অইন মর্গ্যান। ফাইল চিত্র
অইন মর্গ্যান মনে করেন, চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের এতটা ভাল ফল করার নেপথ্যে মূল অবদান বোলারদের। তাঁরাই মরুশহরের অন্য ধরনের পিচেও বিধ্বংসী মেজাজে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দলকে। ‘সুপার বারো’ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলও শনিবার ইংল্যান্ডের কাছে আট উইকেটে হেরেছে। ইংল্যান্ড বোলারদের বিরুদ্ধে অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নাররা সাকূল্যে তোলেন ১২৫ রান। জবাবে জস বাটলারের দাপটে ইংল্যান্ড লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অনায়াসে। একইসঙ্গে টানা তিন ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে খেলা কার্যত নিশ্চিত করে ফেলে তারা।
দলের দুরন্ত ছন্দ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মর্গ্যানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কে না জানে, আমাদের নিজেদের দেশে একেবারে অন্যরকম পরিবেশে খেলতে হয়। তাই এখানকার সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রথম দু’টি ম্যাচে আমরা দারুণ ভাবেই সেটা পেরেছি। তার পরেই অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা দিতে হল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘আসল কাজটা কিন্তু বোলাররা করছে। ওরা নিরলস ভাবে ঠিক জায়গা বল ফেলে যাচ্ছে। একইসঙ্গে দলের কৌশল অনুযায়ী আক্রমণ শানাচ্ছে। সে ভাবে দেখলে এই ইংল্যান্ড দলের তুরুপের তাস বোলাররা। এমনিতেও উইকেটের চরিত্রের কথা মাথায় রেখে খেলতে হচ্ছে। সেই অনুযায়ী, পাওয়ার প্লে-তে দু’একজনের ভাল খেলে দেওয়াটা জরুরি। সেই নির্ভরতাও
আমাদের আছে।’’
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড এ বার দু’টি ম্যাচ খেলেছে দুবাইয়ে। একটি আবু ধাবিতে। তিনটি ম্যাচেই ব্যাটারদের মধ্যে হয় জস বাটলার অথবা জেসন রয় রান তাড়া করায় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ‘‘আমাদের ওপেনাররা অসাধারণ ছন্দে আছে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রয় সেরা হয়েছিল। এ বার বাটলারও একই পুরস্কার পেল,’’ বলেছেন তৃপ্ত মর্গ্যান। যিনি নিজে মরুশহরে সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে সে ভাবে রান পাননি। আর এই বিশ্বকাপে মূলত দলের ওপেনাররা সফল হওয়ায়, তাঁকে সে ভাবে পরীক্ষার সামনে এখনও পড়তে হয়নি।
সেমিফাইনালে খেলা প্রায় নিশ্চিত হলেও ইংল্যান্ড গ্রুপে তাদের পরের দু’টি ম্যাচকেও একই রকম গুরুত্ব দেবে বলে মন্তব্য করেছেন ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বিশ্বসেরা দলের অধিনায়ক। মর্গ্যান বলেছেন, ‘‘প্রতিটি ম্যাচ কঠিন। বিপক্ষ সবাইকেই একই রকম সমীহ করি। এটাও মাথায় রাখছি, এখান থেকে আমাদের শারজায় গিয়ে পাঁচ দিনে দু’টি ম্যাচ খেলতে হবে।’’
ইংল্যান্ডের প্রশংসায় পঞ্চমুখ অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চও। বিশেষ করে, ইংরেজ ওপেনার জস বাটলারের। যিনি শনিবার ৭১ রান করে অপরাজিত থেকে যান মাত্র ৩২ বল খেলে। এখন দেখার, ইংল্যান্ড একইসময় পঞ্চাশ ওভার ও টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বসেরা হতে পারে কি না। ফিঞ্চ শনিবারের ম্যাচ নিয়ে বলেছেন, ‘‘পাওয়ার প্লে-তে কয়েকটা উইকেট হারানোর পরে আমাদের বাকি ব্যাটারদের মাটি কামড়ে পড়ে থাকার দরকার ছিল। যাতে লড়াই করার মতো কিছুটা রান অন্তত আমরা করতে পারি। কম রান নিয়েও আমাদের বোলাররা চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু জস বাটলার একটা অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে দেওয়ায় আমাদের পক্ষে আর বিশেষ কিছুই করার সম্ভব হয়নি।’’ ফিঞ্চ অবশ্য মনে করছেন, কয়েকটা দিন বিশ্রাম নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে। তাঁর পাখির চোখ এখন বাংলাদেশ ম্যাচ।
এ বারের বিশ্বকাপ দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেও অলরাউন্ডার বেন স্টোকস অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের জয় দেখে উল্লসিত। গণমাধ্যমে একটা বিশাল টেডি বেয়ারের ভিডিয়ো দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘কি দারুণ!’’ আর প্রাক্তন ইংরেজ অধিনায়ক মাইকেল ভনের মন্তব্য, ‘‘এ বার আমরা অন্যদের একটা বার্তা দিতে পেরেছি। ইংল্যান্ডই সেরা। বিপক্ষকে ধ্বংস করার ক্ষমতা ওদের মতো আর কোনও দলের নেই। কোন দলের ওদের আটকানোর ক্ষমতা আছে? একমাত্র পাকিস্তান কিছুটা পারলেও পারতে পারে।’’