সৌরভের বাড়িতে স্ত্রী রোমির (মাঝে) সঙ্গে ঋদ্ধিমান। ছবি: সংগৃহীত।
দু’বছর আগে, অর্থাৎ ২০২২-এর ২ জুলাই বাংলা ছেড়েছিলেন তিনি। নিজের রাজ্যের ক্রিকেট সংস্থার উপর একরাশ অভিমান করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ত্রিপুরার হয়ে খেলার। সেই অভিমানের পালা শেষ। আবার বাংলায় ফিরলেন ঋদ্ধিমান সাহা। সোমবার স্ত্রী রোমিকে নিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন ঋদ্ধিমান। তার পরেই বাংলায় ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। তবে কোন ভূমিকায় তাঁকে দেখা যাবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
সোমবার দুপুরে সৌরভের বাড়িতে একটি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন ঋদ্ধিমান। সেখানে ছিলেন স্ত্রী রোমিও। ঋদ্ধির ঘনিষ্ঠমহল সূত্রের খবর, রোমি অনেক দিন ধরেই চাইছিলেন, ঋদ্ধি আবার বাংলায় ফিরুন। আরও অনেকে ঋদ্ধিকে ফেরার অনুরোধ করেছিলেন। তাঁদের অনুরোধ মেনে নিয়েই নিজের শহরে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই উইকেটকিপার।
বছর দুয়েক আগে বাংলার ক্রীড়া সংস্থার এক কর্তার কথায় অভিমান হয়েছিল ঋদ্ধির। তিনি ঋদ্ধির দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। যে রাজ্যের হয়ে তিনি নিজের সেরাটা দিয়েছেন, সেখানকার এক কর্তার সেই মন্তব্য ঋদ্ধি মানতে পারেননি। সিদ্ধান্ত নেন যে, বাংলার হয়ে আর খেলবেন না। সিএবি-তে গিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে এসেছিলেন তিনি। সিএবি-র তরফে বার বার তাঁকে থেকে যাওয়ার কথা বলা হলেও ঋদ্ধি থাকতে চাননি। পরে ত্রিপুরা দলে সই করেন।
এনওসি পেয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঋদ্ধি বলেছিলেন, “আমাকে আগে অনুরোধ করা হয়েছিল। আজকেও বার বার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু আগে থেকেই আমার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই আজ এনওসি নিয়েই নিলাম।”
বাংলার সঙ্গে ‘ইগোর’ লড়াইয়ে কারণেই কি দল ছাড়লেন? ঋদ্ধির উত্তর ছিল, “বাংলার সঙ্গে কোনও দিন আমার কোনও ইগো ছিল না। হয়তো কোনও ব্যক্তির সঙ্গে মতান্তর হয়ে থাকতে পারে, তার জন্যেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাংলার জন্য সব রকম শুভেচ্ছা থাকল। ভবিষ্যতে যদি আমাকে দরকার হয়, পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকে, তা হলে সাহায্য করতেই পারি।”
সে বছরই একটি অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে সম্মান নেওয়ার পর বাংলায় ফেরার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন ঋদ্ধি। মঞ্চে সেই নিয়ে মমতার সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। মঞ্চে দেখা গিয়েছিল ঋদ্ধির হাতে মুখ্যমন্ত্রী যখন পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন, সেই সময় ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কিছু বলছিলেন। জানা গিয়েছিল, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলেন, ঋদ্ধি এ বছর বাংলার হয়ে খেলবেন না। মমতা ঋদ্ধির কাছে কারণ জানতে চেয়েছিলেন। তাতে ঋদ্ধি জানিয়েছিলেন যে, তিনি ত্রিপুরার হয়ে খেলবেন। সেই সময় ঋদ্ধিকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ভুলে না যাওয়ার কথা বলেছিলেন। ভারতীয় উইকেটরক্ষক তখন মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, তিনি ত্রিপুরার হয়ে খেললেও সুযোগ পেলে আবার বাংলায় ফিরতে পারেন। সেটাই আবার ঘটল।