Ashes 2023

বিতর্কের লং রুমে শৌচাগারে যেতে গিয়ে হারিয়ে যান এক ক্রিকেটার, ব্রাত্য ছিলেন মহিলারা

লর্ডসে মাঠ থেকে বেরিয়ে সাজঘরে যাওয়ার সময় ক্রিকেটারদের লং রুম পার করে যেতে হয়। সেখানেই অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে বচসা হয় ইংরেজ সমর্থকদের। এই লং রুমকে কেন্দ্র করে রয়েছে নানা ধরনের ঘটনা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ ১৮:০৭
Share:

লর্ডসের লং রুমে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ইংরেজ সমর্থকদের। —ফাইল চিত্র।

লর্ডস টেস্টে জনি বেয়ারস্টোর আউট নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। তাকে কেন্দ্র করে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার উসমান খোয়াজা এবং ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয় ইংরেজ সমর্থকদের। মাঠ থেকে বেরিয়ে সাজঘরে যাওয়ার সময় ক্রিকেটারদের লং রুম পার করে যেতে হয়। সেখানেই ক্রিকেটারদের সঙ্গে বচসা হয় সমর্থকদের। লর্ডসের এই লং রুমকে কেন্দ্র করে রয়েছে নানা ধরনের ঘটনা।

Advertisement

লর্ডসের প্যাভিলিয়নের এক তলায় রয়েছে এই বিখ্যাত লং রুম। ২২৪ বর্গমিটার জায়গা জুড়ে এই লং রুম তৈরি হয় ১৮৯০ সালে। ১৬৮ বর্গমিটার জুড়ে একটি পানশালাও রয়েছে এই লং রুমের পিছনে। ক্রিকেটারেরা মাঠ থেকে বেরিয়ে এই লং রুম পার করে উঠে যান সাজঘরে। প্যাভিলিয়নের প্রায় পুরোটা জুড়েই এই লং রুম। তার বিরাট আকারের জন্যই এমন নাম রাখা হয়েছে। ডব্লিউজি গ্রেস থেকে এখনকার সময়ের ক্রিকেটার, সকলের কাছেই এই লং রুম এক বিশেষ জায়গা।

লং রুমের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মজার ঘটনাও। অনেক ক্রিকেটারই এই লং রুমে এসে রাস্তা খুঁজে পান না। বুঝতে পারেন না কোন দিকে যেতে হবে। ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডের ডেভিড স্টিলের টেস্ট অভিষেক হয়। তিনি শৌচাগার খুঁজতে গিয়ে বেসমেন্টে (মাটির নীচের ঘর) চলে যান।

Advertisement

১৯৯৮ সাল পর্যন্ত লর্ডসের প্যাভিলিয়নে মহিলাদের ঢোকার অনুমতি ছিল না। প্রায় ২০০ বছর ধরে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব ছিল শুধু পুরুষদের জন্য। যদিও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্য নিয়ম আলাদা ছিল। এখন এই ক্লাবের সদস্য সংখ্যা ১৮ হাজার। সেই তালিকায় রয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক ডগলাস হোমে এবং জন মেজর। এ ছাড়াও রয়েছে রকস্টার মিক জ্যাগার, অভিনেতা স্টিফেন ফ্রাই-এর মতো নাম।

যে লং রুমে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের বিদ্রুপ করা হল, এক সময় তার প্রশংসা করেছিলেন জাস্টিন ল্যাঙ্গার। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং কোচ বলেছিলেন, লং রুমে দিয়ে হাঁটার সময় তাঁর মনে হত কেউ যেন জড়িয়ে ধরেছে তাঁকে। এক অদৃশ্য হাত জড়িয়ে ধরত। যা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিত ল্যাঙ্গারের।

তৃতীয় টেস্টের অবাঞ্ছিত ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেন, “এমসিসি-র তরফে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। তাদের সদস্যেরা যে কাজ করেছে তা ভাল লাগেনি। কেউ কেউ হয়তো সদস্যপদ হারাবেন। এই একটা সময় বাদ দিয়ে বাকি সময় সদস্যেরা যথেষ্ট ভাল ব্যবহারই করেছিলেন।” কামিন্স সেখানেই থামেননি। তিনি এমসিসি-র সদস্যদের তুলনা করেছেন এজবাস্টনের সমর্থকদের সঙ্গে। কামিন্স বলেন, “এজবাস্টনে সমর্থকেরা যে ব্যবহার করেছিলেন, তার থেকে লর্ডসে আমরা একটু আলাদা কিছু আশা করেছিলাম। কিন্তু সেটা না হওয়ায় আমরা অবাক হয়েছি।”

লর্ডসের লং রুমের ঘটনার পর তাকে মাছের বাজারের সঙ্গে তুলনা করেন আকাশ চোপড়া। ভারতের হয়ে ১০টি টেস্ট খেলা আকাশ এক সময় মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) হয়ে খেলেছিলেন। সেই ক্লাবের তিন সদস্যকে লর্ডসের লং রুমের ঘটনায় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। আকাশ বলেন, “লর্ডসের ঐতিহাসিক লং রুমে প্রায় ধস্তাধস্তি হচ্ছিল। এটার মানে কী? লর্ডসে যদি এমন হয়, তাহলে সেটা ক্রিকেটের জন্য খুবই খারাপ একটা বিজ্ঞাপন। মনে হচ্ছিল যেন ওটা একটা মাছের বাজার।”

কী ঘটেছিল লর্ডস টেস্টে? অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টের পঞ্চম দিন লর্ডসের লং রুমে এমসিসি-র কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় অস্ট্রেলিয়ার খোয়াজা ও ওয়ার্নারের। ইংল্যান্ডের বেয়ারস্টোর আউটের সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি ইংরেজ সমর্থকেরা। তাই মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারেরা যখন সাজঘরে ফিরছিলেন, তখন ইংরেজ সমর্থকেরা চিৎকার করে ‘চোর, প্রতারক’ বলে তাঁদের ডাকতে থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারেরা প্রথমে তাতে বিশেষ পাত্তা দেননি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই ঘটনার জল গড়ায় বহু দূর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement