ভারতীয় দলে সুযোগ পেলেন না অনেকে। ছবি: এএফপি
একসঙ্গে চারটি সিরিজ়ের জন্য ভারতীয় দল বেছে নিয়েছেন নির্বাচকরা। মোট ৩৩ জন ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু কোনও দলেই রাখা হয়নি পৃথ্বী শ-কে। এটাই মেনে নিতে পারছেন না ভারতের তরুণ ওপেনার। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত ভাবে রান করার পরেও দলে সুযোগ না পাওয়ায় সাই বাবার শরণাপন্ন হলেন পৃথ্বী। শুধু তিনি নন, একাধিক ক্রিকেটার ক্ষোভ উগরে দিলেন। জবাব দিলেন প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা।
নিউজ়িল্যান্ড সফরের জন্য টি-টোয়েন্টি এবং এক দিনের দলের সঙ্গে বাংলাদেশ সফরের জন্য এক দিনের এবং টেস্টের দলও বেছে নিয়েছেন নির্বাচকরা। একটি দলেও সুযোগ না পেয়ে মুম্বইয়ের ওপেনার পৃথ্বী ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “সাই বাবা, আশা করি আপনি সব দেখছেন।” ঘরোয়া ক্রিকেটে এই মরসুমে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে শতরান করেছেন পৃথ্বী। অসমের বিরুদ্ধে ৬১ বলে ১৩৪ রান করেন তরুণ ওপেনার। এখনও পর্যন্ত মুস্তাক আলিতে ৭টি ম্যাচে পৃথ্বীর সংগ্রহ ২৮৫ রান। গড় ৪৭.৫০ এবং স্ট্রাইক রেট ১৯১.২৭। গত মরসুমে রঞ্জি ট্রফিতেও নিয়মিত রান করেছিলেন পৃথ্বী। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালস দলের নিয়মিত সদস্য তিনি। কিন্তু ভারতীয় দলে আর দেখা যায় না তাঁকে।
ভারতের হয়ে ৫টি টেস্ট, ৬টি এক দিনের ম্যাচ এবং একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন পৃথ্বী। ভারতীয় জার্সিতে তাঁকে শেষ বার খেলতে দেখা গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। গত বছর জুলাই মাসে সেই ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। তার পর থেকে আর সুযোগ পাননি তিনি।
ভারতীয় দলের প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা বলেন, “নির্বাচকরা পৃথ্বীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। ঠিক সুযোগ পাবে ও। এই মুহূর্তে আমাদের তাদের সুযোগ দিতে হবে, যাদের ময়দানে দরকার।”
শুধু পৃথ্বী নন, সুযোগ না পাওয়া অনেক ক্রিকেটারই নেটমাধ্যমে তাঁদের বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অভিষেক হয়েছিল রবি বিষ্ণোইয়ের। এশিয়া কাপের দলেও ছিলেন তরুণ স্পিনার। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুপার ৪-এর ম্যাচে তিনিই ছিলেন দলের সেরা বোলার। চারটি দলের একটিতেও জায়গা না পেয়ে বিষ্ণোই পোস্ট করে লেখেন, “পিছিয়ে পড়ার থেকে প্রত্যাবর্তন সব সময় শক্তিশালী।”
কলকাতা নাইট রাইডার্সের অলরাউন্ডার নীতীশ রানাও খুশি নন। ভারতের হয়ে শ্রীলঙ্কাতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার পর থেকে আর সুযোগ দেওয়া হয়নি তাঁকে। সোমবার বেছে নেওয়া ৪টি দলের একটিতেও নিজের নাম দেখতে না পেরে আশাহত হয়ে পড়েছেন রানা। তিনি ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “আশা— হাল ছেড়ো না, যন্ত্রণা কমবে।”
ভারতের টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য উমেশ যাদব। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট দলে রাখা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু ক্ষোভ রয়েছে তাঁরও। যশপ্রীত বুমরা চোট পাওয়ার পর টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার জন্য তড়িঘড়ি ভারতীয় দলে নেওয়া হয় তাঁকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে সেই সুযোগ পেয়ে নিশ্চয়ই রঙিন জার্সিতে ভারতীয় দলের হয়ে খেলার আশা দেখেছিলেন তিনিও। কিন্তু মহম্মদ শামি করোনামুক্ত হতেই বিশ্বকাপের দলে নেওয়া হয় তাঁকে। বাদ উমেশ। বিশ্বকাপ পরবর্তী সফরগুলির সাদা বলের সিরিজ়ে রাখা হয়নি অভিজ্ঞ পেসারকে। এর পরেই তিনি লেখেন, “তোমরা আমাকে বোকা বানাতেই পারো, কিন্তু মনে রেখো ঈশ্বর সব দেখছেন।”
একাধিক ক্রিকেটার যখন নিজেরা সুযোগ না পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন, তখন অভিনব মুকুন্দকে দেখা গেল অন্যদের হয়ে মুখ খুলতে। ভারতের হয়ে তিনি ৭টি টেস্ট খেলেছিলেন। শেষ বার ২০১৭ সালে সুযোগ পেয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও মুকুন্দকে শেষ খেলতে দেখা গিয়েছে দু’বছর আগে। তিনি টুইট করে লেখেন, “একতরফা নির্বাচনকে আমি ঘেন্না করি। একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে যখন এটা হয়, তখন সে বুঝতে পারে না কী করবে। সম্পূর্ণ অন্ধকারে চলে যায় সে। অনেকের বাদ পড়ার কারণ বুঝতে পারলাম না। কিন্তু এটাই মেনে নিতে হবে ভারতীয় ক্রিকেটে।”