নেতৃত্ব সম্পর্কে মন্তব্য কোহলীর ফাইল ছবি
কখন নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হয়, সেটাও একজন অধিনায়কের বড় গুণ। এমনটাই মনে করেন বিরাট কোহলী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, নেতা না থাকার সময়ও তিনি নিজেকে অধিনায়ক ভাবতেন, যাতে দলকে জেতাতে পারেন। অতীতের বিভিন্ন অধিনায়কের থেকে এ ব্যাপারে শিক্ষা নিয়েছেন বলে জানালেন কোহলী।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হারের পর সেই ফরম্যাটের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান কোহলী। সাত বছর তাঁর অধিনায়কত্বে টেস্টে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছে ভারত। সীমিত ওভারের নেতৃত্ব থেকে আগেই সরে গিয়েছিলেন কোহলী। সম্প্রতি এক ইউটিউব সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “কী অর্জন করতে চাই, সেটা সম্পর্কে সবার আগে বুঝে নিতে হবে। তারপরে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি কি না, সেটার দিকে নজর রাখতে হবে। প্রত্যেকটা জিনিসের একটা নির্দিষ্ট সময় এবং মেয়াদ রয়েছে। সেটা সম্পর্কে নিজেকে জানতে হবে। ব্যাটার হিসেবে আপনি হয়তো দলকে অনেক বেশি সাহায্য করতে পারেন। আমিও সেটা ভেবেই নিজেকে নিয়ে গর্বিত।”
কোহলী আরও বলেছেন, “নেতা হতে গেলে সব সময় যে অধিনায়ক হতে হবে তার কোনও মানে নেই। যখন এমএস ধোনি সাধারণ ক্রিকেটার হিসেবে দলে ছিল, তখন এমন নয় যে ও নেতা ছিল না। ওর থেকে প্রত্যেকটা মুহূর্তে আমরা বিভিন্ন পরামর্শ নিতাম। জেতা-হারা আমাদের হাতে থাকে না। কিন্তু প্রতি দিন নিজেদের উন্নতি করা, ক্রমাগত উৎকর্ষের দিকে এগিয়ে যাওয়া, এটা স্বল্প মেয়াদে হয় না। যদি এটাকে নিজের ধর্ম হিসেবে পালন করা যায়, তা হলে খেলোয়াড় জীবনের বাইরেও এটা আপনাকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করবে।”
এর পরেই কোহলী বলেছেন, “কখন সরে যেতে হবে এটাও নেতৃত্বের একটা বড় গুণ। সঠিক সময় বেছে নিতে হবে। ঠিক কোন সময় দলের নির্দেশ দেওয়ার জন্য অন্য এক জনকে প্রয়োজন সেটা বুঝতে হবে। পাশাপাশি, দলের সংস্কৃতি যাতে একই রকম থাকে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। অন্য ভূমিকায় থেকেও দলকে সাহায্য করা যায়। খেলোয়াড় হিসেবে প্রত্যেককেই সব ধরনের ভূমিকার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে এবং সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আমি বেশ অনেক দিন ধোনির অধীনে খেলেছি। তার পরে অধিনায়ক হয়েছি। কিন্তু আমার মানসিকতা সব সময় একই রকম ছিল। দলের খেলোয়াড় হিসেবে আমি অধিনায়কের মতোই ভাবতাম। চাইতাম দল জিতুক। আমি নিজেই নিজের নেতা ছিলাম।”
অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কী লক্ষ্য ছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন কোহলী। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের কথায়, “প্রথম বার অধিনায়ক হওয়ার সময় আমার লক্ষ্য ছিল দলে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনা। আমি জানতাম দলের মধ্যে দক্ষতার কোনও অভাব নেই। কিন্তু প্রতিভাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগান ছিল আমার লক্ষ্য। নিজের দর্শনকে একটা গণ্ডির মধ্যে আটকে রাখতে চাইনি। সেটাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছি। তা ছাড়া, দলের মধ্যে একটা সংস্কৃতি তৈরি করতে হলে প্রত্যেক দিন কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কৌশলের থেকেও দলের সাংস্কৃতিক পরিবর্তন বেশি জরুরি।”