অর্ধশতরান করে ফেরার সময় সূর্যকুমার। বাঁ পাশে অক্ষর। ছবি: পিটিআই
জ়িম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ৭১ রানে জিতে গ্রুপ শীর্ষে শেষ করল ভারত। সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলেন রোহিত শর্মারা। লোকেশ রাহুল, সূর্যকুমার যাদবদের ব্যাট যেমন স্বস্তি দেবে রোহিত শর্মাকে, তেমনই বোলারদের সাফল্যও হাসি ফোটাবে ভারত অধিনায়কের মুখে। রবিবার প্রথমে ব্যাট করে ১৮৬ রান তোলে ভারত। লোকেশ রাহুল ৫১ রান করেন। সূর্যকুমার যাদব করেন ৬১ রান। সেই রান তাড়া করতে নেমে জ়িম্বাবোয়ে শেষ ১১৫ রানে। তিনটি উইকেট নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ম্যাচের সেরা সূর্যকুমার।
টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত। সেমিফাইনালের আগে ব্যাটিং অনুশীলন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১৩ বলে ১৫ রান করে ফিরে গেলেন তিনি। জ়িম্বাবোয়ের মতো সহজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও রান এল না ভারত অধিনায়কের ব্যাটে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করেছিলেন ৭ বলে ৪ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১৪ বলে ১৫ রান করে আউট হয়েছিলেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৮ বলে ২ রান এসেছিল রোহিতের ব্যাট থেকে। রবিবারও ব্যর্থ হলেন তিনি। সেমিফাইনালের আগে তাঁর রান না পাওয়া চিন্তায় রাখবে ভারতকে।
রোহিত রান না পেলেও ভারতকে স্বস্তি দিয়েছে লোকেশ রাহুলের রানে ফেরা। রবিবার ৫১ রান করেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেমন ৫০ রান করেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন, রবিবারও তেমনই ৫১ রান করে উইকেট দিয়ে এলেন রাহুল। এ দিন ৩৫ বলে ৫১ রান করেন তিনি। কিন্তু সেই সময় বিরাটের উইকেট হারিয়ে ধাক্কা খেয়েছিল ভারত। রাহুল থাকতে পারলে ভারতের ইনিংস গড়ার কাজটা তিনি করতে পারতেন।
রবিবার বিরাট ২৬ রান করেন। তিনি এবং রাহুল ফিরতে ভারতের হয়ে মেলবোর্নে ঝড় তোলেন সূর্যকুমার যাদব। হার্দিক পাণ্ড্য ১৮ বলে ১৮ করেন। তিনি যখন এক দিকে দাঁড়িয়ে, অন্য দিকে রান করে যান সূর্য। পাকিস্তান ম্যাচের পর থেকে রান নেই হার্দিকের ব্যাটেও। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাত্র ২ রান করেছিলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৫ রান। সেমিফাইনালের আগে হার্দিকের ব্যাটও চিন্তার কারণ হতে পারে।
সূর্যকুমার এ দিনও নিজের দাপট দেখালেন। আইসিসি-র ক্রমতালিকায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শীর্ষ স্থানে থাকা ব্যাটার রবিবার ২৫ বলে ৬১ রান করেন। মেলবোর্নের বিরাট মাঠে অনায়াসে একের পর এক ছক্কা হাঁকালেন সূর্য। ওয়াইড ইয়র্কার এখনকার ক্রিকেটে বোলারদের বড় অস্ত্র। কিন্তু সূর্যে সেই সব ওয়াইড ইয়র্কার মাঠে বাইরে পাঠালেন হাঁটু মুড়ে বসে। এ বছর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১০০০ রানের গণ্ডিও পার করে গেলেন তিনি।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
গ্রুপ শীর্ষে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমেছিল ভারত। সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৮৬ রান তোলেন সূর্যকুমাররা। এই রানের লক্ষ্য জ়িম্বাবোয়ের জন্য বেশ কঠিন হয়ে গিয়েছিল। প্রথম বলেই উইকেট নিয়ে তাদের কাজটা আরও কঠিন করে দেন ভুবনেশ্বর কুমার। সেই ওভারে কোনও রানই দেননি তিনি। পরের ওভারে উইকেট নেন আরশদীপ সিংহ। পর পর দু’ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় জ়িম্বাবোয়ে। ভারতের একের পর এক বোলার বল করতে এলেন এবং উইকেট নিতে শুরু করলেন। প্রথম ১০ ওভারের মধ্যেই ৫ উইকেট হারায় জ়িম্বাবোয়ে। এর মধ্যে দু’টি উইকেট নেন মহম্মদ শামি। একটি উইকেট নেন হার্দিক পাণ্ড্য।
সেখান থেকে রিয়ান বার্ল এবং সিকান্দর রাজা ৬০ রানের জুটি গড়েন। সেই জুটি ভেঙে দেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ২২ বলে ৩৫ রান করে বোল্ড হন বার্ল। স্পিনাররা মাঝের ওভারে বেশ কিছু রান দিয়ে ফেললেও জুটি ভেঙে কাজের কাজটা করে দিয়ে যান অশ্বিন। তিনি ফিরিয়ে দেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা এবং রিচার্ড গারাভাকেও। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন অশ্বিন।
রবিবার দু’টি করে উইকেট নেন মহম্মদ শামি এবং হার্দিক পাণ্ড্য। একটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার, আরশদীপ সিংহ এবং অক্ষর পটেল। সেমিফাইনালের আগে সব বোলারের উইকেট পাওয়া স্বস্তি দেবে রোহিতকে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাদ দিয়ে গ্রুপের সব ম্যাচ জিতে গ্রুপ শীর্ষে শেষ করল ভারত।