হতাশ মিতালির টুইট, জীবনের অন্ধকারতম দিন

কোচ রমেশ পওয়ারের আনা সাংঘাতিক সব অভিযোগের জবাবে মিতালি এ দিন বলেছেন, এটা তাঁর জবীনের অন্ধকারতম মুহূর্ত। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে মিতালি লেখেন, ‘‘আমাকে নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ করা হয়েছে, তা দেখে আমি মর্মাহত। কুড়ি বছর ধরে দেশের হয়ে খেলছি। আমার দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হতে পারে, কখনও ভাবিনি।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:২৯
Share:

মিতালি রাজকে নিয়ে বিতর্ক থামার লক্ষণ নেই। বরং তা আরও বেড়ে চলেছে।

Advertisement

কোচ রমেশ পওয়ারের আনা সাংঘাতিক সব অভিযোগের জবাবে মিতালি এ দিন বলেছেন, এটা তাঁর জবীনের অন্ধকারতম মুহূর্ত। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে মিতালি লেখেন, ‘‘আমাকে নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ করা হয়েছে, তা দেখে আমি মর্মাহত। কুড়ি বছর ধরে দেশের হয়ে খেলছি। আমার দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হতে পারে, কখনও ভাবিনি।’’

মিতালি-বিতর্কে এখন কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছেন ভারতের হয়ে এক সময় খেলা মুম্বইয়ের অফস্পিনার রমেশ পওয়ার। তাঁর সঙ্গেই মূলত সংঘাত লাগে মিতালির। প্রথমে মিতালি অভিযোগ করেছিলেন যে, তাঁর কেরিয়ারকে শেষ করে দেওয়ার জন্য মাঠে নেমে পড়েছেন সিওএ সদস্য ডায়ানা এডুলজি এবং কোচ পওয়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিশ্বকাপ চলাকালীন পওয়ার তাঁকে অপমান করেছেন বলেও বোর্ডের কাছে জানান মিতালি।

Advertisement

এর পরেই পাল্টা পত্রবোমায় মিতালিকে এক হাত নেন পওয়ার। সেখানে এমন অভিযোগও তিনি করেন যে, মিতালি মোটেও আদর্শ টিমম্যান নন। টিম মিটিংয়ে তাঁর কাছ থেকে সে রকম কোনও উপদেশ পাওয়া যেত না। মিতালি নাকি নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকতে ভালবাসতেন। নিজের রেকর্ডের জন্যই খেলতেন, দলের জন্য নয়।

আরও পড়ুন: মিতালির সঙ্গে সম্পর্ক ভাল ছিল না, মেনেই নিলেন পওয়ার​

এই সব সাংঘাতিক অভিযোগ তিনি করেননি বলে আবার বুধবার রাতের দিকে একটি টুইট করেন পওয়ার। কিন্তু সেটা যে মোটেও সত্যি নয়, তা জানাজানি হতে দেরি হয়নি। ঘটনা হচ্ছে, মিতালিকে নিয়ে এই ধরনের নানা অভিযোগ করেই তিনি বোর্ডের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তার পরেই এ দিন ফের টুইটারে মন্তব্য করেছেন মিতালি। লিখেছেন, ‘‘আমার যাবতীয় পরিশ্রম, ঘাম ঝরানো যেন বৃথা। আমার দেশাত্ববোধ নিয়েই সংশয় তুলে দেওয়া হচ্ছে। আমার ক্রিকেটীয় স্কিল নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। শুধু কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। আমার জীবনের অন্ধকারতম দিন। ঈশ্বর যেন আমাকে সব কিছু সহ্য করার শক্তি দেন!’’

পওয়ার ক্রিকেটীয় কারণ হিসেবে মিতালির স্ট্রাইক রেটের কথা বলেছেন। সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকে যাচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সব চেয়ে ভাল গড় ছিল মিতালিরই। তিন ম্যাচ খেলে তিনি করেছিলেন ১০৭ রান। গড় ৫৩.৫০। স্ট্রাইক রেট মোটেও খারাপ কিছু নয়— ১০৩.৮৮।

তাঁর পাশাপাশি অন্যদের রাখলে খুব খারাপ বলার উপায় নেই। অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌরের মোট রান পাঁচ ম্যাচে ১৮৩। গড় ৪৫.৭৫, স্ট্রাইক রেট ১৬০.৫২। স্মৃতি মন্ধানার মোট রান পাঁচ ম্যাচে ১৭৮। গড় ৩৫.৬০, স্ট্রাইক রেট ১২৫.৩৫। জেমাইমা রদ্রিগেজের সংগ্রহ পাঁচ ম্যাচে ১২৫ রান। গড় ২৫, স্ট্রাইক রেট ১১১.৬০। এই সব পরিসংখ্যান ঘেঁটে বোর্ডের একাংশের মনে হচ্ছে, পওয়ার ঠিক কথা বলছেন কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে মিতালি করেছিলেন ৪৭ বলে ৫৬। অন্য ওপেনার স্মৃতি মন্ধানা করেছিলেন ২৮ বলে ২৬। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে মিতালি করেছিলেন ৫৬ বলে ৫১। অন্য ওপেনার স্মৃতি করেছিলেন ২৯ বলে ৩৩। যেখানে দলের রানও খুব বেশি উঠছে না, সেখানে মিতালির এই স্কোরকে মন্থর ব্যাটিং বা ব্যর্থতা বলা যায় কি না, সেই প্রশ্নও উঠে পড়ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement