খুশি সচিন তেন্ডুলকর।
কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকর মনে করেন, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ‘ব্যাক-ফ্লিপ’ বোলিং বুঝতেই পারেননি আফগানিস্তানের ব্যাটাররা। যা অনেকটা ‘ক্যারম’ বলের মতো। যেখানে বলের সেলাইটা থাকে লেগস্লিপের দিকে। বুধবার সত্যিই সেরা ছন্দে ছিলেন অশ্বিন। নিজের চার ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে দু’জন আফগান ব্যাটারকে আউট করেন। অথচ প্রায় চার বছর পরে তিনি সাদা বলের ক্রিকেটে দেশের হয়ে খেললেন! বলা যায়, অশ্বিনের দাপটেই এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
সচিন বলেছেন, ‘‘আমাদের বোলিং নিয়ে কিছু বলতে হলে প্রথমেই আসবে অশ্বিনের নামটা। অনেক-অনেক দিন পরে ওকে ভারতের হয়ে বোলিং করতে দেখলাম। আফগানদের বিরুদ্ধে যে ভাবে ও নিজেকে প্রয়োগ করেছে, তা এককথায় অনবদ্য।’’ যোগ করেছেন, ‘‘অশ্বিন নিজের বোলিংয়ে বৈচিত্রটা আনে ‘ব্যাক ফ্লিপ’ দিয়ে। যে বোলিং দেখে মনে হবে, বলের সেলাইটা লেগ স্লিপের দিকে থাকছে। আমার তো মনে হয় না, এ’ব্যাপারে ওর মতো দক্ষ অন্য কেউ আছে বলে। সম্ভবত নেটে বোলিং করেই এতটা দক্ষ হয়ে উঠতে পেরেছে। এই বিশেষ বলটার জন্যই আফগানরা ওর চার ওভারে একটাও বাউন্ডারি পায়নি।’’ অশ্বিন প্রসঙ্গে সচিনের আরও কথা, ‘‘ওর এই বলটা ঠিকঠাক খেলতে হলে প্রচুর অনুশীলনের দরকার। আফগানিস্তানের ব্যাটাররা অশ্বিনের বিরুদ্ধে সাবলীল হতে পারেনি।’’
সচিনের ভাল লেগেছে হার্দিক পাণ্ড্য ও ঋষভ পন্থের ঝড়ের গতিতে রান তোলাও। ‘‘ওদের জন্যই তো ৩.৩ ওভারে ভারত ৬৩ রান তুলে ফেলল! সেই সময়টায় হার্দিক-ঋষভের স্ট্রাইক রেট পৌঁছে যায় ৩০০-তে। ওরা ম্যাচের মেজাজটাই বদলে দিল। ১৯৫ রান করা আর ২১০-এ পৌঁছে যাওয়ার মধ্যে ফারাক তো আছেই। সবচেয়ে বড় কথা, এখন আমাদের যা অবস্থা, তাতে যত বড় ব্যবধানে জিততে পারব ততই ভাল।’’
সচিন উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন রোহিত শর্মা এবং কেএল রাহুলের ব্যাটিংয়েরও। বলেছেন, ‘‘রোহিত আর রাহুল যে ভাবে ব্যাট করেছে, তার জন্য কোনও প্রশংসা যথেষ্ট নয়। আফগানিস্তান কিন্তু ভুলটা করেছে শুরুতেই স্পিনারদের এনে। তা-ও দু’দিক থেকে। জানি, মহম্মদ নবি শুরুতে বল করে। কিন্তু উইকেটে তো কিছুটা ঘাসও ছিল। সেইসঙ্গে বেশ শক্ত মাটির পিচে খেলা হয়েছে। যেখানে বল সবসময় ব্যাটে এসেছে। আমার মনে হয়, এই ধরনের পরিস্থিতিতে সিমারদের শুরুতে আনাটাই ভাল। সে ক্ষেত্রে সিমের কাঠিন্যটা কাজে লাগানো যায়। সেইসঙ্গে পিচ থেকে সাহায্য পাওয়ারও কিছুটা সম্ভাবনা থাকে।’’
রোহিতের ৪৭ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে ছিল আটটি বাউন্ডারি ও তিনটি ছক্কা। কম যাননি রাহুলও। তিনি ৬৯ করেন ৪৮ বলে। মেরেছেন দু’টি ছয় ও ছ’টি চার। ‘‘আমার বেশি ভাল লেগেছে অফস্পিনার নবির বিরুদ্ধে রোহিতের ব্যাটিং। বোঝা যাচ্ছিল, ও নিজের অভিজ্ঞতাটাও দারুণ ভাবে কাজে লাগাচ্ছে। কখনওই আড়াআড়ি শট খেলার চেষ্টা করেনি। সোজা ব্যাটে খেলেছে। রাহুলও ঠান্ডা মাথায় অসাধারণ কিছু শট মেরেছে। ভাল লেগেছে, ওদের দ্রুত সিঙ্গলস নেওয়ার চেষ্টাটাও। সাধারণত আমরা দেখি, প্রথম ছ’ওভারে ব্যাটাররা চার-ছয়ের খেলাই খেলতে চায়। তাতে অনেক সময়ই খুচরো রানগুলো ছেড়ে দেয়। ওরা কিন্তু সে রাস্তায় হাঁটেনি। এমনকি সার্কলের ভিতরে মিডঅন, মিডঅফে বল ফেলেও দ্রুত দৌড়েছে সিঙ্গলসের জন্য। ওদের এই আগ্রাসী মানসিকতাটা বেশ লেগেছে,’’ বলেছেন সচিন।