উঠে এসেছে প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের নামও। —ফাইল চিত্র
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের মধুচন্দ্রিমা শেষ হতে না হতেই এখন টিম পেন বিতর্কে ডুবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। বছর চারেক আগে যৌন বিতর্কে জড়িয়ে পড়া পেন শুক্রবার অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু নতুন বিতর্কে জড়িয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ডকে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, পেনের এই ঘটনা জানা সত্ত্বেও কেন চুপ করে বসেছিল তারা।
২০১৮ সালে বল বিকৃতি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে নির্বাসিত স্টিভ স্মিথের জায়গায় অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের অধিনায়ক করা হয়েছিল পেনকে। তাঁর উপরে প্রধান দায়িত্ব ছিল অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার। প্রশ্ন উঠছে, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট বোর্ড তখন সব কিছু জেনেও কেন এমন এক জন বিতর্কিত চরিত্রকে অধিনায়ক বানিয়েছিল?
অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, ‘‘নিউল্যান্ডসে বল বিকৃতি কেলেঙ্কারির পরে বোর্ডের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট সংস্কৃতিতে স্থায়ী এবং সত্যিকারের পরিবর্তন আনা হবে। কিন্তু পেনের ঘটনা জনসমক্ষে না এনে ওরা বুঝিয়ে দিয়েছে, বোর্ডের লক্ষ্য ছিল শুধু ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তি ঠিক করার উপরেই।’’ আরও বলা হয়েছে, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই, এই ঘটনার ফলে তীব্র অস্বস্তিতে পড়বে পেন এবং তাঁর পরিবার। কিন্তু ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও নিজেদের লজ্জা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এই ঘটনায়।’’
২০১৭ সালে তাসমানিয়ার ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত এক মহিলা কর্মীকে ফোনে অশ্লীল ছবি পাঠান পেন। তার পরে এই উইকেটকিপারের বিরুদ্ধে তদন্তও হয়। সেই তদন্তের ফলে বলা হয়েছিল, স্মিথের জায়গায় নিশ্চিন্তে পেনকে অস্ট্রলিয়ার অধিনায়ক করা যেতে পারে, কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু অ্যাশেজ সিরিজ় শুরুর তিন সপ্তাহ আগে অস্ট্রেলিয়ার এক সংবাদপত্রে এই ঘটনার কথা ফাঁস হয়ে যায়। যার পরে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন পেন।
অনেক ক্রিকেট কর্তাই অবশ্য এই বিতর্কে পেনের সঙ্গে আছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই মহিলার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ ওঠার পরেই তিনি পেনের ঘটনা নিয়ে অভিযোগ জানান। এই বার্তা আদানপ্রদানের ঘটনা দু’জনের সম্মতিতেই হয়েছিল। ক্রিকেট তাসমানিয়া জানিয়েছে, ওই ঘটনা একবারই ঘটেছিল এবং পরে তার কোনও পুনরাবৃত্তি হয়নি।
পেন সরে দাঁড়ানোয় এ বার পরবর্তী প্রশ্ন উঠে আসছে, তা হলে অ্যাশেজে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব কে দেবেন? সবার আগে উঠে আসছে সহ-অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের নাম। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রেগ চ্যাপেলের ভোটও যাচ্ছে এই পেসারের দিকে। তাঁর কলামে চ্যাপেল লিখেছেন, ‘‘এই বিতর্কের মধ্যে ভাগ্যের ব্যাপার হল, কামিন্সের মধ্যে এক জন অধিনায়ক তৈরি আছে অস্ট্রেলিয়ার। আর পেনের মতোই কামিন্সকে অস্ট্রেলিয়াকে জেতানোর পাশাপাশি তার ভাবমূর্তিও ঠিক করতে হবে।’’
তবে শুধু কামিন্সই নন, হঠাৎ করে উঠে এসেছে প্রাক্তন অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের নামও। জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলীয় নির্বাচকেরা নাকি স্মিথকে নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ডকে। ‘ভার্চুয়াল’ সাংবাদিক বৈঠকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান রিচার্ড ফ্রয়েডেনস্টেইন বলেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের নেতৃত্বের দাবিদার বেশ কয়েক জন আছে। তার মধ্যে এক জন স্টিভ স্মিথ।’’ তবে কেউ কেউ মনে করছেন, স্মিথকে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া
যেতে পারে।