অস্ত্র: রিয়াল কাশ্মীরের মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা দানিশ। ফাইল চিত্র
চব্বিশ ঘণ্টা আগেই এফসি গোয়ার সঙ্গে ড্র করে ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে উঠেছে রিয়াল কাশ্মীর। ২১ অগস্ট যুবভারতীতে প্রতিপক্ষ এ বার মোহনবাগান। শনিবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর থেকেই সেমিফাইনালের জন্য মানসিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন দানিশ ফারুখেরা।
রবিবার মধ্যাহ্নভোজ সেরেই কল্যাণী থেকে সল্টলেকের উদ্দেশে রওনা দেয় রিয়াল কাশ্মীর। বিকেলে টিম হোটেলে পৌঁছে দলের মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা দানিশ বললেন, ‘‘মোহনবাগান দারুণ শক্তিশালী দল। আমাদের মতো ওদের এখন প্রাক্-মরসুম প্রস্তুতি শেষ হয়নি। ফলে মোহনবাগান সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা নেই। এই মুহূর্তে আমাদের প্রধান লক্ষ্য, ম্যাচটা জেতার জন্য সব রকম ভাবে নিজেদের তৈরি রাখা।’’ ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে গত মরসুমে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে গোল করে দানিশই জিতিয়েছিলেন রিয়াল কাশ্মীরকে। পরের দু’টো ম্যাচে অবশ্য গোল পাননি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ভক্ত। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যাওয়ার উদ্বেগই কি এর জন্য দায়ী? দানিশ বললেন, ‘‘আমি সব ম্যাচের আগেই বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলি। কারণ, বাবাকে দেখেই ফুটবলে এসেছি। এ বারের ডুরান্ড কাপেই তার ব্যতিক্রম হল। এই পরিস্থিতিতে মনঃসংযোগ করা খুবই কঠিন পড়েছিল। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। দলের অন্যতম কর্ণধার সন্দীপ স্যর পরিবারের সদস্যদের কাছে আমাদের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। কিন্তু বাবা-মায়ের গলা শুনতে না পারার যন্ত্রণা তাতেও দূর হয়নি।’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘তবে গোল না পাওয়া নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। দলের জয়টাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’’
দানিশ কৃতজ্ঞ কোচ ডেভিড রবার্টসনের কাছেও। বললেন, ‘‘কোচ বারবার বলছেন, বাড়ির লোকদের সঙ্গে তোমাদের কথা বলতে না পারার যন্ত্রণা অনুভব করছি। এই দলটাও একটা পরিবারের মতো। আমরা সবাই তোমাদের পাশে আছি। তা ছাড়া বারবার বলতেন, চেষ্টা করো সব ভুলে মাঠে নেমে নিজেদের উজাড় করে দিতে। পেশাদার ফুটবলারদের এটাই কাজ। আমরাও সেই চেষ্টা করেছি।’’
রিয়াল কাশ্মীর তারকা দাবি করলেন, এই মুহূর্তে মনঃসংযোগ করতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। বললেন, ‘‘কাশ্মীরে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে বুঝতে পেরে আমরা এক দিন আগেই কলকাতায় চলে এসেছিলাম। না হলে হয়তো শ্রীনগর ছেড়ে বেরোতেই পারতাম না। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন ছিলাম। ফোন, ইন্টারনেট বন্ধ। কোনও ভাবেই যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। বাড়ির সবাই কেমন আছে, এই চিন্তাই অস্থির করে তুলছিল। ইদের দিনও কথা বলতে পারিনি। অবশেষ দু’দিন আগে বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে মিনিটে পাঁচেক কথা বলতে পেরেছি। আমার কাছে এটাই অনেক। যন্ত্রণা ভুলতেই ডুরান্ড কাপ জিততে চাই।’’