বাড়ছে কানেরিয়া-বিতর্ক

‘অন্যদের মতো টাকার জন্য তো দেশকে বেচিনি’

ধর্মীয় কারণে পাকিস্তান জাতীয় দলে ব্রাত্য ছিলেন লেগস্পিনার দানিশ কানেরিয়া। গত সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলে প্রথম এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

বিপন্ন: তিিন পিসিবি-র চক্রান্তের শিকার, দাবি দানিশের। টুইটার

ফের পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন দানিশ কানেরিয়া। রবিবার আক্রমণের সুর আরও এক ধাপ চড়িয়ে এই লেগস্পিনার বলে দিলেন, ‘‘পাকিস্তান এমন কিছু ক্রিকেটারকে স্বাগত জানিয়ে ফিরিয়েছে, যারা তাদের দেশকে বেচে দিয়েছিল। আমি কিন্তু সেই অপরাধ করিনি। অথচ আমার নির্বাসন তোলার জন্য পাক ক্রিকেট বোর্ডের অনেক কর্তার কাছে গিয়েছি। কিন্তু কেউ কিছু করেনি।’’

Advertisement

ধর্মীয় কারণে পাকিস্তান জাতীয় দলে ব্রাত্য ছিলেন লেগস্পিনার দানিশ কানেরিয়া। গত সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলে প্রথম এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতার। যে মন্তব্য ঠিক বলে জানান কানেরিয়া স্বয়ং। তার পর থেকে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে আজীবন নির্বাসিত এই পাক ক্রিকেটারকে থামানোই যাচ্ছে না।

এ দিন আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে কানেরিয়া বলেন, ‘‘গত ১০ বছর ধরে আমি উপার্জনহীন। টিভি চ্যানেলে আমাকে ডাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অতীতে টিভিতে যে অনুষ্ঠান করেছি, তার বকেয়া অর্থও দেওয়া হয় না। আমার সংসার রয়েছে। আপনারা তো হাতটাই কেটে দিয়েছেন। এর পরে কি চান নিজেকে শেষ করে দিই?’’

Advertisement

দিন কয়েক আগেই প্রাক্তন পাক অধিনায়ক জাভেদ মিয়াঁদাদ বলেছিলেন, কানেরিয়া টাকা পেলে যা খুশি বলতে পারেন। এ দিন ইউটিউবে তাঁর নাম না করেই কানেরিয়া বলেন, ‘‘অনেকে বলছেন, আমার ইউটিউব চ্যানেলের প্রচারের জন্য সস্তা পদ্ধতি নিয়েছি। তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আমার প্রতি বৈষম্যের এই বিষয়টি আমি নিজে উত্থাপন করিনি। শোয়েব আখতার জাতীয় টেলিভিশনে প্রথম এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলে।’’

আরও পড়ুন: কয়েক জনের হাত থেকে ওকে বাঁচাই, দাবি শোয়েবের

এর পরেই কারও নাম না করে কানেরিয়া আরও বলেন, ‘‘পাকিস্তানে এ রকম অনেক খেলোয়াড় রয়েছে, যারা ম্যাচ গড়াপেটা করেছে। অথচ তাদের সম্মান দিয়ে দলে ফেরানো হয়েছে। পাকিস্তানের জন্য দশ বছর মাঠে রক্ত ঝরিয়েছি। টেস্ট ম্যাচে দিনে ৩০-৪০ ওভার বোলিং করে আঙুল রক্তাক্ত হলেও চোট-আঘাতের অজুহাত দিয়ে কোনওদিন মাঠ ছেড়ে পালাইনি। স্পট ফিক্সিং করে ভুল করেছিলাম। যারা টাকার জন্য দেশকে বেচে দিয়েছিল ক্রিকেট মাঠে, তাদের পাকিস্তান জাতীয় দল বা ক্রিকেট বোর্ডে সসম্মানে ফেরানো হয়েছে। কাউকে টিভি চ্যানেলে বিশেষজ্ঞও করা হয়েছে।’’ আরও বলেন, ‘‘যে ব্যক্তির জন্য স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে ফেঁসেছিলাম, সেই ব্যক্তিকে আমি চিনতাম না। ওই ব্যক্তি পাকিস্তানে আসতেন পাক বোর্ডের সরকারি আমন্ত্রণে। আমাকে ওই ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’

পাকিস্তানের হয়ে ৬১ টেস্টে ২৬১টি উইকেট পাওয়া লেগস্পিনার বলেন, ‘‘এসেক্সের হয়ে তিন ধরনের ক্রিকেট চুটিয়ে খেলেছি। পাকিস্তান আমাকে টেস্ট বোলার বানিয়ে দিল। আপনারা আমার আত্মীয় ও পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু ক্রিকেটার অনিল দলপতের কথা বলছেন। ওঁকে জিজ্ঞাসা করুন, কেন ক্রিকেট জীবন দীর্ঘ হয়নি?’’ পাকিস্তানের হয়ে ন’টি টেস্ট ও ১৫টি ওয়ান ডে ম্যাচ খেলা দলপত ২০০২ সালে অভিযোগ করেছিলেন, বিশ্বজয়ী পাক অধিনায়ক ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জন্যই ক্রিকেট জীবন সংক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement