শনিবার সিএবি-তে ঋদ্ধিমান। —নিজস্ব চিত্র
আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হল ঋদ্ধিমান সাহার। শনিবার সিএবি-তে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) চাইতে এসেছিলেন ঋদ্ধি। তিনি তা পেয়ে যান। ছিলেন সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া এবং যুগ্ম-সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। শেষ মুহূর্তে বার বার অনুরোধ করার পরেও মন গলেনি ঋদ্ধির। জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সব ‘ডিসাইড’ হয়ে গিয়েছে। তবে কোন রাজ্যের হয়ে খেলবেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা বজায় রাখলেন তিনি।
সোমবার দুপুর একটা নাগাদ সিএবি-তে আসেন ঋদ্ধি। আগে থেকেই দুই কর্তা হাজির ছিলেন। মোট ৩৭ মিনিটের বৈঠক হয়। ঋদ্ধিকে এ দিন আবার বোঝানোর চেষ্টা করা হয় বাংলায় থাকার জন্য। তবে তিনি কোনও কথাই শুনতে চাননি। বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন তিনি। বাধ্য হয়ে তাঁকে এনওসি দিয়ে দেয় সিএবি।
এনওসি পেয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঋদ্ধি বলেছেন, “আমাকে আগে অনুরোধ করা হয়েছিল। আজকেও বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু আগে থেকেই আমার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই আজ এনওসি নিয়েই নিলাম।” কোথায় যাবেন সে প্রসঙ্গে ঋদ্ধি বলেছেন, “এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যখন ১০০ শতাংশ হবে তখন সবাই সরকারি বা বেসরকারি ভাবে ঠিকই জানতে পারবেন। আগে থেকে সরকারি ভাবে কিছু বলতে পারব না। অনেক রাজ্যের সঙ্গেই কথা চলছে। দেখা যাক কী হয়।” বাংলার সঙ্গে ‘ইগোর’ লড়াইয়ে কারণেই কি দল ছাড়লেন? ঋদ্ধির উত্তর, “বাংলার সঙ্গে কোনও দিন আমার কোনও ইগো ছিল না। হয়তো কোনও ব্যক্তির সঙ্গে মতান্তর হয়ে থাকতে পারে, তার জন্যেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাংলার জন্য সব রকম শুভেচ্ছা থাকল। ভবিষ্যতে যদি আমাকে দরকার হয়, পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকে তা হলে সাহায্য করতেই পারি।”
ঋদ্ধি জানিয়েছেন, বাংলা ছাড়া নিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। বলেছেন, “ফোনে কোনও দিনই সে ভাবে আমাদের কথা হয়নি। আগে দু’একবার হয়েছে। তবে বাংলার বিষয়ে কোনও কথা হয়নি। ফোনে যখন সে ভাবে কথাই হয় না, তা হলে এটা নিয়ে আলাদা করে কথা বলতে যাবেন কেন?” সৌরভের সঙ্গে কথা বললে বিষয়টি মিটে যেত? ঋদ্ধির উত্তর, “কী হলে কী হত সেটা এখন ভেবে লাভ নেই। নির্দিষ্ট একটা কারণেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”
বাংলার ক্রিকেটারদের উদ্দেশে ঋদ্ধি বলেছেন, “এ বছর মরসুম শুরুর আগে অনেকের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছিল। আমি চাই, বাংলা আরও ভাল খেলুক। সেমিফাইনাল ম্যাচের আগেও কথা হয়েছে। ওদের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। বাংলা ছেড়ে চলে যাচ্ছি বলে বাংলার কোনও ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে না, তেমনটা নয়। সবার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে, পরেও থাকবে।” কালীঘাট ক্লাবে গিয়ে ইতিমধ্যেই ঋদ্ধিকে দেখা গিয়েছে খুদেদের ক্রিকেট শেখাতে। ভবিষ্যতে তাঁকে কোচের ভূমিকায় দেখতে পাওয়া যাবে? ঋদ্ধির উত্তর, “যদি সিএবি ভাবে তা হলে ভবিষ্যতে দেখা যেতেই পারে।”
সিএবি-র তরফে বলা হয়েছে, সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার কাছে তিনি এনওসি-র আবেদন করেছিলেন। সেটা তাঁকে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছাও জানানো হয়েছে ঋদ্ধিকে।
রঞ্জি না জিতে বাংলা ছাড়ায় কোনও আক্ষেপ থাকছে? ঋদ্ধি বলেছেন, “গত বার ফাইনালে উঠেছিলাম। জিততে পারলে ভাল লাগত। এ বারও বাংলা ভাল খেলেছে, সেমিফাইনালে উঠেছে। সব ভাল দিকেই এগোচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। তবে ট্রফি জিততে পারলাম না। বাংলার হয়ে ট্রফি জিততে না পারার আক্ষেপ সে ভাবে নেই। আমার কাছে যে কোনও ট্রফিই খুব মূল্যবান। সে যাদের হয়েই জিতি না কেন।”