কোহলী কি ধোনির যোগ্য উত্তরসূরি হয়ে উঠতে পেরেছেন? ফাইল ছবি
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের পর নিউজিল্যান্ডের কাছেও দুরমুশ হল ভারত। অঙ্কের হিসেবে এখনও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকলেও ভারতীয় দলের অতি বড় সমর্থকও মনে করছেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে এক রকম বিদায় হয়েই গিয়েছে ভারতের। অর্থাৎ, এই ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবে শেষ হতে চলেছে বিরাট কোহলী-যুগও। প্রশ্নটা তাই স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে, অধিনায়ক হিসেবে কতটা সফল হলেন কোহলী? তিনি কি ধোনির যোগ্য উত্তরসূরি হয়ে উঠতে পেরেছেন?
পরিসংখ্যান কিন্তু বলছে, কোহলী পারেননি। ধোনি অধিনায়ক থাকাকালীন যে মাত্রায় সাফল্য এনে দিয়েছিলেন ভারতকে, তার ধারেকাছেও যেতে পারেননি কোহলী। ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। সেই বিশ্বকাপে ভারতের নেতৃত্বের দায়িত্বে ছিলেন তরুণ মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, ঘটনাচক্রে যিনি এই দলের মেন্টর হিসেবে কাজ করছেন। এরপর ধোনির নেতৃত্বে একের পর এক সাফল্যের মুখ দেখেছে ভারত। সেই সাফল্য কিন্তু কোহলী দেশকে দেখাতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, অধিনায়ক হিসেবে দেশকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানোর এটাই প্রথম এবং শেষ সুযোগ ছিল কোহলীর কাছে। আগের বিশ্বকাপে নেতা ছিলেন ধোনি। এই বিশ্বকাপ শুরুর আগে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছাড়ার কথা প্রতিযোগিতার আগেই ঘোষণা করেছিলেন কোহলী। ফলে একটা বাড়তি তাগিদ কাজ করবে তাঁর মধ্যে, এমনটাই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ কোহলী। তাঁর অতি আগ্রাসী মনোভাব মাঝেমাঝেই দলকে বিপদে ফেলেছে। ধোনির সব থেকে বড় গুণ ছিল, তিনি অসম্ভব দক্ষতার সঙ্গে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারতেন। দল নির্বাচনে গলদ হলেও পুষিয়ে দিতেন নিজের বুদ্ধির সাহায্যে। কিন্তু কোহলীর নেতৃত্বে বার বার কাঁটা হয়ে দেখা দিয়েছে সঠিক দল নির্বাচন করতে না পারার সমস্যা। বহু ম্যাচে ভারত হেরেছে স্রেফ দলগঠনে খামতি থেকে গিয়েছিল বলে। গত জুনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এই নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারত হেরেছিল ভুল দল নির্বাচনের কারণেই। এ বারেও তাঁর গোয়ার্তুমিতে পরের পর ম্যাচে আধা ফিট হার্দিক পাণ্ড্যকে খেলিয়ে যাওয়া মানতে পারেননি অনেকেই।
শুধু দেশের হয়ে নয়, আইপিএল-এও কোহলীর ব্যর্থতা ভুরিভুরি। ধোনি যখন দলকে চার বার চ্যাম্পিয়ন করেছেন, কোহলী সেখানে এক বারও ট্রফির মুখ দেখতে পারেননি। বার বার দল বদলে, নতুন ক্রিকেটার এনে বিভিন্ন ভাবে সাফল্য পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। সফল হননি কিছুতেই। ধোনি কিন্তু নির্বাসন থেকে ফেরা একটি দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। দলে বয়স্ক ক্রিকেটার বেশি থাকার জন্য যাদের ‘ড্যাডিস আর্মি’ নামে ডাকা হত, তাদের নিয়েও ট্রফির স্বাদ পেয়েছেন।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে সরার পর এ বার একদিনের ক্রিকেট থেকেও কোহলীকে নেতৃত্বের জায়গা থেকে সরানোর দাবি উঠেছে। খুব বেশিদিন কিন্তু সীমিত ওভারের দায়িত্ব পাননি কোহলী। কিন্তু সমর্থকদের বিশ্বাস, আস্থা এখনও অর্জন করতে পারেননি তিনি। তার একটা বড় কারণ, সাফল্যের অভাব। কোহলীর নেতৃত্বে ভারত আইসিসি-র কোনও ট্রফি জিততে পারেনি। ধোনি সেখানে আইসিসি-র সব ধরনের ট্রফিই জিতেছেন। ফলে এখানেও পূর্বসুরীকে ছোঁয়ার সুযোগ এখনও পাননি কোহলী।