পাক প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইলেন নির্বাসিত লেগস্পিনার। ফাইল চিত্র।
আমি ভাল নেই। এ ভাবেই নিজের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও পাক ক্রিকেট প্রশাসকদের সাহায্য চাইলেন নির্বাসিত পাক ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া।
ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্লাব এসেক্সের হয়ে খেলার সময়ে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে দানিশকে নির্বাসিত করে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তার পরে অনেকের কাছেই সাহায্যের আবেদন করেন কানেরিয়া। কিন্তু, প্রাক্তন এই স্পিনারের আবেদনে কেউই কর্ণপাত করেননি। বাধ্য হয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছেন কানেরিয়া। তিনি বলেছেন, ‘‘ইমরান খান-সহ পাকিস্তানের সমস্ত কিংবদন্তি ক্রিকেটার, ক্রিকেট প্রশাসকদের কাছে আবেদন করছি। আমি খুব কষ্টে আছি। আমাকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করুন। পাকিস্তানের অসংখ্য মানুষের কাছে আমি সাহায্য চেয়েছি। কিন্তু কোনও সাহায্য পাইনি। ক্রিকেটার হিসেবে পাকিস্তানের হয়ে আমি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি। এর জন্য আমি গর্বিত। এই সময়ে আমার সাহায্যের দরকার। আমি আশাবাদী পাকিস্তানের মানুষ আমার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন।’’
‘কষ্টে আছি’ বলে কানেরিয়া ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট না হলেও অনেকের মতে, ম্যাচ গড়াপেটা পরবর্তী অবস্থার কথাই বুঝিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের একাধিক ক্রিকেটারের ‘সমস্যার সমাধান’ হয়েছে, এ কথাও বলেছেন তিনি। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ‘সমস্যা’ বলতে ম্যাচ গড়াপেটাকেই ইঙ্গিত করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: হিন্দু হওয়ায় দলে ব্রাত্য ছিল কানেরিয়া, অভিযোগ শোয়েবের
এক সময়ের সতীর্থ কানেরিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে বোমা ফাটান প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতার। ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ দাবি করেছেন, পাকিস্তান ক্রিকেট দলে বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়ার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। কারণ দানিশের ধর্ম হিন্দু। তাই দলে ও ছিল ব্রাত্য। অনেকে কানেরিয়ার সঙ্গে বসে খেতে পর্যন্ত চাইত না।
শোয়েবের এই অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাক্তন সতীর্থের এই বিস্ফোরণের পরে কানেরিয়া বলেছেন, ‘‘আমি টেলিভিশনে কিংবদন্তি শোয়েব আখতারের সাক্ষাৎকার শুনেছি। বিশ্বের সামনে সত্যিটা তুলে ধরার জন্য আমি শোয়েবকে ব্যক্তিগত ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যে সব বিখ্যাত ক্রিকেটার আমাকে সাহায্য করেছেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ জানাই।’’
৩৯ বছরের কানেরিয়া পাকিস্তানের হয়ে ৬১টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। অনিল দলপতের পরে দ্বিতীয় হিন্দু ক্রিকেটার হিসেবে তিনি পাকিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ২৬১টি উইকেটের মালিক কানেরিয়া আগে বলেছিলেন, সত্যিটা তুলে ধরার সাহস নেই তাঁর। কিন্তু এ দিন বলেন, শোয়েবের সাক্ষাৎকার বুকে বল জোগাচ্ছে। ক্রিকেটার হিসেবে দেশের হয়ে ঘাম ঝরানোর সময়ে যাঁরা তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন, তাঁদের মুখোশ খুলে দেবেন বলে স্থির করেছেন কানেরিয়া।
খেলোয়াড় জীবনে বিপক্ষকে মাটি ধরানোর জন্য পাকিস্তান নির্ভর করে থাকত শোয়েব আখতারের উপরে। বল হাতে গতির ঝড় তুলতেন তিনি। টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ঝড় তুলে দিয়ে শোয়েব সাহস জোগালেন কানেরিয়ার বুকে।