কলম্বোর পেট্রোল পাম্পে লম্বা লাইন। ছবি: রয়টার্স
দিন যত এগোচ্ছে অর্থনৈতিক সঙ্কট তত চেপে বসছে শ্রীলঙ্কায়। দিশেহারা সাধারণ মানুষ। দিশেহারা আসলে সে দেশের সরকার। সঙ্গতি আছে এ রকম অনেকেই সঙ্কটের সময়ে দাঁড়াচ্ছেন দেশবাসীর পাশে। তাঁদেরই অন্যতম শ্রীলঙ্কার বিশ্বজয়ী দলের সদস্য রোশন মহানামা।
দেশবাসীর সঙ্কটে ঘরে বসে থাকতে পারছেন না মহানামা। ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য পথে নেমে পড়েছেন। নিজের সাধ্য মতো সাধারণ মানুষকে সাহায্য করছেন। প্রতিদিন পেট্রোল পাম্পের লম্বা লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ করছেন চা এবং বান রুটি। তাঁর দেওয়া এই খাবারই এখন বহু মানুষের সম্বল। সেই ছবি নেট মাধ্যমে দিয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার।
মহামানা লিখেছেন, ‘কলম্বোর দুটো এলাকা ওয়ার্ড প্লেস এবং উইজেমারা মাওয়াথায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আমরা সামান্য কিছু খাবার বিতরণ করছি। বিকালে চা আর বান রুটি দেওয়া হচ্ছে। প্রতি দিনই পেট্রোল পাম্পে মানুষের লাইন আগের দিনের থেকে লম্বা হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু মানুষ আসছেন খাবার সংগ্রহ করতে।’
জ্বালানি তেলের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন ক্রিকেটার তাঁদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন, ‘আপনারা দয়া করে সঙ্গে যথেষ্ট পানীয় এবং খাবার রাখুন। শরীরে কোনও সমস্যা হলে কারোর সাহায্য নিন বা ১৯৯০ নম্বরে ফোন করুন। এখন আমাদের সবাইকে সকলের খেয়াল রাখতে হবে।’
শ্রীলঙ্কায় মজুত জ্বালানি তেলের ভান্ডার দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। কয়েক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারে মজুত সব জ্বালানি তেল। সেই আশঙ্কা থেকেই পেট্রোল পাম্পগুলির সামনে বাড়ছে ভিড়। কয়েক কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন দেখা যাচ্ছে। সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে শ্রীলঙ্কা সরকার।
গত বছরের শেষ দিক থেকেই বিদেশ থেকে জ্বালানি তেল, খাবার, ওষুধ কিছুই কিনতে পারছে না শ্রীলঙ্কা সরকার। ঋণের পাহাড় জমে রয়েছে। বহু দেশই আর ধার দিতে রাজি নয়। কার্যত দেউলিয়া হওয়ার পথে দেশ। কী ভাবে সমস্যা মিটবে, অজানা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের প্রশাসনের। নাগরিকদের কোনও সুরাহা দিতে পারছে না সরকার। সব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর কখনও এমন ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়নি শ্রীলঙ্কা।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।