ছবি: আইপিএল
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ১৮ জনের ভারতীয় দল। আইপিএলের পারফরম্যান্সের বিচারে সুযোগ পেয়েছেন দীনেশ কার্তিক, উমরান মালিকরা। কিন্তু সেই মাপকাঠিতে জায়গা হল না বাংলার ঋদ্ধিমান সাহার। আইপিএলে সেই ভাবে ছন্দে না থাকলেও দলে রইলেন বেঙ্কটেশ আয়ার, ঈশান কিশনরা।
প্রশ্ন উঠতে পারে, টি-টোয়েন্টি দলে তো ঋদ্ধিকে কখনও ভাবাই হয় না। তা হলে হঠাৎ ৩৭ বছরের ঋদ্ধিকে কেন নেওয়া হবে? ৩৬ বছরের কার্তিক (পরের মাসেই ৩৭ বছরে পা রাখবেন) ভারতের হয়ে শেষ বার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ২০১৯ সালে। জাতীয় দলের মানচিত্রে না থাকা কার্তিক আইপিএলে দুর্দান্ত ফিনিশার হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করে নিজের জায়গা করে নিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত খেলেছেন তিনি। বিজয় হজারে ট্রফিতে রানও করেছিলেন। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেই জায়গা করেছেন তিনি। এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত ১৪টি ম্যাচে কার্তিকের সংগ্রহ ২৮৭ রান। গড় ৫৭.৪০। অপরাজিত ছিলেন ন’টি ইনিংসে। স্ট্রাইক রেট ১৯১.৩৩।
কার্তিক যেমন আইপিএলে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন, ঋদ্ধিও তেমনই নিয়মিত রান করেছেন। ওপেনার হিসাবে খেলে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে ন’টি ম্যাচে ঋদ্ধি করেছেন ৩১২ রান। গড় ৩৯। স্ট্রাইক রেট ১২৪.৮০। তিনটি অর্ধশতরান রয়েছে। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে না খেললেও আইপিএল যত এগিয়েছে, তত গুজরাত দলের ওপেনার হিসাবে নিয়মিত হয়ে উঠেছেন ঋদ্ধি। যদিও ঋদ্ধি সাম্প্রতিক কালে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেননি। বাংলার হয়ে রঞ্জিতে গ্রুপ পর্বেও খেলতে চাননি ব্যক্তিগত কারণে। ঘরোয়া ক্রিকেটে না খেলা নির্বাচকদের কাছে অন্য রকম বার্তা যেতেই পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
আইপিএলে তিনটি অর্ধশতরান রয়েছে ঋদ্ধির। —ফাইল চিত্র
৯ জুন থেকে শুরু হতে চলা দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে যে টি-টোয়েন্টি দল বেছে নেওয়া হয়েছে তাতে ওপেনার হিসেবে রয়েছেন লোকেশ রাহুল, ঈশান কিশন এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়। এই দলের অধিনায়ক রাহুল। কিশন উইকেটরক্ষক হলেও এই দলে ঋষভ পন্থ রয়েছেন। তাই উইকেটরক্ষার দায়িত্ব নয়, ওপেনার কিশনকেই চাইছে দল। আইপিএলে কিশন খেলেছেন ১৪টি ইনিংস। করেছেন ৪১৮ রান। গড় ৩২.২৫। তাঁরও তিনটি অর্ধশতরান রয়েছে। স্ট্রাইক রেট ১২০.১১। ঝাড়খণ্ডের ২৩ বছরের কিশন কি তবে বয়সের কারণে ঋদ্ধির চেয়ে এগিয়ে? কার্তিকের ক্ষেত্রে তা হলে বয়স বাধা হল না কেন?
অন্য ওপেনার রুতুরাজ এ বারের আইপিএলে খেলেছেন ১৪টি ম্যাচ। তিনটি অর্ধশতরান-সহ তাঁর সংগ্রহ ৩৬৮ রান। গড় ২৬.২৯। স্ট্রাইক রেট ১২৬.৪৬। ঈশান এবং রুতুরাজের দল এ বারের আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছে। ঋদ্ধি কিন্তু তাঁর দলকে প্লে-অফে তুলেছেন। খেলতেও এসেছেন কলকাতায়। সুযোগ থাকবে আরও কিছু ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার। আইপিএল ফাইনালে শতরান করা ঋদ্ধি চেনা ইডেনে বড় রান করে নির্বাচকদের প্রশ্নের মুখে ফেলতেই পারেন।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে ওপেন করেন বেঙ্কটেশ আয়ার। ভারতীয় দলে মিডল অর্ডারে খেলা এই অলরাউন্ডার এই আইপিএলে ১২টি ম্যাচ খেলেছেন। করেছেন মাত্র ১৮২ রান। গড় ১৬.৫৫। স্ট্রাইক রেট ১০৭.৬৯। তিনি মাত্র একটি অর্ধশতরান করেছেন। বল হাতে একটিও উইকেট পাননি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৮ জনের দলে রাখা হয়েছে তাঁকেও।
ঋদ্ধি ভারতের হয়ে সাদা বলে শেষ খেলেছেন ২০১৪ সালে। ভারতের জার্সিতে কোনও টি-টোয়েন্টি ম্যাচই খেলেননি বাংলার উইকেটরক্ষক। টেস্ট দল থেকেও তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। এমন অবস্থায় তাঁকে জাতীয় দলে ফের দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা যে খুব ছিল এমন নয়। কিন্তু ঋদ্ধি সাদা বলেও যে খেলতে পারেন, তা আইপিএলে বার বার দেখিয়েছেন। কলকাতার মাঠে হয়তো আবার দেখাবেন।