কোহলির হাতে সেই বিশেষ ব্যান্ড। ছবি: পিটিআই।
ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং। কাজ যা-ই হোক, বিশ্বকাপে ভারতের কয়েক জন ক্রিকেটারকে সব সময়েই বিশেষ ধরনের একটি ‘ব্যান্ড’ পরতে দেখা যাচ্ছে। সেই তালিকায় রয়েছেন বিরাট কোহলিও। কারও হাতে কালো, কারও হাতে সবুজ, কারও হাতে লাল— বিভিন্ন ধরনের ব্যান্ড। সেই ছবি দেখে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, কী এই ব্যান্ড? এর বিশেষত্বই বা কী? কেনই বা ক্রিকেটারেরা নিয়মিত এই ব্যান্ড পরছেন? সেই উত্তর অবশেষে জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি অনুশীলনের সময় কোহলির ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, সেখানে তাঁকে যে ব্যান্ডটি পরতে দেখা গিয়েছে সেটির রং তাঁর গাত্রবর্ণের মতো। এ ছাড়া ম্যাচের সময় শ্রেয়স আয়ার বা সূর্যকুমার যাদবের হাতেও এই ব্যান্ড দেখা গিয়েছে খেলার সময়।
কোহলিরা কব্জিতে এই ব্যান্ড পরছেন। কিন্তু সেটি দেখতে ঘড়ির মতো নয়। সাধারণ একটি ফিটনেস ব্যান্ডের মতোই। জানা গিয়েছে, এই ব্যান্ড তৈরি করেছে ‘হুপ’ নামে একটি সংস্থা। ২০১৫ সালে প্রথম এই ব্যান্ড বাজারে আনে তারা। নাম ছিল ‘হুপ ১.০’। ২০২১ সালে তাঁর সাম্প্রতিক সংস্করণ এসেছে, যার নাম ‘হুপ ৪.০’। সম্প্রতি ‘ওপেনএআই’ সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে তারা। ফলে তার প্রযুক্তির মান আরও উন্নত হয়েছে।
সূর্যের হাতে সেই ব্যান্ড। ছবি: টুইটার
অন্যান্য ফিটনেস ব্যান্ডের তথ্যে কিছু সমস্যা থাকে। তবে ‘হুপ’-এর দাবি, তাদের ব্যান্ডের তথ্য ৯৯ শতাংশ সঠিক। কোনও মুহূর্তে আপনি কতটা চাপে রয়েছে তা বলে দেবে এই ব্যান্ড। রিকভারির ক্ষেত্রেও কাজে লাগে এটি। অর্থাৎ, আপনার শরীর খেলার জন্যে তৈরি কি না বা কোথায় কোথায় উন্নতির দরকার, সেটিও বলে দেবে।
উদাহরণস্বরূপ, এই ব্যান্ডে রয়েছে স্লিপ কোচ বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ, আপনাকে এটি বলে দেবে কতটা ঘুম হলে আপনার শরীরে সবচেয়ে ভাল কাজ করবে। অন্যান্য ট্র্যাকারের মতো এই ব্যান্ডে জানা যাবে যে আপনাকে কতটা ঘুমোতে হবে বা কত ঘণ্টা ঘুমোচ্ছেন। এ ছাড়াও এই ব্যান্ড পরে থাকলে প্রতি দিন জানা যাবে যে কত ঘণ্টা ঘুম হলে আপনার শরীর ১০০ শতাংশ পারফর্ম করবে।
এই ফিটনেস ব্যান্ডের থেকে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে মোবাইলের একটি অ্যাপে। তবে সেই অ্যাপ সাবস্ক্রিপশনের ভিত্তিতে পাওয়া যাবে। মাসিক এবং বাৎসরিক সাবস্ক্রিপশন ফি লাগবে। সাধারণ ফিটনেস ব্যান্ডে যা যা বৈশিষ্ট্য রয়েছে সবই এতে রয়েছে। সেকেন্ডে ১০০ বার এই ব্যান্ড তথ্য সংগ্রহ করে। বাকি ব্যান্ডগুলির মতো এটিতে চার্জ দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই।
এই ব্যান্ডে কোনও ডিসপ্লে নেই। সব সময় এটি পরে থাকা যাবে। সারা দিনে কত শক্তি ক্ষয় হল এবং কতটা রিকভার হল সেটি জানা যাবে পর দিন সকালে। তবে দুঃখের ব্যাপার হল, ভারতে কোথাও এই ব্যান্ড কিনতে পাওয়া যায় না। আপনি কিনতে চাইলে আনাতে হবে বিদেশ থেকে।
এই ব্যান্ডটি পাওয়া যাবে ‘হুপ’ সংস্থার ওয়েবসাইটে। ১২ মাসের সাবস্ক্রিপশন-সহ এই ব্যান্ডটি কিনতে চাইলে খরচ প্রায় ২০ হাজার টাকা। এর পর প্রতি মাসে সাবস্ক্রিপশন পিছু আড়াই হাজার টাকা করে দিতে হবে।