উৎসব: সেঞ্চুরি করে খোয়াজা।
ট্র্যাভিস হেড করোনায় আক্রান্ত না হলে তাঁর এই টেস্টে খেলাই হত না। কিন্তু ভাগ্য তাঁকে একটা সুযোগ এনে দেয়। এবং, সিডনির গোলাপি টেস্টে নেমেই দুরন্ত সেঞ্চুরি করে গেলেন উসমান খোয়াজা। তাঁর ১৩৭ রানের সুবাদে চতুর্থ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয় ৮ উইকেটে ৪১৬ স্কোরে। দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান বিনা উইকেটে ১৩।
প্রথম দিনে বৃষ্টিতে অনেকটা সময় খেলা নষ্ট হওয়ার পরে দ্বিতীয় দিনটা ছিল খোয়াজার। তাঁর শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি এসেছিল, অ্যাশেজে, এই সিডনিতেই। শেষ টেস্ট খেলেছিলেন বছর দুই আগে। প্রত্যাবর্তনে সেঞ্চুরি করার পরে দেখা যায় মাটিতে পা ঠুকে, হাঁটু-বুক চাপড়ে উৎসব করছেন খোয়াজা। ক্রীড়া দুনিয়ায় যে উৎসব ভঙ্গিকে বলা হয়ে থাকে লেব্রন জেমস উৎসব ভঙ্গি। বিখ্যাত বাস্কেটবল খেলোয়াড় লেব্রন সফল ভাবে বাস্কেট করতে পারলেই এই বিশেষ উৎসবটি করে থাকেন। যার মধ্যে রয়েছে ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়ার ভঙ্গিও। যে কারণে খোয়াজার উৎসব দেখার পরে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল, তা হলে কি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটার কোনও বিশেষ বার্তা দিতে চান এই ইনিংসের পরে? বিশেষ করে নির্বাচকদের, যাঁরা তাঁকে এত দিন উপেক্ষা করে এসেছে?
গ্যালারিতে উচ্ছ্বসিত স্ত্রী।
দিনের শেষে খোয়াজা অবশ্য এই ধারণা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, কোনও বার্তা দেওয়া নয়, নিছকই আনন্দের থেকে তিনি ওই লেব্রন-উৎসব করেছিলেন। খোয়াজার কথায়, ‘‘আমি জানি ওটা লেব্রন উৎসব, সমালোচকদের চুপ করিয়ে দেওয়ার উৎসব। এখন মনে হচ্ছে, ঘরের মাঠের দর্শকদের সামনে ও রকম উৎসব করা আমার উচিত হয়নি।’’
এ দিন গ্যালারিতে ছিলেন খোয়াজার স্ত্রী এবং শিশু সন্তান। স্বামীর সেঞ্চুরি দেখার পরে সন্তানকে কোলে নিয়ে আনন্দে লাফাতে দেখা যায় খোয়াজা-পত্নীকে। পাশে থাকার জন্য পরিবারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন খোয়াজা। কিন্তু তিনি কেন ও রকম উৎসব করলেন? সেঞ্চুরি করা খোয়াজার জবাব, ‘‘কিছু ভেবে করিনি। লেব্রন জেমসকে খুবই ভালবাসি। ওই মুহূর্তে মনে হয়েছিল, ওটাই ঠিক। বাস্কেটবল খেলার সময়ও ওই ভাবে উৎসব করি। তাই প্র্যাক্টিসটা ছিল।’’ খোয়াজার সঙ্গে এ দিন রান পেয়েছেন স্টিভ স্মিথও। তিনি করেন ৬৭।
ইংল্যান্ড বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল স্টুয়ার্ট ব্রড। এই টেস্টে সুযোগ পাওয়া ব্রড ১০১ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন। আর তার পরে খেলা শেষে বিদ্ধ করেছেন দলের ব্যাটারদের। এই পেসার পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, বোলাররা যা-ই করুক না কেন, ব্যাটাররা যদি ১৪০ রানে শেষ হয়ে যায়, তা হলে কিছু করার থাকে না। ব্রডের কথায়, ‘‘হারের নানা কারণ বার করা যেতে পারে। কিন্তু আমি বলব, টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম ইনিংসের রানের উপরেই বেশির ভাগ সময় ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে যায়। আর আমরা সেখানেই বারবার ব্যর্থ হয়েছি।’’ সিরিজ়ের প্রথম তিনটি টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় যথাক্রমে ১৪৭, ২৩৬, ১৮৫ রানে। ব্রডের সাফ কথা, ‘‘আমরা সেই জায়গায় ব্যর্থ হয়েছি। যে বোলারকেই খেলানো হোক না কেন, প্রথম ইনিংসে ১৪০ রানে শেষ হয়ে গেলে আর কিছু করার থাকে না।’’