প্রতীক্ষা: লারার দেশে যশদের উল্লাসের এই ছবি দেখতে চান ভারতের ক্রিকেটপ্রেমীরা। বিসিসিআই
করোনার আক্রমণে যখন ভারতের ছ’জন ছটফটে তরুণ ক্রিকেটার হোটেলের ঘরে আবদ্ধ, তখন এগিয়ে এসেছিলেন তিনি। ভিডিয়ো কলে কথা বলে ক্রমাগত উৎসাহ দিয়ে গিয়েছিলেন।
নেটে যখন নেমেছেন তরুণ ভারতীয় ব্যাটাররা, তখনও এগিয়ে এসেছেন তিনি। বল তুলে নিয়ে থ্রো-ডাউন দিয়েছেন একের পর এক।
অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে, চাপের সেমিফাইনালে নামার আগেও ক্রমাগত উদ্বুদ্ধ করেছেন তরুণ যশ ধুলদের। মন্ত্র দিয়েছেন, কী ভাবে ইতিবাচক থাকা যায়। কী ভাবে চাপ সামলানো যায়।
মাঠের বাইরে থাকা ভিভিএস লক্ষ্মণের উপস্থিতি আর তাঁর পরামর্শ যদি অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের কাছে একটা অস্ত্র হয়, তা হলে অন্য অস্ত্রটা তারা আজ, বুধবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নিয়েই নামবেন। সেই অস্ত্রের নাম ভিকি অস্তোয়াল। দলের বাঁ-হাতি স্পিনার। যিনি চলতি বিশ্বকাপে ন’টা উইকেট নিয়ে যশ ধুলদের ভরসা হয়ে উঠেছেন।
অ্যান্টিগার কুলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এখনও বড় রান খুব একটা হয়নি। পিচ বোলারদের সাহায্য করেছে। মঙ্গলবার অ্যান্টিগা থেকে সাংবাদিক বৈঠকে ভারত অধিনায়ক যশ প্রথমে পিচ নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। পরে অবশ্য বলে ফেলেন, ‘‘এই পিচে স্পিনাররা সাহায্য পেয়ে থাকে। আর সেখানে ভিকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।’’
বাঁ-হাতি স্পিনারের এর মধ্যে এই যুব বিশ্বকাপে এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আছে। ছোটবেলায় ঘণ্টা তিনেকের ট্রেন যাত্রা করে যে ছেলেটি নিজেকে তৈরি করেছেন, তাঁর সামনে অবশ্য এই যাত্রাটাও সহজ হবে না। কারণ অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা বেশ ভাল ছন্দেই আছেন। তবে ভিকিকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী যশ বললেন, ‘‘ওর বলে ড্রিফ্ট আছে। বাউন্স পায়। বল ঘোরাতে পারে। যে কারণে ভিকিকে খেলা
সহজ নয়।’’
জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে যুব দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজে এসেছেন লক্ষ্মণ। তাঁর মতো কিংবদন্তি দলের সঙ্গে থাকায় কতটা সুবিধে হচ্ছে? যশ বলছিলেন, ‘‘করোনার কারণে আমরা যখন ন’দিন কোয়রান্টিনে ছিলাম, তখন লক্ষ্মণ স্যর আমাদের পাশে থেকেছেন। ভিডিয়ো কলে কথা বলেছেন। ইতিবাচক থাকতে বলেছেন।’’
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বরাবরের সাফল্য পাওয়া লক্ষ্মণ এ রকম বড় ম্যাচের আগে দলকে কী বলছেন? ‘‘স্যর ওঁর অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। কী ভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়, মানসিকতা কী রকম হওয়া উচিত, এ সব ব্যাপারে
পরামর্শ দিয়েছেন।’’
অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ মানেই চাপ সামলানোর পরীক্ষা। যা বড়দের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। আপনারা কী ভাবে চাপ সামলাতে তৈরি হচ্ছেন? লক্ষ্মণ মন্ত্রে দীক্ষিত যশ প্রত্যয়ের সঙ্গে বলছেন, ‘‘আমরা চাপটা উপভোগ করতে মাঠে নামব।’’
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন বাংলার পেসার রবি কুমার। নতুন বলে সেমিফাইনালেও রবি ভারতের বড় ভরসা হতে চলেছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া বোলিংকে সামলানোর কী পরিকল্পনা করেছেন? যশের সাফ জবাব, ‘‘অস্ট্রেলিয়ার বোলিংও আর পাঁচটা দলের মতো। আমাদের জুটি গড়ার দিকে নজর
দিতে হবে।’’
করোনার আক্রমণ সামলে ভারতের এখন সবাই সুস্থ। সেটাও জানিয়ে দিলেন যশ। পাশাপাশি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিচ্ছেন, জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছেন না।
সামনে আইপিএল নিলাম। দলগুলোর নজর আছে তরুণ ক্রিকেটারদের উপরেও। কিন্তু আইপিএলকে মাথায় রাখছেন না যশরা। দলের অধিনায়ক বলছেন, ‘‘সেমিফাইনাল ম্যাচ ছাড়া এখন কোনও কিছু নিয়েই ভাবছি না।’’ কোনও সন্দেহ নেই, ভারতীয় তরুণদের পাখির চোখ এখন একটাই— বিশ্বকাপ জয়।