেরে আরও ভাল লাগছে। আমার কোচ, ট্রেনাররা, সাইকে ধন্যবাদ দেব। ধন্যবাদ ক্রীড়ামন্ত্রককেও এত সুন্দর ভাবে আমার ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।’’ দীপা আরও যোগ করেন, ‘‘আমার স্বামীকেও ধন্যবাদ দেব। আমার স্কিল ট্রেনার হিসেবে তিনি পাশে ছিলেন। আর সঙ্গে আমার মেয়েদের। আমায় উৎসাহ ও শক্তি জোগানোর জন্য। দেশে ফেরার আর তর সইছে না।’’

Advertisement

দীপা প্রতিবন্ধী সাঁতারু হিসেবে জাতীয় আর আন্তর্জাতিক স্তরে প্রচুর পুরস্কার জিতেছেন। সাত বছর আগে সাঁতার থেকে অ্যাথলেটিক্সে চলে আসেন। শুধু তাই নয়। আরও কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়েছেন অনবরত। তা সে দেশের প্রথম প্রতিবন্ধী মেয়ে বাইকার হোক বা মোটর রেস ড্রাইভার। নিজেই বললেন সে কথা। ‘‘আমি দেশের প্রথম বাইক চালক, প্রথম সাঁতারু, প্রথম র‌্যালি ড্রাইভার। এ বার প্রথম মেয়ে প্যারালিম্পিয়ান পদকজয়ী। এটা বিরাট ব্যাপার আমার কাছে। এই পুরস্কার আমার মেয়েদের, স্বামীর, আমার ট্রেনার, আমার দেশের। কতটা উত্তেজিত আমি বলে বোঝাতে পারব না।’’

২০০৯ সালে হিমালয়ের পথে মোটর র‌্যালিতে নেমেছিলেন দীপা। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু আর অন্যতম কঠিন এই র‌্যালিতে নামা তিনিই প্রথম প্রতিবন্ধী মেয়ে ড্রাইভার।

তাতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। দু’দশক ধরে যে অসম্ভব পথ চলছেন দীপা, তার সামনে এই চ্যালেঞ্জও যেন তুচ্ছ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement