ভারতীয় ক্রিকেট দল। ছবি: এএফপি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের এক সপ্তাহের মধ্যে মাঠে নেমে মুখ থুবড়ে পড়ল ভারতীয় ক্রিকেট দল। বিশ্বজয়ী দলের কোনও সদস্য অবশ্য জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে খেলেননি। তবু সিরিজ়ের প্রথম ম্যাচে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারল না শুভমন গিলের তরুণ দল। জ়িম্বাবোয়ের কাছে ১৩ রানে হারল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে আয়োজকেরা করে ৯ উইকেটে ১১৫ রান। জবাবে শুভমনের দলের ইনিংস ১৯.৫ ওভারে ১০২ রানে শেষ হল।
জয়ের জন্য ১১৬ রান তাড়া করতে নেমেও ব্যাটিং বিপর্যয় ভারতের। এক সপ্তাহ আগে ২০ ওভারের ক্রিকেটে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সাপ্লাই লাইনের দুর্দশা প্রকট করে দিল বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করতে না পারা জ়িম্বাবোয়ে। ব্যাট হাতে হতাশ করলেন দুই অভিষেককারী অভিষেক শর্মা (শূন্য) এবং রিয়ান পরাগ (২)। অসমের প্রথম পুরুষ ক্রিকেটার হিসাবে ভারতীয় দলের হয়ে এ দিন খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন রিয়ান। শুধু অসমই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম পুরুষ ক্রিকেটার হিসাবে জাতীয় দলে খেললেন। ব্যর্থ হলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড় (৭) এবং রিঙ্কু সিংহও (শূন্য)। টেন্ডাই চাতারা, বেনেটদের বোলিংয়ের সামনে হারারের ২২ গজে বেশ অসহায় দেখাল ভারতের উপরের দিকের ব্যাটারদের। পরে ব্যাট করলেও পিচের বাউন্স বুঝে উঠতে পারেননি তাঁরা। ভারতীয়দের দেখে মনে হল একটু বেশিই সহজ ভাবে নিয়ে ফেলেছিলেন প্রতিপক্ষকে। তারই ফল ভুগতে হল।
২২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া দলের ইনিংসের হাল ধরার চেষ্টা করেন শুভমন এবং ধ্রুব জুরেল। পরিস্থিতির চাপে উইকেট বাঁচিয়ে খেলার দিকে নজর দেন তাঁরা। তাতেও লাভ হয়নি। দলকে ভরসা দিতে পারলেন না ধ্রুব জুরেলও (১৪ বলে ৬)। ১০ ওভারের শেষে শুভমনদের রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৪৩। জুরেলের পর পরই সাজঘরে ফিরলেন শুভমনও। সিকন্দর রাজার বলে আউট হওয়ার আগে ভারতীয় দলের অধিনায়ক করলেন ২৯ বলে ৩১ রান। ৫টি চার মারলেন তিনি। শুভমন আউট হওয়ায় ভারতের স্কোর হয় ৪৭/৬। অধিনায়ক আউট হওয়ার পর আর কোনও স্বীকৃত ব্যাটার ছিল না ভারতের। ভরসা ছিলেন কেবল অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর। আবেশ খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে খানিকটা লড়াই চালালেন তিনি। আবেশকে (১৬) আউট করে রাজা আবার ভারতকে চাপে ফেলে দেন। মুকেশ কুমারকেও (শূন্য) আউট করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও পারলেন না ওয়াশিংটন (২৭)। চাতারার বলে তিনি আউট হতেই ১ বল বাকি থাকতে ভারতের ইনিংস শেষ হয় ১০২ রানে। জ়িম্বাবোয়ের সফলতম বোলার চাতারা ১৬ রানে ৩ উইকেট নিলেন। রাজা ৩ উইকেট নিলেন ২৫ রান খরচ করে। বাকিরা ১টি করে উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন শুভমন। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই উইকেট নেন বাংলার মুকেশ। আউট করেন ইনোসেন্ট কাইয়াকে (শূন্য)। এর পর ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারায় জ়িম্বাবোয়ে। রবি বিষ্ণোইয়ের বল খেলতে বেশ সমস্যায় পড়লেন জ়িম্বাবোয়ের ব্যাটারেরা। ১৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন বিশ্বকাপের দলে সুযোগ না পাওয়া লেগ স্পিনার। খুচরো রান নেওয়ার ক্ষেত্রেও জ়িম্বাবোয়ের ব্যাটারদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব দেখা গেল একাধিক বার। তাতেই রান আউট হলেন জোনাথন ক্যাম্পবেল (শূন্য)।
একটাও বড় রানের জুটি তৈরি করতে পারেনি জ়িম্বাবোয়ে। একটা সময় জ়িম্বাবোয়ের রান ছিল ৫ উইকেটে ৮৯। সেখান থেকে ৮ বলের ব্যবধানে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ৯০। শেষ দিকে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ক্লাইভ মাদান্ডের অপরাজিত ২৯ রানের সুবাদে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছায় জ়িম্বাবোয়ে। এ ছাড়া কিছুটা লড়াই করেন ওপেনার ওয়েসলি মাধেবেরা (২২ বলে ২১), তিন নম্বরে নামা ব্রায়ান বেনেট (১৫ বলে ২২) এবং ডিয়ন মেয়ার্স (২২ বলে ২৩)। জ়িম্বাবোয়ের অধিনায়ক রাজার ব্যাট থেকে এসেছে ১৯ বলে ১৭ রানের ইনিংস। ভারতের সফলতম বোলার বিষ্ণোই। এ ছাড়া ওয়াশিংটন ১১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিলেন। ১৬ রানে ১ উইকেট মুকেশের। ২৯ রান খরচ করে ১ উইকেট আবেশের।