(বাঁ দিকে) রাহুল দ্রাবিড় এবং রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র।
বিশ্বকাপে রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ছিলেন রোহিত শর্মারা। পর পর চার ম্যাচ জেতা কিউয়িদের আটকে দিয়েছিল ভারতীয় দল। সেই ম্যাচে চোটের জন্য খেলেননি কেন উইলিয়ামসন। সেমিফাইনালে আবার সেই নিউ জ়িল্যান্ডের সামনে ভারত। এ বার খেলবেন নিউ জ়িল্যান্ড অধিনায়ক। এই ম্যাচে হার মানেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায়। ফিরে আসার কোনও সুযোগ নেই। স্বভাবতই ভাবনাচিন্তা করে প্রথম একাদশ বেছে নিতে হবে নিউ জ়িল্যান্ডকে।
২২ অক্টোবরের প্রথম একাদশকেই কি মাঠে নামাবেন রাহুল দ্রাবিড়? না কি নকআউট ম্যাচে বদলাবেন পরিকল্পনা? লিগের শেষ ম্যাচ ছিল নিয়মরক্ষার। তবু তুলনায় দুর্বল নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধেও পরীক্ষানিরীক্ষার পথে হাঁটেননি ভারতীয় দলের কোচ। জিততে থাকা দলে পরিবর্তন করতে চাননি। সে কথা ম্যাচের আগের দিনেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। একই যুক্তিতে সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও পরীক্ষার পথে হাঁটার সম্ভাবনা কম রক্ষণশীল দ্রাবিড়ের। তবে কি কোনও চমক থাকবে না নকআউট ম্যাচে? দেখে নেওয়া যাক কেমন হতে পারে সেমিফাইনালে ভারতের প্রথম একাদশ।
নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের সম্ভাব্য একাদশ
রোহিত শর্মা: দলের মতো ভারতের অধিনায়কও ফর্মে রয়েছেন। শুধু মাঠে নেতা হিসাবে নয়, ব্যাট হাতেও ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন তিনি। ইনিংসের শুরুতেই প্রতিপক্ষের বোলারদের চাপে ফেলে দিচ্ছেন। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর ওপেন করা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।
শুভমন গিল: ডেঙ্গি সারিয়ে দলে ফেরার পর থেকেই দলকে নির্ভরতা দিচ্ছেন তরুণ ওপেনার। ইনিংসের শুরুতে অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটিং করছেন। প্রয়োজনে ধরেও খেলতে পারেন। সেমিফাইনালে তিনিই খেলবেন।
বিরাট কোহলি: এক দিনের ক্রিকেটে ৫০তম শতরানের অপেক্ষায় ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪৯তম শতরান করে ছুঁয়েছেন সচিন তেন্ডুলকরকে। বিশ্বকাপে দারুণ ফর্মে রয়েছেন কোহলি। পরিণত ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন। সেমিফাইনালে কোহলি অবশ্যই খেলছেন।
শ্রেয়স আয়ার: বিশ্বকাপের শেষ তিনটি ম্যাচে রান পেয়েছেন শ্রেয়স। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে করেছেন শতরান। ভারতীয় দলের ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে তিনিই এখন প্রথম পছন্দ। স্বাভাবিক ভাবেই সেমিফাইনালে শ্রেয়সকে বাইরে রেখে নামবে না ভারত।
লোকেশ রাহুল: ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে শতরান করেছেন। উইকেটরক্ষক হিসাবেও নজর কাড়ছেন প্রতি ম্যাচে। তিনিই ভারতের মিডল অর্ডারের সব থেকে বড় ভরসা। সেমিফাইনালে ভারতের প্রথম একাদশে সহ-অধিনায়কের জায়গা পাকা।
সূর্যকুমার যাদব: বিশ্বকাপে এখনও তেমন বড় রান পাননি সূর্য। সুযোগ পেলে সেমিফাইনালে সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নিতে চাইবেন তিনি। হাতে বড় শট রয়েছে সূর্যর। টপ অর্ডারে দু’এক জন রান না পেলে গুরুত্বপূর্ণ হবে তাঁর ভূমিকা। তা ছাড়া ওয়াংখেড়ে সূর্যর ঘরের মাঠ। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনিই নামবেন ব্যাটিং অর্ডারের ছয় নম্বরে।
রবীন্দ্র জাডেজা: হার্দিক পাণ্ড্য চোট পাওয়ার পর ভারতের প্রথম একাদশে একমাত্র অলরাউন্ডার। ব্যাট এবং বল হাতে ভাল ফর্মে রয়েছেন বাঁহাতি জাডেজা। দলের ভারসাম্যের ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তা ছাড়া উইলিয়ামসনদের বিরুদ্ধে বোলার জাডেজাকে বাদ দিয়ে দল সাজানোর ঝুঁকি নেবেন না দ্রাবিড়।
কুলদীপ যাদব: বিশ্বকাপে ছন্দে রয়েছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভাবে উইকেট পাচ্ছেন বাঁহাতি স্পিনার। শেষ কয়েকটি ম্যাচে অবশ্য জোরে বোলারদের দাপটে বেশি বল করার সুযোগ পাননি কুলদীপ। সেমিফাইনালে তাঁর খেলা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।
যশপ্রীত বুমরা: ভারতের বোলিং আক্রমণের প্রধান মুখ বুমরা। বিশ্বকাপে দলের কৃপণতম বোলার তিনি। বেশ ভাল ফর্মে রয়েছেন বুমরা। তাঁকে বাদ দিয়ে সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দল তৈরির কোনও প্রশ্নই নেই। সুতরাং তিনি নামবেন ব্যাটিং অর্ডারের নয় নম্বরে।
মহম্মদ শামি: বিশ্বকাপে স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন বাংলার জোরে বোলার। প্রথম কয়েকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ না পাওয়া শামি প্রতি ম্যাচেই প্রমাণ করেছেন, কতটা কার্যকর। দলের জোরে বোলিং আক্রমণের অন্যতম প্রধান সদস্য তিনি। তাই সেমিফাইনালে অবশ্যই খেলবেন শামি।
মহম্মদ সিরাজ: চলতি বিশ্বকাপে শেষ কয়েকটি ম্যাচে ভাল বল করেছেন। ওয়াংখেড়ের ২২ গজে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারেন গতি এবং সুইং দিয়ে। তিন প্রধান জোরে বোলারের ত্রিফলা নকআউট পর্বে ভাঙার কথা ভাবছেনই না দ্রাবিড়, রোহিতেরা। বুধবারের সেমিফাইনালে সিরাজও থাকবেন প্রথম একাদশে।