উচ্ছ্বাস: চ্যাপম্যানকে আউট করে অক্ষর। ছবি পিটিআই
ভারতীয় দলে ‘বাপু’ হিসেবেই জনপ্রিয় তিনি। ২০১৬ সালে বাদ পড়ার পরে চার বছর ভারতীয় দলের বাইরে ছিলেন অক্ষর পটেল। কিন্তু ইংল্যান্ড সিরিজ়ে তাঁর প্রত্যাবর্তনের পর থেকে ভারতীয় দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন এই বাঁ-হাতি স্পিনার। রবিবার ইডেনে তিন ওভারে মাত্র নয় রান খরচ করে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার দখল করে গেলেন। ম্যাচ শেষে জানিয়ে গেলেন, ব্যাটারের থেকে সব সময় এক ধাপ এগিয়ে থাকতে চান তিনি।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে অক্ষর বলেন, ‘‘আগে যখন ব্যাটার আমাকে আক্রমণ করত, বলের গতি বাড়িয়ে দিতাম। কিন্তু এখন গতির বৈচিত্র বাড়িয়েছি। অনেক কিছু শিখে গিয়েছি।’’ যোগ করেন, ‘‘চেষ্টা করি সব সময় ব্যাটারের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকতে। উইকেট থেকেও সাহায্য পেয়েছি। তবে ইংল্যান্ড সিরিজ়ে ২৭ উইকেট পাওয়ার পর থেকেই আমার আত্মবিশ্বাস
বেড়ে গিয়েছে।’’
টি-টোয়েন্টির পরীক্ষা শেষ। অক্ষরকে এ বার তৈরি হতে হবে টেস্ট সিরিজ়ের জন্য। রবিবার ইডেনে আরও এক জন শুরু করে দিলেন টেস্টের প্রস্তুতি। তিনি মহম্মদ সিরাজ। প্রস্তুতিই তাঁর সাফল্যের চাবিকাঠি। অস্ট্রেলিয়া সফরে টেস্ট অভিষেক হওয়ার আগেই বলে দিয়েছিলেন তরুণ পেসার। রিকি পন্টিংদের দেশে যাওয়ার পরে তাঁর জীবনে নেমে এসেছিল আঁধার। সিডনিতে অনুশীলন শেষে হঠাৎই সতীর্থরা এসে খবর দেন, তাঁর বাবা আর নেই। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছিল সিরাজের।
তবুও বাবার শেষকৃত্যে থাকার জন্য দেশে ফিরে আসেননি তিনি। সিরাজকে তাঁর বাবা বলে গিয়েছিলেন, ভারতের হয়ে টেস্ট খেলতেই হবে। সেই স্বপ্ন পূরণ করার তাগিদে থেকে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায়। তাঁর পরিশ্রমই ভারতীয় দলের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের মুকুট পাইয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ়ে। নিউজ়িল্যান্ডের সঙ্গে দেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ় শুরু হওয়ার আগেও তাঁর পরিশ্রম থামছে না। ইডেনে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শুরু হওয়ার আগে ভারতীয় দলের বোলাররা যখন সাদা বলে প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন, সিরাজ তখনও ব্যতিক্রমী। তিনি জানেন টেস্ট সিরিজ়ে নেই যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামির মতো বড় কোনও নাম। তাঁকেই দায়িত্ব নিতে হবে বিপক্ষের উইকেট তোলার। তাই লাল বলে মহড়া শুরু করে দিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর তারকা।
তাঁর প্রস্তুতির এই দৃশ্য সমর্থকদেরও অবাক করল। ক্লাব হাউসের আপার টিয়ারে বসে থাকা এক সমর্থক বলে উঠলেন, ‘‘এখানে কি লাল বলে খেলা হবে নাকি?’’ পাশেই তাঁর বন্ধু বলে উঠলেন, ‘‘২৫ নভেম্বর থেকে টেস্ট সিরিজ় শুরু। সেটারই প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছে সিরাজ।’’
যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে পছন্দ করেন তরুণ পেসার। রবিবার ইডেনে নতুন লাল বল হাতে নিয়েই বোলিং কোচ পরস মামব্রের সঙ্গে মাঝের পিচের পাশে প্রস্তুতি শুরু করলেন। নৈশালোকে লাল বল সে ভাবে দেখতে পাওয়া যায় না। তাই দলের কোনও উইকেটকিপারকে দিয়ে সিরাজের ডেলিভারি সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হল না। তিনি নিজেই দাঁড়িয়ে পড়লেন উইকেটের পিছনে। সিরাজকে নির্দেশ দিতে থাকলেন, উপরের দিকে বল করার। দু’দিকেই সুইং করছিল তাঁর বল। যে প্রয়াস দেখেই বোঝা যাচ্ছে, টেস্ট ক্রিকেটে সিরাজের শৈল্পিক সুইং অব্যাহত থাকবে। তাঁকে সামলানোই অন্যতম বড় পরীক্ষা হবে কেন উইলিয়ামসনদের।