মহম্মদ সিরাজ এবং মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত বল করতে দেখা যায়নি মহম্মদ শামিকে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ে সুযোগ পেয়েই মোহালিতে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন বাংলার পেসার। তাঁকে বসিয়ে রাখা যে কঠিন তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সেই ম্যাচে। কিন্তু মহম্মদ সিরাজকে সরিয়ে জায়গা পাওয়া কঠিন হচ্ছে শামির পক্ষে। আমদাবাদে শনিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কি শামি খেলবেন? মনে করছেন না অনেকেই।
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরাজ ৯ ওভার বল করে ৭৬ রান দেন। প্রথম ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ২৮ রান। দিল্লির পিচ থেকে বোলারেরা সাহায্য পাচ্ছিলেন না। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা সেই পিচেই ৪ উইকেট তুলে নেন। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে সিরাজ একাই শেষ করে দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কাকে। ৬ উইকেট নিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। তখনই নিশ্চিত হয়ে যায় যে বিশ্বকাপে শামির আগে তাঁকে ভাববেন রোহিত শর্মারা। কিন্তু রাহুল দ্রাবিড় এবং রোহিতের চিন্তা বেড়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শামি ৫ উইকেট নেওয়ায়। এ বার বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেই হারানো সিরাজকে কি পাকিস্তান ম্যাচে বাইরে বসতে হতে পারে?
শামি আইপিএলে খেলেন গুজরাত টাইটান্সের হয়ে। সেই দলের ঘরের মাঠ আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। সে দিক দিয়ে আমদাবাদ শামির ঘরের মাঠ। গত বছর গুজরাতকে আইপিএল জিতিয়েছিলেন তিনি এই মাঠে খেলেই। এ বারেও ফাইনাল খেলেছিল গুজরাত। সেই মাঠে শামিকে না খেলানো কি উচিত হবে? শামি এবং সিরাজের সঙ্গে খেলা ইশান্ত শর্মা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানালেন যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় জনের খেলার সম্ভাবনাই বেশি। ইশান্ত বললেন, “আমার মনে হয় না পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের পেস আক্রমণে কোনও বদল হবে। যে দু’জন খেলছেন তাঁদেরই দেখা যাবে বলে মনে হয়।”
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
একই মত ঝুলন গোস্বামীরও। ভারতের মহিলা দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং দীর্ঘ দিন ধরে ভারতীয় দলের পেস আক্রমণ সামলানো বোলার মনে করেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরাজই খেলবেন। ঝুলন আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “একটা ম্যাচে খারাপ খেলার জন্য সিরাজকে বাদ দেওয়া হবে বলে মনে হয় না। তবে শামি খেলবে কি না সেটা পিচ না দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া অসম্ভব। ভারত চেন্নাইয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে খেলিয়েছিল, কিন্তু দিল্লিতে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। আমদাবাদে যদি ভারত তিন পেসার খেলানোর মতো পরিস্থিতি দেখে, তা হলে শার্দূল ঠাকুরের জায়গায় হয়তো শামিকে দেখা যেতে পারে। তবে একটা ম্যাচ খারাপ খেলার জন্য সিরাজকে বসানো হবে বলে মনে হয় না।” এক মত বাংলার বোলিং কোচ শিবশঙ্কর পালের। তিনি বললেন, “শামি ভাল বোলার। এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সিরাজও এক দিনের ক্রিকেটে এক নম্বর। একটা ম্যাচে খারাপ বল করেছে বলে তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত হবে না।”
ভারতের হয়ে প্রথম দু’টি ম্যাচে ভারতের পেস আক্রমণ সামলেছেন বুমরা এবং সিরাজ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেই সঙ্গে ছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে যোগ হয়েছিলেন শার্দূলও। আমদাবাদের পিচ দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঝুলন। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে তিন ধরনের পিচ রয়েছে। একটি কালো মাটির, একটি লাল মাটির, অন্যটি দুই ধরনের মাটি মিশিয়ে। কালো মাটির পিচে বাউন্স বেশি থাকে। তাতে পেসাররা যেমন সুবিধা পাবেন, তেমন ব্যাটারদের স্ট্রোক খেলতেও সুবিধা হবে। লাল মাটির পিচ তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। সেখানে স্পিনারদের দাপট বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে পেসারেরা স্লোয়ার দিয়ে সমস্যায় ফেলতে পারেন ব্যাটারদের। তৃতীয় পিচে বাউন্স যেমন থাকে, তেমন স্পিনারেরা সুবিধা পান শেষের দিকে। যদিও আমদাবাদে শিশির পড়ছে, তাই পরের দিকে বল করবে যে দল, তাদের সমস্যা হতে পারে। শনিবার কোন পিচে খেলা হবে তা এখনই জানা সম্ভব নয়। সেটার পর ঠিক হবে ভারতের প্রথম একাদশে কারা খেলবেন?