টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্ব শুরু হল রবিবার থেকে। এই পর্বে খেলবে আটটি দল। সেখান থেকে চারটি দল যাবে সুপার ১২-তে। এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভেঙে যেতে পারে ১০টি রেকর্ড।
নিন্দকরা বলেন ক্রিকেটে নাকি প্রতি বলেই রেকর্ড হয়। যদিও সেটা সব সময় সত্যি নয়। এমন অনেক রেকর্ড আছে যা ভাঙাতে পারলে তৃপ্তি পান ক্রিকেটাররা। দেখে নেওয়া যাক কোন কোন রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি রান শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়বর্ধনের। ৩১টি ম্যাচ খেলে ১০১৬ রান রয়েছে তাঁর। তিনি ছাড়া আর কোনও ব্যাটার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হাজার রানের গণ্ডি পার করেননি। এ বারের বিশ্বকাপে তাঁর সেই রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে।
দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে থাকা ক্রিস গেল (৯৬৫ রান) এবং তিলকরত্নে দিলশান (৮৯৭ রান) এ বারের বিশ্বকাপে না খেললেও রয়েছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা। ৩৩ ম্যাচে ৮৪৭ রান করেছেন রোহিত। ২১ ম্যাচে বিরাটের সংগ্রহ ৮৪৫ রান। ৩০ ম্যাচে ডেভিড ওয়ার্নার করেছেন ৭৬২ রান। এঁদের কাছে সুযোগ রয়েছে জয়বর্ধনকে টপকে যাওয়ার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একাধিক শতরানের মালিক একমাত্র ক্রিস গেল। তাঁর দু’টি শতরান রয়েছে। তিনি ছাড়া আরও সাত ব্যাটারের শতরান রয়েছে এই প্রতিযোগিতায়। কিন্তু জস বাটলার ছাড়া আর কেউই এ বারের বিশ্বকাপে খেলছেন না। ফলে শতরানে গেলকে ছোঁয়ার সুযোগ থাকছে ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের সামনে।
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছিলেন নিউজ়িল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। তিনি ২০১২ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১২৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সেই রেকর্ড এ বার ভেঙে দিতে পারবেন কোনও ব্যাটার?
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি অর্ধশতরানের মালিক বিরাট কোহলি। ২১টি ম্যাচে তিনি ১০টি অর্ধশতরান করেছেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ক্রিস গেল। তাঁর সংগ্রহ ন’টি অর্ধশতরান।
এ বারের বিশ্বকাপে বিরাট নিজে যেমন এই সংখ্যা আরও বাড়িয়ে নিতে পারেন, তেমনই রোহিতের কাছে সুযোগ থাকছে তাঁকে টপকে যাওয়ার। রোহিতের সংগ্রহ আটটি অর্ধশতরান। ওয়ার্নার করেছেন ছ’টি অর্ধশতরান।
একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি রানের মালিকও বিরাট। ২০১৪ সালে ছ’টি ম্যাচ খেলে ৩১৯ রান করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন তিলকরত্নে দিলশান। শ্রীলঙ্কার ব্যাটার ২০০৯ সালে করেছিলেন ৩১৭ রান। গত বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি রান করেছিলেন বাবর আজ়ম। তাঁর সংগ্রহ ছিল ৩০৩ রান।
এ বছর কোন ব্যাটার সব থেকে বেশি রান করবেন, সে দিকে নজর থাকবে।বিরাটের ৩১৯ রানের রেকর্ড কোনও ব্যাটার টপকে যেতে পারবেন কি না, সে দিকে আরও বেশি নজর থাকবে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি উইকেট নিয়েছেন শাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়কের সংগ্রহ ৪১টি উইকেট। এই তালিকায় প্রথম পাঁচে থাকা কোনও বোলার এই বিশ্বকাপে খেলছেন না। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাহিদ আফ্রিদির সংগ্রহ ৩৯টি উইকেট। তৃতীয় স্থানে লাসিত মালিঙ্গা। তাঁর সংগ্রহ ৩৮টি উইকেট।
শাকিব নিজের উইকেট সংখ্যা এই বিশ্বকাপে অবশ্যই আরও বাড়িয়ে নেবেন। তাঁকে ছুঁতে পারেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তাঁর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সংগ্রহ ২৬টি উইকেট। শাকিবের সব থেকে কাছাকাছি থাকা তিনিই এক মাত্র বোলার, যিনি এই বিশ্বকাপে খেলছেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একাধিক বার ইনিংসে চারটি বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার বোলারের সংখ্যা সাত। এর মধ্যে সৈয়দ আজমল এবং শাকিব তিন বার করে এক ইনিংসে চার বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন।
শাকিবের সেই রেকর্ড ভাঙতে পারেন বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি দু’বার এক ইনিংসে চার বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন।
একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি উইকেট রয়েছে ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গর। শ্রীলঙ্কার স্পিনার ২০২১ সালে আটটি ম্যাচ খেলে নিয়েছিলেন ১৬টি উইকেট। সেই বিশ্বকাপে ১৩টি উইকেট নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম জাম্পা। নিউজ়িল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্টও ওই বিশ্বকাপে ১৩টি উইকেট নিয়েছিলেন।
এ বারের বিশ্বকাপে এই বোলাররা খেলছেন। তাঁদের কাছে সুযোগ থাকবে এই বিশ্বকাপে আরও বেশি উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়ার। অন্য বোলারদেরও সুযোগ থাকবে এই রেকর্ড ভাঙার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি ক্যাচ নিয়েছেন এবি ডিভিলিয়ার্স। ৩০টি ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ২৩টি ক্যাচ। মার্টিন গাপ্টিল রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। তিনি নিয়েছেন ১৯টি ক্যাচ। ওয়ার্নার নিয়েছেন ১৮টি ক্যাচ।
ডিভিলিয়ার্সের রেকর্ড এ বারের বিশ্বকাপে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রোহিত নিয়েছেন ১৫টি ক্যাচ। তিনিও রেকর্ড ভেঙে দেওয়ার দৌড়ে থাকবেন।
উইকেটরক্ষকদের রেকর্ডে সবার উপরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে ৩৩টি ম্যাচে ৩২টি উইকেট নিয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে কামরান আকমল। তিনি নিয়েছেন ৩০টি উইকেট। ২৭টি উইকেট নিয়েছেন দীনেশ রামদিন।
ধোনির রেকর্ড ভাঙার সব থেকে কাছে কুইন্টন ডি’কক। তিনি ১৫টি উইকেট নিয়েছেন। এ বারের বিশ্বকাপে ধোনির রেকর্ড ভাঙার দৌড়ে থাকবেন দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক। থাকবেন ম্যাথু ওয়েডও। তিনি নিয়েছেন ১৪টি উইকেট।
উইকেটরক্ষক হিসাবে একটি বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি শিকার ছিল ডিভিলিয়ার্সের। তাঁর ন’টি শিকার ছিল ২০১২ বিশ্বকাপে। ২০০৭ বিশ্বকাপে অ্যাডাম গিলক্রিস্টেরও ন’টি শিকার ছিল। সেই রেকর্ড এ বার কেউ ভাঙতে পারবেন?
এই বিশ্বকাপে খেলা ওয়েড এর আগে ২০২১ সালে ন’টি উইকেট নিয়েছিলেন। ডি’কক ২০১৪ সালে আটটি উইকেট নিয়েছিলেন। তাঁরা এ বার ডিভিলিয়ার্সের রেকর্ড ভাঙতে পারবেন?