ICC ODI World Cup 2023

৫ ভারতীয় ক্রিকেটার: সমস্যায় ফেলতে পারেন নিউ জ়িল্যান্ডকে, কী ভাবে মোকাবিলা করবে কিউয়িরা?

সেমিফাইনালে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারতের সামনে নিউ জ়িল্যান্ড। রোহিত শর্মাদের হারাতে হলে এক বা দু’জন নয়, অন্তত পাঁচ জন ক্রিকেটারকে আটকাতে হবে নিউ জ়িল্যান্ডকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ১২:২৯
Share:

বিরাট কোহলি (বাঁ দিকে) ও রোহিত শর্মা। —ফাইল চিত্র

বিশ্বকাপে ফর্মে রয়েছে ভারতীয় দল। ন’টি ম্যাচ জিতেই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে তারা। সেমিফাইনালে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তাদের সামনে নিউ জ়িল্যান্ড। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ মোটেই সহজ হবে না কেন উইলিয়ামসনদের। কারণ, ম্যাচ জিততে হলে এক বা দু’জন নয়, অন্তত পাঁচ জন ক্রিকেটারকে আটকাতে হবে নিউ জ়িল্যান্ডকে।

Advertisement

ভারতের প্রথম একাদশে খেলা প্রায় সবাই ভাল ফর্মে থাকলেও প্রধান যে পাঁচ জন ক্রিকেটার নিউ জ়িল্যান্ডকে সমস্যায় ফেলতে পারেন তাঁরা হলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাডেজা, যশপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ শামি। এই পাঁচ জন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করতে হবে নিউ জ়িল্যান্ডকে। ভারতের পাঁচ ক্রিকেটারকে কী পরিকল্পনা করলে আটকে রাখতে পারবেন উইলিয়ামসনেরা?

রোহিত শর্মা: ফর্মে রয়েছেন ভারত অধিনায়ক। ৯ ম্যাচে ৫০৩ রান করেছেন। গড় ৫৫.৮৮। স্ট্রাইক রেট ১২১.৪৯। শুধু বড় রান করা নয়, যে ভাবে রোহিত সেই রান করেছেন তা উল্লেখযোগ্য। প্রতি ম্যাচের শুরুতে এসে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছেন। প্রতিপক্ষকে ধাক্কা দিচ্ছেন। ম্যাচ ভারতের হাতে এনে দিচ্ছেন। তাই রোহিতকে প্রথম ১০ ওভার খেলতে দেওয়া মানে সেখানেই ম্যাচের রাশ হাতছাড়া করা।

Advertisement

রোহিতকে তাড়াতাড়ি আউট করার উপায় একেবারে প্রথম দু’ওভারে। নিউ জ়িল্যান্ডের অস্ত্র হতে পারেন ট্রেন্ট বোল্ট। বাঁহাতি পেসারদের সামনে শুরুতে সমস্যায় পড়েন রোহিত। বিশেষ করে বল পিচে পড়ে ভিতরের দিকে ঢুকে এলে সমস্যায় পড়েন ভারত অধিনায়ক। তাই শুরুতেই বোল্ট যদি সে রকম বল করতে পারেন, তা হলে হাত খুলে খেলতে পারবেন না রোহিত। আবার লেংথে পড়ে বাইরের দিকে যাওয়া বলেও অনেক সময় ব্যাট লাগাতে যান রোহিত। সেখানেও উইকেটরক্ষক বা স্লিপে ক্যাচ দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

বিরাট কোহলি: বিশ্বকাপে ভারতের সব থেকে সফল ব্যাটার। ৯টি ম্যাচে ৫৯৪ রান করেছেন তিনি। ৯৯ গড় ও ৮৮.৫২ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন বিরাট। করেছেন ২টি শতরান। বিরাটের ব্যাটিং ভরসা দিচ্ছে দলকে। চলতি প্রতিযোগিতায় এখনও পর্যন্ত বিরাটের তেমন কোনও ভুল চোখে পড়েনি। যখন প্রয়োজন হয়েছে ধরে খেলেছেন, যখন দরকার পড়েছে হাত খুলে খেলেছেন। প্রতিটি পরিস্থিতিতে বিরাট নিজের নামের মতোই খেলেছেন। তাই তাঁকে থামাতে না পারলেও সমস্যায় পড়বে নিউ জ়িল্যান্ড।

রোহিতের মতোই বিরাটকেও আউট করতে হলে সব থেকে বড় সুযোগ প্রথম কয়েকটি বল। বিরাট ব্যাট করতে নেমে প্রথম কয়েকটি বলে বড় শট খেলেন না। তিনি চেষ্টা করেন, সিঙ্গল নিয়ে অপর প্রান্তে যাওয়ার। কয়েকটি বল দেখে নেওয়ার। তাই শুরুতে যদি বিরাটকে সিঙ্গল না দেওয়া হয় তা হলে একটু হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। যে ভাবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিঙ্গল নিতে না পেরে বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন বিরাট, সেই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিতে পারে নিউ জ়িল্যান্ড। কারণ, এক বার বিরাট দাঁড়িয়ে গেলে তাঁকে থামানো কঠিন হয়ে যাবে উইলিয়ামসনদের পক্ষে।

রবীন্দ্র জাডেজা: এ বারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে ৯ ম্যাচে রান করেছেন ১১১। শেষ দিকে নেমে প্রয়োজনে জুটি বেঁধেছেন। আবার প্রয়োজনে দ্রুত রান করেছেন। ফিনিশারের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে জাডেজাকে। আবার বল হাতে ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১৬টি উইকেট। সব থেকে ভাল ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট।

জাডেজাকে আটকাতে হলে ব্যাট করতে নামার পরে অফ স্টাম্পের বাইরে ধারাবাহিক ভাবে বল করতে হবে নিউ জ়িল্যান্ডকে। কারণ, অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সমস্যায় পড়েন জাডেজা। আর বোলার জাডেজাকে খেলতে হবে পায়ের ব্যবহার করে। কারণ, তিনি উইকেট লক্ষ্য করে বল করেন। এক বার যদি জাডেজা তাঁর লেংথ পেয়ে যান তা হলে তাঁকে থামানো কঠিন হবে। তাই জাডেজার ছন্দ নষ্ট করতে হবে। সেটা করার সেরা উপায় পায়ের ব্যবহার করা। একমাত্র তা হলেই জাডেজা উইকেট নেওয়ার জন্য না গিয়ে বাঁচার চেষ্টা করবেন। সে ক্ষেত্রে তিনি ততটা কার্যকরী হতে পারবেন না।

যশপ্রীত বুমরা: প্রতিটি ম্যাচে ভারতের বোলিংকে খুব ভাল শুরু দিয়েছেন বুমরা। পাওয়ার প্লে-তে উইকেট নিয়েছেন। চলতি প্রতিযোগিতায় ৯টি ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়েছেন বুমরা। ওভার প্রতি মাত্র ৩.৬৫ রান দিয়েছেন তিনি। আবার পুরনো বলেও ভাল বল করেন বুমরা। ডেথ ওভারে বলের গতির তারতম্য করেন তিনি। করেন ইয়র্কারও।

বুমরাকে উইকেট না দেওয়ার একমাত্র উপায় তাঁর বল দেখে খেলা। ব্যাটারদের ক্ষেত্রে তিনি যে বল ভিতরের দিকে ঢুকিয়ে আনেন সেই বল বেশি ভয়ঙ্কর। তাই ভিতরের দিকে ঢুকে আসা বলে বেশি সতর্ক থাকতে হবে ব্যাটারদের। যদি পাওয়ার প্লে-তে বুমরা উইকেট না পান, তখন বাকি বোলারদের সমস্যা হবে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে। শেষ দিকে আবার বুমরার বিরুদ্ধে আক্রমণ করার পরিকল্পনা করতে হবে ব্যাটারদের। বুমরাকে চাপে রাখতে না পারলে সমস্যায় পড়বে নিউ জ়িল্যান্ড।

মহম্মদ শামি: ভারতের সব থেকে সফল বোলার শামি। মাত্র ৫ ম্যাচ খেলে ১৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বুমরা ও সিরাজের পর তিন নম্বরে বল করতে নেমে একের পর এক উইকেট নিচ্ছেন। তাঁর বলের সিম পজিশন সব থেকে ভাল। তারই ফল পাচ্ছেন শামি।

ভারতের এই পেসারকে আটকাতে গেলে ব্যাটারদের চেষ্টা করতে হবে তাঁর লেংথ নষ্ট করার। কারণ, এক বার লেংথ পেয়ে গেলে শামিকে খেলা কঠিন। সেই কারণে শামির বলে ভয় না পেয়ে শুরু থেকে আক্রমণের পরিকল্পনা করতে হবে। শামি সাধারণত অফ স্টাম্পে বল করতে ভালবাসেন। কখনও ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে, আবার কখনও ব্যাক ফুটে শামিকে খেলতে হবে নিউ জ়িল্যান্ডের ব্যাটারদের। তবেই বাংলার পেসারের বিরুদ্ধে রান করার সম্ভাবনা বাড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement