গত বারের দুই অধিনায়ক বিরাট এবং রুট। —ফাইল চিত্র
৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ থেকে ১ জুলাই, ২০২২। মাঝে ২৯৭ দিন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের চতুর্থ ও পঞ্চম টেস্টের মধ্যে এত দিনেরই পার্থক্য। ক্রিকেটের ইতিহাসে দীর্ঘতম টেস্ট সিরিজের শেষ টেস্ট খেলতে ১ জুলাই বার্মিংহ্যামে নামছে ভারত। এই দুই টেস্টের মধ্যে বদলে গিয়েছে অনেক কিছু। অধিনায়ক, কোচ, দল।
চতুর্থ টেস্টে ওভালে ভারত যখন খেলতে নেমেছিল তখন দলের অধিনায়ক ছিলেন বিরাট কোহলী। কোচ রবি শাস্ত্রী। পরের ২৯৭ দিনে ভারতীয় দলের অন্দরে অনেক বদল হয়েছে। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পরে টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন কোহলী। কিছু দিন পরে তাঁকে এক দিনের দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, জয় শাহদের বোর্ড। ২০২২ সালের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের পরে ভারতের লাল বলের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দিয়েছেন কোহলী। ভারতের তিন ফরম্যাটেই নতুন অধিনায়ক হয়েছেন রোহিত শর্মা। চাকরি গিয়েছে কোচ রবি শাস্ত্রীর। ভারতের নতুন কোচ হয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়।
শুধু ভারত নয়, এই ২৯৭ দিনে বদলে গিয়েছে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ও কোচ। টেস্টে ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন জো রুট। নতুন অধিনায়ক হয়েছেন বেন স্টোকস। চাকরি গিয়েছে ইংল্যান্ডের কোচ ক্রিস সিলভারউডের। নতুন কোচ নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার ব্রেন্ডন ম্যাকালাম।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এই ২৯৭ দিনে দু’টি দেশের দলেও বেশ কয়েকটি পরিবর্তন হয়েছে। ২০২১ সালে ভারতের ২৪ সদস্যের দল গিয়েছিল ইংল্যান্ড। করোনা সংক্রমণের কারণে দরকার পড়লেই যাতে পরিবর্ত ক্রিকেটার পাওয়া যায় তার জন্য অনেক বেশি ক্রিকেটারকে দলে রাখা হয়েছিল। ওভালে চতুর্থ টেস্টে ভারতীয় দল ছিল এই রকম- বিরাট কোহলী (অধিনায়ক), রোহিত শর্মা, চেতেশ্বর পুজারা, ঋষভ পন্থ, অজিঙ্ক রহাণে, রবীন্দ্র জাডেজা, শার্দূল ঠাকুর, উমেশ যাদব, যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ সিরাজ। এ ছাড়া ময়ঙ্ক অগ্রবাল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অভিমন্যু ঈশ্বরণ, মহম্মদ শামি, ঋদ্ধিমান সাহা, ঈশান্ত শর্মা, পৃথ্বী শ, হনুমা বিহারি, সূর্যকুমার যাদব, আবেশ খান, শুভমন গিল ও ওয়াশিংটন সুন্দর ছিলেন ২৪ জনের দলে।
১ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা টেস্ট খেলতে ইংল্যান্ডে গিয়েছে ১৬ সদস্যের দল। পুরনো দলের ১৩জন সদস্য এই দলে রয়েছেন। তাঁরা হলেন, রোহিত (অধিনায়ক), কোহলী, শুভমন, পুজারা, বিহারি, জাডেজা, অশ্বিন, পন্থ, শার্দূল, শামি, বুমরা, সিরাজ ও উমেশ। পুরনো দলের ১১ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তার বদলে দলে তিন জন নতুন ক্রিকেটার এসেছেন। তাঁরা হলেন শ্রেয়স আয়ার, শ্রীকর ভরত ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ইংল্যান্ড দলেও অনেক বদল হয়েছে। ২০২১ সালে যে দল খেলেছিল তাতে ছিলেন, ররি বার্নস, হাসিব হামিদ, দাউইদ মালান, জো রুট (অধিনায়ক), ক্রেগ ওভার্টন, ওলি পোপ, জনি বেয়ারস্টো, মইন আলি, ক্রিস ওকস, ওলি রবিনসন ও জেমস অ্যান্ডারসন। ইংল্যান্ডের এখনকার অধিনায়ক স্টোকসই ছিলেন না সেই দলে। পঞ্চম টেস্টে বার্নস, হামিদ, মালান, মইন, রবিনসন দলে নেই।
ভারত শেষ টেস্ট খেলেছে চলতি বছর মার্চ মাসে। শ্রীলঙ্কাকে দুই টেস্টের সিরিজে ২-০ হারিয়েছে তারা। তার পরে আইপিএল খেলে ফের লাল বলের ক্রিকেটে নামছে তারা। অন্য দিকে স্টোকস দলের অধিনায়ক হওয়ার পরে খেলার ধরন বদলে গিয়েছে ইংল্যান্ডের। নিউজিল্যান্ডকে পর পর দুই টেস্টে হারিয়ে সিরিজ জিতেছে তারা। তৃতীয় টেস্ট চলছে। ২৯৭ দিনে ইংল্যান্ডের ফর্ম অনেক ভাল হয়েছে। ভারতীয় কোচ দ্রাবিড় নিজেই স্বীকার করেছেন সে কথা। নতুন নেতা, নতুন কোচের অধীনে বার্মিংহ্যামে কোন দল দাপট দেখায়, সে দিকেই তাকিয়ে ক্রিকেটবিশ্ব।