(বাঁদিকে) বিরাট কোহলি এবং অনুষ্কা শর্মা। —ফাইল চিত্র।
বিরাট কোহলি এবং অনুষ্কা শর্মার কন্যা ভামিকার জন্ম হয়েছিল মুম্বইয়ে। পুত্র অকায়ের জন্ম হয়েছে লন্ডনে। জন্মের পর সরাসরি কোনও দেশেরই নাগরিক হতে পারেনি কোহলি পুত্র অকায়। কারণ জন্মগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ নেই তার। এখন প্রশ্ন, কোন দেশের নাগরিকত্ব পাবে বিরুষ্কা-পুত্র?
কোহলি-অনুষ্কার সন্তান হওয়ায় ভারতের নাগরিক হওয়ার কথা অকায়ের। কিন্তু সরাসরি ভারতের নাগরিক হওয়ার সুযোগ নেই অকায়ের। পুত্রকে ভারতের নাগরিক করতে হলে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে কোহলি এবং অনুষ্কাকে। বংশানুক্রমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে পারে অকায়। মানতে হবে কিছু শর্ত। ভারতের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বর বা তার পর বিদেশে জন্ম হলে তার বাবা-মাকে ভারতের নাগরিক হতে হবে সেই সময়। ভারত সরকারকে জানাতে হবে, নাবালকের (১৮ বছরের কম) কাছে অন্য কোনও দেশের পাসপোর্ট নেই। পাশাপাশি, জন্মের এক বছরের মধ্যে যে দেশে জন্ম, সে দেশের ভারতীয় দূতাবাসে নথিবদ্ধ করানো থাকতে হবে। এক বছর সময় কালের মধ্যে নথিবদ্ধ করানো না হলে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিয়ে নথিবদ্ধ করাতে হবে।
অর্থাৎ ২০২৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসে অকায়ের জন্ম নথিবদ্ধ করাতে হবে কোহলি-অনুষ্কাকে। তার পর আবেদনের ভিত্তিতে বংশানুক্রমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবে অকায়।
অন্য দিকে, লন্ডনে জন্ম হওয়ায় ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পাওয়ার দাবিদার অকায়। সে ক্ষেত্রেও কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। জন্মসূত্রে সরাসরি নাগরিকত্ব এখন আর দেয় না সে দেশের সরকার। ব্রিটেনের নতুন নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, জন্মসূত্রে নাগরিক হওয়ার সুযোগ থাকলেও রয়েছে কিছু শর্ত। নাগরিকত্ব আইন আগের তুলনায় কঠোর করেছে ব্রিটিশ সরকার। নতুন আইনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করলেই ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে না। নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে জন্মের তারিখ এবং শিশুর বাবা-মায়ের পরিস্থিতি, অবস্থানের উপর। যেহেতু অকায়ের জন্ম হয়েছে ২০২১ সালের ১ জুলাইয়ের পর, তাকে জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক হতে হলে কোহলি অথবা অনুষ্কার এক জনকে ব্রিটেন বা আয়ারল্যান্ডের নাগরিক হতে হবে। কোহলি বা অনুষ্কা ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চলের কোনও দেশের নাগরিক হলেও জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক হতে পারবে অকায়। এ ছাড়া কোনও ব্রিটিশ নাগরিক সরকারি ভাবে অকায়কে দত্তক নিলে, জন্মসূত্রে সে দেশের নাগরিকত্ব পাবে। সে ক্ষেত্রে ব্রিটেনের কোনও আদালতের মাধ্যমে দত্তক নিতে হবে।
এই তিন শর্তের একটিও অকায় পূরণ করতে পারছে না। তাও জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিক হওয়ার দাবিদার অকায়। সে ক্ষেত্রে তাকে টানা তিন বছর ব্রিটেন বা আয়ারল্যান্ডে বসবাস করতে হবে। সেই নথি দিয়ে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব পাওয়ার আবেদন করতে হবে। আবেদন খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে ব্রিটিশ প্রশাসন। কোহলি বা অনুষ্কার কাছে ২০২১ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্রিটেনে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার অনুমতি থাকলে বা তাঁরা আবেদন করে থাকলে বাড়তি সুবিধা পাবে অকায়। স্থায়ী ভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার দিন থেকে অকায় ব্রিটেনের নাগরিক হিসাবে গণ্য হবে। জন্মসূত্রে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হবে। অর্থাৎ, জন্মসূত্রে সরাসরি ব্রিটেনের নাগরিকত্ব না পেলেও সে দেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ রয়েছে অকায়ের।
ভারত দ্বৈত নাগরিকত্বকে স্বীকৃতি দেয় না। তাই অকায়কে ব্রিটেন অথবা ভারত— যে কোনও একটি দেশের নাগরিকত্ব বেছে নিতে হবে। জন্মসূত্রে ব্রিটেনের অথবা বংশানুক্রমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে পারে সে। সব কিছুই নির্ভর করবে বিরুষ্কার সিদ্ধান্তের উপর।